জাদুকরী এক মুহূর্তই তৈরি হয়েছিল বুয়েন্স এইরেসের লা বোমবোনেরায়। ডি বক্সে ত্রিভুজ আকৃতির রক্ষণজালের ঠিক মাঝে পড়েছিলেন লিওনেল মেসি। জটলার মাঝখান থেকে অসাধারণ এক ক্রস করলেন তিনি।
চাতক পাখির মতো অপেক্ষায় থাকা লাওতারো মার্তিনেস বল দেখে শূন্যে ভাসিয়ে দিলেন শরীরটা। এরপর বা পায়ের ভলি, বল পেরুর জালে। গোলকিপার পেদ্রো গ্যালেসে ডাইভ দিয়েও কিছু করতে পারেননি।
মায়াবি এমন মুহূর্তের জন্যই ফুটবল সুন্দর। আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ‘ক্লারিন’ জানিয়েছে এটা ‘পিরোয়েত’ শট। ৫৫ মিনিটে মার্তিনেসের চোখজুড়ানো এই গোলে পেরুকে ১-০ ব্যবধানে হারাল আর্জেন্টিনা। ২০২৪ সালে এটাই ছিল তাদের শেষ ম্যাচ। আর ঘরের মাঠে জয় দিয়ে বছর শেষ করল তিনবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
এই গোলে মার্তিনেস পাশে বসলেন কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনার। আর্জেন্টিনার হয়ে ম্যারাডোনা ও মার্তিনেস দুজনের গোলই এখন ৩২টি। গোল না পেলেও অ্যাসিস্টের রেকর্ড গড়েছেন লিওনেল মেসি। আন্তর্জাতিক ফুটবলে তার অ্যাসিস্ট সবচেয়ে বেশি ৫৮টি। আন্তর্জাতিক ফুটবলে যুক্তরাষ্ট্রের কিংবদন্তি ল্যান্ডন ডনোভানের গড়া সর্বোচ্চ অ্যাসিস্টের নজিরে ভাগ বসালেন তিনি।
বুধবার সকালে পাওয়া এই জয়ে লাতিন অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে শীর্ষস্থান সুসংহত হল আর্জেন্টিনার। ১২ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে ২০২৬ বিশ্বকাপেও একটা পা দিয়ে রাখল তারা।
বছরের শেষ ম্যাচটা খেলতে মুখিয়ে ছিলেন লিওনেল মেসি। আরও একবার তার জাদু দেখতে উন্মুখ হয়েছিলেন ভক্তরাও। ঘরের মাঠে হতাশ করেনি তার দল।
বিরতির আগে আর্জেন্টিনার বলের দখল ছিল ৭৬.২ শতাংশ। গোলের জন্য পোস্টে শট নিয়েছিল ৬টি, তবে লক্ষ্যে ছিল একটিই। সেখানে রক্ষণাত্মক খেলা পেরু পোস্টে শটই নিতে পারেনি কোনো।
সবমিলিয়ে ম্যাচে ৭৩.৬ শতাংশ বলের দখল রেখে খেলে পোস্টে ১০টি শট নিয়েছিল আর্জেন্টিনা, এর ৩টি ছিল লক্ষ্যে। তারা গোল পেয়েছে একটিই। এটা আবার আন্তর্জাতিক ফুটবলে আর্জেন্টিনার ১৯৯৯ তম গোল।
এবারের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে প্রথম দেখায় পেরুর মাঠে ২-০ গোলে জিতেছিল আর্জেন্টিনা, জোড়া গোল করেছিলেন লিওনেল মেসি। গত জুনে কোপা আমেরিকায় গ্রুপ পর্বে মার্তিনেসের জোড়া গোলে জিতেছিল একই ব্যবধানে। বুধবার তারা জিতল ১-০ গোলে।
২২তম মিনিটে হুলিয়ান আলভারেসের শট পোস্টে লেগে না ফিরলে এবারও জয়ের ব্যবধান ২-০’ই হতে পারত। সর্বশেষ ম্যাচে প্যারাগুয়ের কাছে হারের পর জয়ের পথে ফেরাটা স্বস্তির লিওনেল স্কালোনির দলের জন্য।