Beta
রবিবার, ৫ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
রবিবার, ৫ জানুয়ারি, ২০২৫

সালমান খানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জেরেই খুন বাবা সিদ্দিকি: পুলিশ

সালমান খান, বলিউড, মুম্বই, হিন্দি সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি, বাবা সিদ্দিকি, বলিউড-আন্ডারওয়ার্ল্ড সম্পর্ক
প্রতি বছর ঈদের অনুষ্ঠানে বাবা সিদ্দিকির দাওয়াতে সাড়া দিতেন সালমান খান। বলা হয়, মু্ম্বাইয়ে সর্বকালের সেরা গ্যাংস্টার হিসেবে কুখ্যাতি অর্জনকারী দাউদ ইব্রাহিমের গ্যাংয়ের হয়ে বলিউডে চাঁদাবাজি ও মাদকসহ অন্যান্য অবৈধ ব্যবসায়ের মধ্যস্থতাকারী ছিলেন বাবা সিদ্দিকি।
[publishpress_authors_box]

অভিনেতা সালমান খানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণেই হত্যা করা হয় রাজনীতিক বাবা সিদ্দিকিকে। মহারাষ্ট্রের এই প্রাক্তন মন্ত্রীর খুনের আড়াই মাস পর এমন কথাই বলছে মুম্বাই পুলিশ, খবর ভারতীয় গণমাধ্যমের।

হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, এই মামলায় এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রেফতার হওয়া ২৬জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিতে চলেছে পুলিশ।

সালমান খানের সাথে ঘনিষ্ঠতা ছাড়াও মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় একটি বস্তি পুনর্বাসন প্রকল্প নিয়ে বিরোধ এই হত্যার কারণ হতে পারে বলে এর আগে তদন্তকারীরা ধারণা করলেও এখন মুম্বাইয়ের সিটি ক্রাইম ব্রাঞ্চ বলছে ঐ বিরোধ ‘কোনভাবেই আসল কারণ নয়’।

একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “প্রাথমিকভাবে, বাবা সিদ্দিকির ছেলে জিশানের অভিযোগ অনুযায়ী আমরা খুনের ঘটনার তদন্ত করেছি। তবে বস্তি পুনর্বাসন প্রকল্প নিয়ে ঝামেলার কারণে এই খুন হয়নি। এধরনের বিরোধের কারণে খুন হওয়ার কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি। যদিও আমরা কয়েকজন ডেভেলপারের বক্তব্য রেকর্ড করেছি, কিন্তু তেমন কিছুই বের হয়ে আসেনি।“

গেল ১২ অক্টোবর মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় দশেরার উৎসবমুখর সন্ধ্যায় ৬৬ বছর বয়সী বাবা সিদ্দিকিকে তার ছেলের অফিসের বাইরে একাধিকবার বুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। মোট ছয়টি গুলি ছোড়া হয়, যার মধ্যে চারটিই তার বুকে লাগে।

ঘটনার পরপরই গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের দল বাবা সিদ্দিকি হত্যার দায় স্বীকার করে।

এর আগে ১৪ এপ্রিল রাজস্থানে কৃষ্ণসার হরিণ হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সালমান খানের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল বিষ্ণোই গ্যাং।

প্রতি বছর ঈদের অনুষ্ঠানে বাবা সিদ্দিকির দাওয়াতে সাড়া দিতেন সালমান। তার সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়াই নাকি কাল হয়েছে বাবা সিদ্দিকির, এমনই দাবি বিষ্ণোই গ্যাং খুনের পর থেকেই করে আসছিল।

বাবা সিদ্দিকি, লরেন্স বিষ্ণোই, সালমান খান

সাবেক মন্ত্রী বাবা সিদ্দিকিকে গুলি করে হত্যার মধ্য দিয়ে দুই দশকের বেশি সময় পরে বলিউডে নতুন করে সহিংস সন্ত্রাসবাদ হানা দিল

বাবা সিদ্দিকি হত্যার পর আবারো স্পটলাইটে আসে সালমান খানের ১৯৯৮ সালের সেপ্টেম্বরে কৃষ্ণহরিণ শিকার । রাজস্থানের যোধপুরে সালমান খান ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ সিনেমার শুটিংয়ের ফাঁকে ওই বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর দুইটি কৃষ্ণ বা কালো হরিণকে গুলি করে হত্যা করেন। এর ঠিক ১২ দিন পর ২৮ সেপ্টেম্বরে ঘোডা এলাকার একটি ফার্মে আরেকটি কৃষ্ণহরিণ তিনি শিকার করেন।

বিলুপ্ত প্রজাতির এ হরিণ বিষ্ণোই ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। তারা মনে করেন, হিন্দুদের বিষ্ণোই গোত্রের প্রবক্তা ভগবান জাম্বেশ্বরের পুনরুত্থানের প্রতীক কৃষ্ণহরিণ।

এছাড়া ভারতের বন্যপ্রাণী আইন অনুযায়ীও সালমান বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীর তালিকায় থাকা ওই হরিণ শিকারের কারণে দোষী সাব্যস্ত হন। এর জন্য জরিমানা দিয়েছেন তিনি। জেলও খেটেছেন। তবে রাজস্থান আদালতের দেয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ শাস্তি নয়। আর এর জন্য তিনি কখনো বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের কাছে ক্ষমাও চাননি।

বিষ্ণোই গ্যাং ধর্মীয় পবিত্রতা নষ্টের কারণ দেখিয়ে তাই সালমানকে হত্যা করতে চাইছে। সালমান খানের বাড়ি পূর্ব বান্দ্রায়, যেটি আবার সিদ্দিকির নির্বাচনী ও বেড়ে ওঠার এলাকা। সালমানের ওপর এ বছর এপ্রিলে হামলার পর বাবা সিদ্দিকি তার নিরাপত্তার জন্য পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন।

বলিউডে বাবা সিদ্দিকি সবচেয়ে আলোচিত সম্ভবত ২০১৩ সালে সালমান খান ও শাহরুখ খানের মধ্যে চলতে থাকা বিরোধ মেটানোর মধ্যস্ততাকারী হিসেবে। সেবার এক ইফতার পার্টিতে দুই নায়ককেই নিমন্ত্রণ করেন তিনি।

সালমানের বাবা বলিউডের বিখ্যাত প্রযোজক ও স্ত্রিপ্টরাইটার সেলিম খানও ছিলেন নিমন্ত্রিত। সেখানেই ইফতারের সময় শাহরুখ খানকে সেলিম খানের পাশে বসিয়ে দেন তিনি। তখন থেকেই দুই মহাতারকার দূরত্ব কমতে থাকে।

বলা হয়, মু্ম্বাইয়ে সর্বকালের সেরা গ্যাংস্টার হিসেবে কুখ্যাতি অর্জনকারী দাউদ ইব্রাহিমের সন্ত্রাসী দল ‘ডি কোম্পানি’র হয়ে বলিউডের চাঁদাবাজি ও মাদকসহ অন্যান্য অবৈধ ব্যবসায়ের মধ্যস্থতাকারী ছিলেন বাবা সিদ্দিকি।

রোজার মাসে চোখ ধাঁধানো ইফতার পার্টির দিতেন সিদ্দিকি। ওইসব ইফতার পার্টিতে বলিউডের বড় বড় তারকা, রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ীরা মিলিত হতেন। একধরনের ‘বিজনেস ডিল’ এর ক্ষেত্রও হয়ে উঠেছিল সিদ্দিকির দেয়া পার্টিগুলো।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত