সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃত্বে এসেছে আওয়ামী লীগপন্থিরা। সমিতির নির্বাচনে বেশিরভাগ পদে জয় পেয়েছেন গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া দলটির সমর্থক এসব আইনজীবী।
নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন নগরের ১৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি সরওয়ার আহমেদ চৌধুরী আবদাল ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জুবায়ের বখত জুবের।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সমিতির ২ নম্বর হলের ২য় ও ৩য় তলায় ভোট গ্রহণ করা হয়। বিকাল থেকে শুরু হয় ভোট গণনা। রাতভর গণনা শেষে শুক্রবার ভোর ৬টায় বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার সৈয়দ মোহাম্মদ তারেক অ্যাডভোকেট।
এসময় তাকে সহযোগিতা করেন সহকারি নির্বাচন কমিশনার এম. আব্দুল করীম আকবরী অ্যাডভোকেট ও জামিল আহমদ অ্যাডভোকেট।
ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, সভাপতি পদে আওয়ামী লীগ নেতা সরোয়ার আহমদ চৌধুরী আবদাল পেয়েছেন ৭৭০ ভোট। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নেতা এ টি এম ফয়েজ উদ্দিন পেয়েছেন ৬৫৮ ভোট।
সিনিয়র সহসভাপতি পদে আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবী জ্যোতির্ময় পুরকায়স্থ (কাঞ্চন) ৫৯১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী জুৎনা ইসলাম ৩৫৫, আলী হায়দার ২৩৩, সৈয়দ ফেরদৌস ২১৩টি ভোট পেয়েছেন।
সহসভাপতি-২ পদে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবী মোহাম্মদ মোখলিসুর রহমান। তিনি ৪৮৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুস সোহেব আহমদ ৩৮২, আব্দুল হান্নান ৩৭৮ ও আফরোজ আহমদ ৬৪টি ভোট পেয়েছেন।
সাধারণ সম্পাদক পদে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জুবায়ের বখত জুবের ৩০৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দেলোয়ার হোসেন দিলু ২৮৫ ও মমিনুর রহমান টিটু ২৭৯টি ভোট পেয়েছেন।
সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক পদে আওয়ামী লীগপন্থি ওয়াহিদুর রহমান চৌধুরী ৭০৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ইকবাল আহমদ ৪৭৮ ও তাজ রিহান জামান ২৩৬টি ভোট পেয়েছেন।
যুগ্ম সম্পাদক-২ পদে বিএনপি পন্থী রব নেওয়াজ রানা ৪২০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কানন আলম ২৮৩ ও তানভীর আক্তার খান ২২২টি ভোট পেয়েছেন।
সমাজ বিষয়ক সম্পাদক পদে মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ৭৮৯ ভোট, সহ-সমাজ বিষয়ক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট সৈয়দ রাব্বী হাসান তারেক ৭২৮ ভোট, লাইব্রেরি সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট হেনা বেগম ৭৩১ ভোট, প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে অ্যাডভোকেট মো. ছয়ফুল আলম অ্যাডভোকেট ৮২৫ ভোট, সহকারী নির্বাচন কমিশনার পদে অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল্লাহ আল হেলাল ৬৫৭ ভোট ও মো. কাওছার জুবায়ের ৫০৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
সহ-সম্পাদকীয় ৩টি পদে অ্যাডভোকেট এমাদ উদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদ ১০৫৯ ভোট, সাহেদ আহমদ ৯৭৪ ভোট ও কাওছার আহমদ ৭৮৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
এছাড়াও সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যের ১১টি পদের বিপরীতে ১৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এ পদে বিজয়ীরা হলেন- অ্যাডভোকেট মো. গিয়াস উদ্দিন ৯৮৫ ভোট, এ.এস.এম. আব্দুল গফুর ৯২৩ ভোট, এ.কে.এম. ফখরুল ইসলাম ৯১৬ ভোট, মো. জামিলুল হক জামিল ৯১৪ ভোট, আব্দুল মালিক ৮৯১ ভোট, কল্যাণ চৌধুরী ৮১৬ ভোট, আশিক উদ্দিন (আশুক) ৭৭৯ ভোট, জুবের আহমদ খান ৭৩৯ ভোট, আবু মো. আসাদ ৬৬৩ ভোট, মো. আলীম উদ্দিন ৬৬০ ভোট এবং মো. ছয়ফুল হোসেন ৬২৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোহাম্মদ তারেক সকাল সন্ধ্যাকে জানান, উৎসবমুখর পরিবেশে আইনজীবীরা তাদের নেতৃত্ব নির্বাচন করেছেন। নির্বাচনে ২৬টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৬৫ জন। সমিতির ১৮৫০ জন ভোটারের মধ্যে ১৪৬০ জন ভোটার ভোট দেন।
সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করায় আইনজীবীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
