ব্যাংক একীভূত করা নিয়ে ব্যাংক মালিকদের ‘আতঙ্ক কেটে গেছে’ বলে মন্তব্য করেছেন ব্যাংক পরিচালকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার।
সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “পত্রপত্রিকায় দেখেছি ব্যাংক একীভূত হবে, এতে আমাদের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক কাজ করছিল। আজ গভর্নরের সঙ্গে বিস্তারিত কথা হয়েছে, তিনি আমাদেরকে বুঝিয়েছেন। আমাদের আতঙ্ক কেটে গেছে।
“পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ব্যাংক একীভূত করার উদাহরণ রয়েছে। তাই জাতীয় স্বার্থে আমরা এটি মেনে নেব। আমরা বুঝতে পেরেছি, ব্যাংক একীভূত হলে কারও ক্ষতি হবে না। দুর্বল ব্যাংক শক্তিশালী হবে এবং ভালো ব্যাংক আরও শক্তিশালী হবে।”
“সরকার যদি চায় তাহলে জাতীয় স্বার্থে যেকোনো সিদ্ধান্ত মানতে আমরা বাধ্য” যোগ করেন বিএবি চেয়ারমান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, “ব্যাংক খাতের ভালোর জন্যই আমরা ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের সামনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উদাহরণ রয়েছে। সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে আমরা একটি নীতিমালা তৈরি করব- কীভাবে একীভূত করা যায়।
“এমনও হতে পারে যে, কোনো ব্যাংক একীভূত করার প্রয়োজন হবে না। ইতোমধ্যে দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করার জন্য পিসিএফ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। আগামী বছরের মার্চ নাগাদ আমরা দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করতে পারব। এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কোন কোন ব্যাংক একীভূত করার প্রয়োজন রয়েছে। তখন সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে প্রণীত নীতিমালার আলোকে ব্যাংক একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শুরু হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, “অন্যান্য দেশের উদাহরণগুলো লক্ষ্য করলে দেখা যায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে মালিকদের নিজস্ব উদ্যোগেই ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিদ্ধান্ত দিয়েছে। আমরাও চাই মালিকরা সিদ্ধান্ত নিক। যদি প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় তাহলে আমরা সিদ্ধান্ত জানাব।”
বাংলাদেশ ব্যাংক গত ৪ ফেব্রুয়ারি ব্যাংক খাতের সুশাসন ত্বরান্তিত করতে একটি রোডম্যাপ হাতে নেয়। তাতে দুর্বল ব্যাংক একীভূত করার একটি কর্মপরিকল্পনার কথা বলা হয়। এতে ব্যাংকগুলোর মূলধন কাঠামো শক্তিশালী হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়। তবে কীভাবে একীভূত করা হবে তা নিয়ে বিস্তরিত কিছু না বলায় ব্যাংক মালিকদের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এ কারণে বিষয়টি নিয়ে বিএবি নেতারা গত রবিবার এক বৈঠকে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এরপরের দিন সোমবার বিএবি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে আসেন।