দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট উন সুক ইয়েলের বিরুদ্ধে এবার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে দেশটির এক আদালত।
উন সুক ইয়েল গত ৩ ডিসেম্বর দেশে সামরিক আইন জারির চেষ্টা করেছিলেন। তার বিরুদ্ধে এখন রাষ্ট্রদ্রোহ ও বিদ্রোহের অভিযোগে তদন্ত চলছে। আদালত তাকে গত দুই সপ্তাহে তিনবার তলব করলেও, তিনি হাজিরা দেননি।
তদন্তকারীরা গত রবিবার রাতে রাষ্ট্রদ্রোহ ও ক্ষমতা অপব্যবহারের অভিযোগে উন সুক ইয়েলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। যদিও উনের আইনজীবীরা এই পদক্ষেপকে ‘অবৈধ’ বলেছেন।
ডিসেম্বরের শুরু থেকেই দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, বিশেষ করে সামরিক আইন ঘোষণার চেষ্টার পর থেকে। সঙ্কটের ধারাবাহিকতায় উন ও তার উত্তরসূরিকেও পার্লামেন্টে অভিশংসিত করা হয়।
আদালত উনকে গ্রেপ্তারে জানুয়ারির ৬ তারিখ পর্যন্ত সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। তবে তদন্তকারীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই সময় বাড়ানো যেতে পারে।
তদন্তকারীরা উনকে গ্রেপ্তার করতে পারবেন কি না, তা অনিশ্চিত। কারণ উনকে গ্রেপ্তার করতে গেলে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে তার নিরাপত্তা বাহিনী ও সমর্থকরা।
কারণ এর আগে উনের নিরাপত্তা বাহিনী তদন্তকারীদের প্রেসিডেন্টের বাসভবনে তল্লাসি চালাতে দেয়নি।
দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে দেখা যায়, দেশটিতে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা সহজ নয়। গ্রেপ্তার করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে রাজনৈতিক কর্মী ও সমর্থকদের সংঘর্ষ লেগে যায়।
এদিকে সোমবার উনের আইনজীবীরা জানান, সামরিক আইন ঘোষণা করা প্রেসিডেন্টের সাংবিধানিক অধিকার। এনিয়ে তাকে গ্রেপ্তারের কোনও বৈধতা নেই।
উন এখন কোথায় আছেন, তা জানা যায়নি। তবে তার দেশত্যাগের উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে। ফলে তিনি চাইলেও বিদেশে যেতে পারবেন না। তিনি কেন আদালতের তলবে হাজিরা দেননি, এবিষয়ে তার আইনজীবী উন গ্যাপ গুন জানান, ‘যৌক্তিক উদ্বেগ’ থেকেই উন হাজির হননি।
অভিশংসিত হওয়ার পর থেকে উন আর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট নেই। দেশটির বর্তমান সাংবিধানিক আদালতে নয় সদস্যের বেঞ্চে আছেন মাত্র ছয়জন বিচারক। তাদের মধ্যে একজনও অসম্মতি জানালে উনকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অপসারণ করা যাবে না।
তথ্যসূত্র : বিবিসি।