জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার সকালে তিনি রাজধানীর ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে এই মহান নেতার প্রতি এ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ সময় বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে ও প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে দলের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা তার দলের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আরেক দফা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা এবং দেশের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু ২৯০ দিন পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি থাকার পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি লন্ডন ও নয়াদিল্লি হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন। সেই থেকে জাতি দিনটিকে জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।
ডাকটিকিট অবমুক্ত প্রধানমন্ত্রীর
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট, একটি উদ্বোধনী খাম এবং একটি ডাটা কার্ড অবমুক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার গণভবনে ১০ টাকা মূল্যমানের স্ট্যাম্প ও উদ্বোধনী খাম এবং ৫ টাকা মূল্যমানের ডাটা কার্ড অবমুক্ত করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি কে এম সাখাওয়াত মুন জানান, অনুষ্ঠানে একটি বিশেষ সিলমোহর ব্যবহার করা হয়েছে।
আজ বুধবার থেকেই ঢাকা জিপিওর ফিলাটেলিক ব্যুরোতে স্ট্যাম্প, উদ্বোধনী খাম ও ডাটা কার্ড বিক্রি করা হবে। এগুলো পরে সারাদেশের অন্যান্য জিপিও এবং প্রধান পোস্ট অফিসগুলোতেও পাওয়া যাবে।
উদ্বোধনী খাম ব্যবহারের জন্য চারটি জিপিওতে বিশেষ সিলমোহরের ব্যবস্থাও রয়েছে।
এ সময়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান উপস্থিত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু স্বদেশে ফেরার পরই বিজয় পূর্ণতা পায় : ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফিরে আসার মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের বিজয় পূর্ণতা পায়।
বুধবার সকালে ধানমণ্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে রক্ষিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “পাকিস্তানিদের পরাজিত করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় অর্জন করি। তবে বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে আমাদের বিজয়ও ছিল অসম্পূর্ণ। বিজয়ের মহানায়ক নেই, বিজয়ও যেন অনুপস্থিত। ১০ জানুয়ারি যখন তিনি এলেন, তখনই ১৬ ডিসেম্বরের বিজয় পূর্ণতা পেল।”
তিনি বলেন, “৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে আবারও উল্টো পথে যাত্রা শুরু হয়। দীর্ঘ ২১টি বছর দেশ আবারও পাকিস্তানি ও সাম্প্রদায়িক ধারায় চলে যায়। নানা ঘাত-প্রতিঘাত, ষড়যন্ত্র, রক্তপাত ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পদে পদে নানা চ্যালেঞ্জ আমরা অতিক্রম করেছি।”
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আজকের দিনে আমাদের অঙ্গীকার— আমাদের দেশে এখন সম্প্রদায়িক অশুভ শক্তির যে বীজবৃক্ষ ডালপালা বিস্তার করেছে, এই সাম্প্রদায়িক বীজবৃক্ষকে উৎপাটন করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিজয়কে সংহত করে, বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের সোনার বাংলা অভিমুখে আমাদের যাত্রা অব্যাহত থাকবে।” বাসস।