শিশুর নীরোগ চোখে অস্ত্রোপচারের অভিযোগে করা মামলায় ঢাকার ধানমণ্ডির বাংলাদেশ আই হসপিটালের শিশু চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. শাহেদারা বেগম জামিন পেয়েছেন।
গ্রেপ্তারের পরদিন বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মাসুমা রহমানের আদালত চিকিৎসকের জামিনের আদেশ দেন।
বুধবার রাতে ধানমণ্ডি থানায় শিশুটির বাবা মাহমুদ হাসানের করা মামলায় ডা. শাহেদারাকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, গত মঙ্গলবার দেড় বছর বয়সী শিশুটির চোখে ভুল অস্ত্রোপচার করেন ডা. শাহেদারা। শিশুর বাম চোখে সমস্যা, তিনি ডান চোখে অস্ত্রোপচার করেন।
ডা. সাহেদারাকে বৃহস্পতিবার ঢাকার আদালতে হাজির করার পর তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধানমণ্ডি থানার এসআই মো.সাইফুল আলম।
আবেদনে বলা হয়, গত ১৪ জানুয়ারি বাদীর ছেলের বাম চোখের অপারেশনের জন্য বাংলাদেশ আই হসপিটালের অস্ত্রোপচার কক্ষে (ওটি) ঢোকানো হয়েছিল। অস্ত্রোপচার শেষে বাদী লক্ষ্য করেন যে তার সন্তানের বাম চোখের পরিবর্তে ডান চোখে অপারেশন করা হয়েছে।
বাদী তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি কর্তব্যরত চিকিৎসককে জানান। তখন আসামিসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বাদীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করে এবং বাদী ও তার স্ত্রীর পূর্ণ অনুমতি ছাড়াই তাদের ছেলেকে পুনরায় ওটিতে নিয়ে গিয়ে বাম চোখ অস্ত্রোপচার করেন। এতে বাদীর ছেলের জীবন ঝুঁকিতে পড়ে।
তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এই চিকিৎসক বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে, যা মামলা তদন্ত কাজে সহায়ক হবে। আসামির দেওয়া তথ্যগুলো যাচাই করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে কারাগারে আটক রাখা প্রয়োজন।
আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট আব্দুর রশিদ জামিন চেয়ে আদালতকে বলেন, ৩৫ বছরের ডাক্তারি জীবন শাহেদারা বেগমের। শিশুটির চোখে পাপড়ি ঢুকে গিয়েছিল। তা সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে দেখা যায়, বাম চোখেও একই অবস্থা। যদিও সিরিয়াস কিছু না।
তনি বলেন, আসামির বিরুদ্ধে মামলায় আনা অভিযোগ জামিনযোগ্য, তার বিরুদ্ধে অন্য কোনও গুরুতর অভিযোগ নেই। তাই তার জামিন প্রার্থনা করছি।
উভয় পক্ষ শুনানি শেষে আদালত এই চিকিৎসকের জামিনের আদেশ দেন।
সাংবাদিকদের ওপর চড়াও
আদালতে আলোকচিত্র সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে তাদের ওপর চড়াও হন ডা. শাহেদারা বেগম।
জামিন আদেশের পর এজলাস থেকে যখন তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় নেওয়া হচ্ছিল, তখন সাংবাদিকরা তার ছবি তুলতে যান।
এসময় তিনি সাংবাদিকদের ওপর ক্ষেপে ওঠেন এই চিকিৎসক। সঙ্গে থাকা তার প্রতিষ্ঠানের কর্মীরাও সাংবাদিকদের নানা কটূক্তি করতে থাকেন। কেউ বলেন ‘ভুয়া, ভুয়া’; আবার কেউ বলেন ‘মিডিয়া ব্যবসায়ী’।
তারা সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের ছবি তোলেন ও ভিডিও করে নিয়ে যান। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে তাদের কয়েকজন কথা বলেন। তারা দাবি করেন, ডা. শাহেদারা বেগম একজন ‘পরোপকারী চিকিৎসক, তার বিরুদ্ধে মামলাটি ভুয়া।