ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তার তিন ভুয়া দুদক কর্মকর্তাকে তিন দিন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন থানার পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান খান আসামিদের আদালতে হাজির করে সাত দিন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করে, রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম শাহিন রেজার আদালত তাদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে এই আদেশ দেন।
রিমান্ডের যাওয়া আসামিরা হলেন, কথিত ‘দুর্নীতি নিবারণ সহায়ক সংস্থার’ নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম সম্রাট, সংস্থার পরিচালক (অপারেশন) মো. রায়হান ওরফে সৈয়দ রায়হান ও সাইফুল ইসলাম।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, গ্রেপ্তার হওয়া আসামি ও এজাহারনামীয় পলাতক আসামিসহ ৭/৮ জন অজ্ঞাতনামা ভুয়া দুদক কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে জানতে পেরে দুদক গোয়েন্দা কার্যক্রম চালায়। এসময় দেখা যায় যে, আসামি রায়হানের নেতৃত্বাধীন একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র “দুর্নীতি নিবারণ সহায়ক সংস্থা” নামে দুদকের অনুরূপ প্রতিষ্ঠান তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও তথ্য প্রচার করে হুমকি ও ভীতি প্রদর্শন করে।
এরই ধারাবহিকতায় আসামিরা গত ১২ নভেম্বর হবিগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দুদকের ছদ্মবেশে অভিযান পরিচালনার নামে কর্তব্যরত সরকারি কর্মচারীদেরকে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে সাইফুল ইসলামসহ কয়েকজনকে তাৎক্ষণিক বিচারের নামে আইন বহির্ভূতভাবে জনপ্রতি ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে। এছাড়াও, দুদকের সহযোগী সংস্থা পরিচয় দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে জমিজমা ও সীমানা বিরোধ, পাওনা টাকা আদায়, পারিবারিক দ্বন্দ্ব, দাম্পত্য কলহসহ অন্যান্য বিষয়ে প্রতারণা মূলক ও আইন বহির্ভূতভাবে মোট ১৫৩টি স্থানে অভিযান পরিচালনাসহ সর্বমোট দুই শতাধিক জায়গায় বিচারের নামে চাঁদাবাজি করে।
এজাহারে আরও বলা হয়, এসব অভিযান পরিচালনার সময় প্রতারক চক্রটি পুলিশের সহযোগিতা নিতে এখতিয়ার বহির্ভূতপত্র পাঠায়। আসামিদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে মামলার ঘটনা সংক্রান্ত সুস্পষ্ট তথ্য সংগ্রহ ও মূল রহস্য উদঘাটন সম্ভব হবে।
গত ৬ জানুয়ারি ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কার্যালয়ের সামনে থেকে তাদের আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেন প্রতারক চক্রের দুই সদস্য।
ওই ঘটনায় দুদকের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় পরস্পর যোগসাজশে সরকারি কর্মচারীর ছদ্মবেশ ধারণ করার অভিযোগ করা হয়েছে।