আগরতলার ঘটনার প্রেক্ষাপটে রাজধানী নয়া দিল্লিতে বিক্ষোভের আগে বাংলাদেশ হাই কমিশনে নিরাপত্তা জোরদার করেছে ভারত সরকার।
দেশের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই মঙ্গলবার এই খবর দিয়ে বলেছে, বিভিন্ন সংগঠন এদিন বিক্ষোভের ডাক দেওয়ায় পুলিশের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
দিল্লি পুলিশের এক কর্মকর্তা পিটিআইকে বলেন, “যেহেতু বিক্ষোভের কর্মসুচি রয়েছে। তাই বাংলাদেশ হাই কমিশন ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কাউকে কোনও রকম বিশৃঙ্খলা করতে দেওয়া হবে না।”
এদিকে বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের (আরএসএস) সমর্থনে সিভিল সোসাইটি অব দিল্লি’র ব্যানারে দুপুর ১২টার পর বাংলাদেশ হাইকমিশনের অভিমুখে মিছিল শুরু হয় দিল্লির চাণক্যপুরী থানার তিন মূর্তি চক থেকে। মিছিলে তিন থেকে চার হাজার মানুষ ছিল।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ঢাকা-দিল্লি কূটনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যে গত ২ ডিসেম্বর ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় হিন্দু সংগঠনগুলোর বিক্ষোভ থেকে বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনে হামলা হয়।
সেই ঘটনায় বাংলাদেশের কড়া প্রতিবাদের মধ্যে নয়া দিল্লির পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে দূতালয়গুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানোর আশ্বাসও দেওয়া হয়।
গত আগস্টে বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা ছেড়ে শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে ঢাো-দিল্লি কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েন চলছিল।
তার মধ্যে গত ২৫ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় হিন্দু ধর্মীয় নেতা চিন্ময় ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তারের পর তা চরমে ওঠে। চিন্ময়ের মুক্তি দাবিতে ভারতের হিন্দু সংগঠনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ নিয়ে অপপ্রচার বন্ধের দাবিতে ঢাকায়ও গত কয়েকদিনে বিভিন্ন সংগঠন ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে পদযাত্রাসহ নানা কর্মসূচি পালন করে। এর পাল্টায় দিল্লিতেও মঙ্গলবার বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভের ডাক দেয় কয়েকটি সংগঠন।
এদিকে এই উত্তেজনার মধ্যেই সোমবার ঢাকায় এসে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্ত্রি। তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গেও দেখা করেন।
বিক্রিম মিস্ত্রি বলে গেছেন, ভারত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গেও সম্পর্ক ধরে রাখতে চায়।