বাংলাদেশ যে এখন ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিদেশি বিনিয়োগের উপযুক্ত স্থান, এই বার্তা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দিতে চান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি মনে করেন, দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে-এ তথ্য বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দেওয়া দরকার, তরুণদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে।
সুইজারল্যান্ডের ডাভোস শহরে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) চলমান বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে বিদেশিদের তিনি এ বার্তা দেবেন বলে তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাসসকে জানান।
প্রেস সচিব বলেন, “ফেইসবুকের মূল কোম্পানি মেটা, বৈশ্বিক বন্দর পরিচালনাকারী সংস্থা ডিপি ওয়ার্ল্ড, বিশ্বের বৃহৎ শিপিং কোম্পানি এপি মুলার মার্কসসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ের শীর্ষস্থানীয় বেশ কয়েকটি কোম্পানির প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে বুধবার বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা। তাদের তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানাবেন।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকার পাশাপাশি দেশটি এখন গণতান্ত্রিক রূপান্তরের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত-এই বার্তা ড. ইউনূস বিনিয়োগকারীদের কাছে পৌঁছে দিতে চান।”
শফিকুল আলম বলেন, “বাংলাদেশের তরুণ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন। বিদেশি বিনিয়োগ এলে তারা উচ্চ বেতনের চাকরির সুযোগ পাবে, যা এ মুহূর্তে আমাদের দেশের জন্য খুব দরকার।”
প্রেস সচিব জানান, মঙ্গলবার ডাভোসে প্রধান উপদেষ্টা ফিনান্সিয়াল টাইমস পত্রিকায় একটি সাক্ষাৎকার দেন, যেখানে তিনি বাংলাদেশে জুলাই বিপ্লবে তরুণরা কীভাবে নেতৃত্বের অগ্রভাগে ছিল, তা তুলে ধরেন।
এছাড়া সেদিন জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাই কমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডির সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। এসময় তিনি রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করতে তার সহায়তা চান।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাই কমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডিকে ড. ইউনূস জানান, রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে এ বছর বাংলাদেশ বড় আকারে বৈশ্বিক সম্মেলনের আয়োজন করতে যাচ্ছে, যেখানে ১৭০টির মতো দেশ অংশগ্রহণ করবে।
এ সম্মেলন আয়োজনের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাই কমিশনারের সহায়তা চান ড. ইউনূস। তাকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, এ সম্মেলন আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হলো, রোহিঙ্গা সঙ্কট যে বড় ধরনের মানবিক সঙ্কট, তা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা। ড. ইউনূস রোহিঙ্গা সঙ্কটকে বৈশ্বিক পর্যায়ে তুলে ধরতে চান। এজন্য তিনি জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাই কমিশনারের সহায়তা চান।