Beta
শুক্রবার, ৫ জুলাই, ২০২৪
Beta
শুক্রবার, ৫ জুলাই, ২০২৪

ফিফার নির্দেশনা উপেক্ষা করে কাউন্সিলর বাড়াচ্ছে বাফুফে

ফিফার দেওয়া নির্দেশনা মানতে চাইছেন না কাজী সালাউদ্দিন।
ফিফার দেওয়া নির্দেশনা মানতে চাইছেন না কাজী সালাউদ্দিন।
Picture of ক্রীড়া প্রতিবেদক

ক্রীড়া প্রতিবেদক

মাঠে ছেলেদের ফুটবলের অবস্থা তথৈবচ। মেয়েরা সাফ শিরোপা জিতে বাংলাদেশ ফুটবলের নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েও উপেক্ষিত। তাদের অলিম্পিক বাছাইয়ে খেলতে পাঠায় না বাফুফে। এমনকি মহিলা ফুটবলের চ্যাম্পিয়ন ক্লাবকেও এএফসি ওমেন্স চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলতে দেয়নি মাহফুজা আক্তার কিরণ শাসিত মহিলা ফুটবল কমিটি। অথচ এই মহিলা ফুটবলের ক্লাব নিয়ে শুরু হয়ে গেছে তার ভোট বাণিজ্য। মেয়েদের লিগের চারটি ক্লাবকে কাউন্সিলরশিপ দিতে উঠে-পড়ে লেগেছেন তিনি। এজন্যই মূলত আগামী শনিবার বার্ষিক সাধারণ সভা ডেকেছে বাফুফে।

এই সভার আলোচ্য সূচীতে কী কী থাকছে? বাফুফে সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার জানিয়েছেন, “এটা আসলে ২০২৩ সালের সাধারণ সভা, নানা কারণে তখন করা হয়নি। নিয়মিত কিছু এজেন্ডা যেমন অডিট রিপোর্ট, ২০২৪ সালের বাজেট অনুমোদনের বিষয় আছে। এছাড়া বড় এজেন্ডা হলো, মহিলা লিগের চারটি ক্লাবকে কাউন্সিলরশিপ ও ভোটাধিকার দেওয়ার প্রস্তাবনা।”

এজেন্ডাতেই স্পষ্ট কাজী সালাউদ্দিন ও কিরণ আগামী বাফুফে নির্বাচনের অঙ্ক কষতে শুরু করেছেন। আগামী অক্টোবরের হবে নির্বাচন। সভাপতি পদে ১৬ বছর পার করা সালাউদ্দিন আরো চার বছর থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাই নির্বাচনের আগে নতুন চার ভোটারের অনুমোদন করিয়ে নিতে চান। 

মেয়েদের ফুটবল গৌণ, ভোটার মুখ্য

গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের মেয়ে ফুটবলের সাফ শিরোপা জয়ের পর উৎসবটা হয়েছিল সাড়ম্বরে। ছাদখেলা বাসে মেয়েদের বরণ করার পর বাফুফে সভাপতি দিয়েছিলেন নানা প্রতিশ্রুতি। বাস্তবে হয়েছে উল্টো। সাফ জয়ের দশ মাস ফুটবল খেলারই সুযোগ পায়নি সাবিনা-মনিকারা। গত বছর তাদের অলিম্পিক বাছাইয়ে তাদের খেলার সুযোগটাও ভেস্তে যায় সালাউদ্দিন-কিরণের মনগড়া সিদ্ধান্তে।

শনিবার বাফুফের এজিএম অনুষ্ঠিত হবে রাজধানীর পাঁচতারকা হোটেলে।

বাফুফের এই আলোচিত জুটি এ বছর করেছেন আরেকটা অপকর্ম। বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন ক্লাবের এএফসি ওমেন্স চ্যাম্পিয়নস লিগের খেলার অধিকার হরণ করেছেন তারা। যেখানে নেপাল-ভুটানের দল অংশ নিচ্ছে, সেখানে নেই সাফজয়ী বাংলাদেশের কোনও ক্লাব। মহিলা কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ বলার চেষ্টা করেছিলেন “বাংলাদেশের লিগ পেশাদার নয়, ক্লাবের লাইসেন্সিং নাই।” সবই অযৌক্তিক ও মিথ্যা। কারণ এএফসি এবছর কিছুই চায়নি, শুধু দলগুলোর আন্তরিক অংশগ্রহণ চেয়েছিল।

মেয়েদের ফুটবল নিয়ে যারা এমন তামাশা করেছেন তারাই এখন মেয়েদের ফুটবল ক্লাবগুলোকে ভোটার বানাতে মরিয়া। সালাউদ্দিন-কিরণের কাছে ফুটবল খেলা মুখ্য নয়, ভোটই আসল। তাই এই দুজন নিজেদের স্বার্থে যখন যেভাবে দরকার সেভাবে ব্যবহার করছে মেয়েদের ফুটবলকে। মহিলা ফুটবল কমিটি নামে আলাদা কমিটি থাকলেও তার সদস্যরা কেউ কিছু জানেন না।

কিন্তু ফিফার নির্দেশনা কাউন্সিলর ও কমিটি ছোট করার

সামনে নির্বাচন, তাই বাফুফে ভবনে এখন কাউন্সিলরদের (ভোটারদের) কদর বেড়েছে। গত বৃহস্পতিবার সেখানে গিয়েছিলেন বেশ কিছু কাউন্সিলর। ছিলেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সহ সভাপতি আতাউর রহমান ভূঁইয়া ও মাহফুজা আক্তার কিরণ। এক কাউন্সিলর প্রশ্ন তুলেছিলেন, “আপনারা সাধারণ সভায় কাউন্সিলর বাড়াতে চাইছেন, কিন্তু ফিফার নির্দেশ তো কমানোর। সেটা যদি পরে সমস্যা হয় ?” জবাবে সালাউদ্দিন অভয় দেন, “কোনও সমস্যা হবে না। ওসব আমি দেখবো।”  

ফিফার নির্দেশনা মানছেন না বাফুফের কর্মকর্তারা।

২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে ফিফা নির্দেশনা পাঠিয়েছিল কাউন্সিলর সংখ্যাসহ নির্বাহী কমিটির আয়তন ছোট করতে। সেটা খোদ বাফুফে সভাপতিই জানিয়েছিলেন সংবাদ মাধ্যমকে। সর্বশেষ ২০২০ সালের নির্বাচনে বাফুফে কাউন্সিলরের সংখ্যা ছিল ১৪৮। তার মধ্যে ভোটাধিকার ছিল ১৪১ জনের। এছাড়া বর্তমান নির্বাহী কমিটি ২১ জনের। ফিফার নির্দেশনা অনুযায়ী, কাউন্সিলর সংখ্যা একশ’র নীচে নামিয়ে আনতে হবে। আর কমিটির আয়তন ১২ থেকে ১৪ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।

ফিফার সেই নির্দেশনা অমান্য করে এখন কাউন্সিলর সংখ্যা বাড়ানোর জন্য সাধারণ সভা ডেকেছে বাফুফে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত