বাজার পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচনার মুখে সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর দায় চাপালেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
তিনি বলেছেন, “দ্রব্যমূল্যে নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়ে কর্মকর্তাদের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পর শনিবার প্রথম চট্টগ্রাম সফরে এসে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে একথা বলেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। এই সরকারের আড়াই মাস গড়ালেও নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে এরই মধ্যে উঠেছে সমালোচনা।
শনিবারই ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী সরকারের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা কী করেন? এতদিনেও সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছেন না কেন? জনগণ তো বলবেই, শেখ হাসিনার সময়ে জিনিসপত্রের দাম বাড়ত, এখনও বাড়ছে। তফাৎটা কী?”
শ্রম উপদেষ্টা আসিফ সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, এনিয়ে গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায়ও আলোচনা হয়েছে।
“দ্রব্যমূল্যে নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়ে কর্মকর্তাদের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। টাস্কফোর্স বা ভোক্তা অধিকার আপনারা কয়টা অভিযান পরিচালনা করেছেন, কী পরিমাণ কাজ করেছেন, সে বিষয়ে আমি কিছুই পাইনি।
“আমাকে বাণিজ্য সচিব তিন দিনের টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন পাঠিয়েছিলেন। আমি সেই প্রতিবেদেন একদিন চট্টগ্রামের নাম পেয়েছি, বাকি দুই দিন আপনাদের নামই নেই। ৪০-৪৫টা জেলার মধ্যে টাস্কফোর্সের অভিযান করেছে। কিন্তু চট্টগ্রামে তিন দিনের মধ্যে দুই দিনই অভিযান হয়নি। আমার মনে হয় এই জায়গায় আপনাদের সদিচ্ছার ঘাটতি আছে কিংবা সরকারের প্রতি অসহযোগিতার একটা ব্যাপার আছে।”
এই সভায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরসহ কয়েকটি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিতি না থাকায়ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন উপদেষ্টা আসিফ ও শ্রম সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
তাদের এমন অভিযোগ নিয়ে উপস্থিত বিভাগীয় কমিশনার কিংবা জেলা প্রশাসক কোনও কথা বলেননি।
অসহযোগিতা চলতে থাকলে সরকার কঠিন হবে বলেও হুঁশিয়াির দেন ছাত্র আন্দোলন থেকে উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়া আসিফ।
তিনি বলেন, “আমাদের হয়ত অনেক কঠিন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। সিস্টেম ভাঙার প্রয়োজন পড়লে আমরা সিস্টেম ভাঙব। প্রয়োজনে নতুন নিয়োগ নিয়ে এই জায়গাগুলোতে নতুন লোকদের বসাব।”
যুব ও ক্রীড়াউপদেষ্টার দায়িত্বে থাকা আসিফ এদিন সকালে চট্টগ্রামের সাগরিকায় জহুর আহমেদ চৌধুরী ক্রিকেট স্টেডিয়াম এবং কাজীর দেউড়ীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেন। পরে আগ্রাবাদে চট্টগ্রাম চেম্বারে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন।