Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

ভারতকে গুঁড়িয়ে এশিয়ায় আবারও বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠত্ব

SAT_20312
Picture of ক্রীড়া প্রতিবেদক

ক্রীড়া প্রতিবেদক

[publishpress_authors_box]

দুবাইকে ভারতের দ্বিতীয় হোম বললে ভুল হবে না। দেশটির চাকরির বাজারে ভারতীয়দের আধিক্য অনেক। ক্রিকেটও পিছিয়ে নেই। যে কোন টুর্নামেন্টে দেশের বাইরে ভারতের প্রথম পছন্দ দুবাই। যে কোন ধরনের ক্রিকেটে ভারতের ম্যাচ দেখতে ভারতীয় সমর্থকে ঠাঁসা থাকে গ্যালারী ।

রবিবার যুব এশিয়া কাপের ফাইনালেও তাই হতে চলেছিল। ম্যাচের অর্ধেকটা সময় ভারতীয় টিভি সনি লাইভ বা সনি টেন এইচডি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ভারতীয় দর্শকদের দেখাচ্ছিল। বাংলাদেশ যুব দলের ১৯৮ রানে অলআউট হওয়ায় দর্শকদের উল্লাসে দেশটি ধরেই নিয়েছিল যুব এশিয়া কাপ তাদের।

কিন্তু বিরতির পর সিনেমার গল্প বদলের মতো বদলে যেতে থাকে ফাইনালের ভাগ্য। বাংলাদেশী সমর্থক ও পতাকায় আড়ালে পড়ে যায় ভারতের আধিপত্য। টিভি স্ক্রিনে ভেসে ওঠে বাংলাদেশীদের উল্লাস। দুবাইয়ের গ্যালারী ভারতের নয়, হয়ে ওঠে বাংলাদেশের।

রান তাড়ায় লক্ষ্যের চেয়ে অনেক আগেই ৯ উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত। জয় নিশ্চিত জেনে গ্যালারীতে বাংলাদেশি দর্শকদের গর্জন স্বাভাবিকের চেয়েও অনেক বেশি শোনা গেল। যুব অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম হাত উঁচিয়ে তাদের উচ্ছ্বাস আরও বাড়িয়ে দেন।

অধিনায়কের হাত ধরেই শেষ উইকেট আসে। চেতন শর্মা আজিজুলকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে কালাম সিদ্দিকির হাতে ধরা পড়েন। সেই সঙ্গে ২০২৩ বা ২০২০ যুব বিশ্বকাপের ছবি ফুটে উঠলো। গত বছরেরটি এশিয়া জয়ের আর ২০২০ এরটি ভারতকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জয়ের।

সেই সব আনন্দ চিত্রের মতো আবারও বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা হাতে ছুটলেন ক্রিকেটাররা। পিচে একে অপরকে জড়িয়ে ধরলেন ক্রিকেট শ্রেষ্ঠত্বের আনন্দে। ২০২০ এর মতো এবারও ভারতকে গুড়িয়ে শিরোপা উৎসব এলো। অবশ্য এবার ভারত যুব ক্রিকেটারদের সঙ্গে মাঠের রসায়ন ঠিক ২০২০ এর মতো তেতো ছিলো না।

যুব পর্যায়ে এখন ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সাফল্য পাল্লা ভারি। অনূর্ধ্ব-১৯ দল নিয়ম করেই হারিয়ে আসছে প্রতিবেশিদের। রোববারের জয়ের কৃতিত্ব বোলারদের। যে বোলিং সাফল্য নিকটঅতীতে বাংলাদেশ ক্রিকেটে অনেক সাফল্যের কারণ।

পেস ও স্পিনের মিশেল দুর্দা্ত হয়েছে। আল ফাহাদ, ইকবাল হোসেন ইমনরা যেমন উইকেট নিয়েছেন, রানও আটকেছেন। মারুফ মৃধা, রিজন হোসেনরা উইকেট না পেলেও কিপটে বোলিংয়ে ভারত ব্যাটারদের চাপ বাড়িয়ে দেন। এ আসরে ১৩ উইকেট নিলেন ইমন। যার ৭টি গত দুই ম্যাচে। মাঝের ওভারে কার্যকর মিডিয়াম পেসে বিপক্ষের ব্যাটিং পরিকল্পনা গুড়িয়ে দিতে পেরেছেন দারুণ ভাবে।

ভারতের মিডলঅর্ডারে আন্দ্রে সিদ্ধার্থ ২০, কুমার কার্তিকিয়া ২১, অধিনায়ক মোহাম্মদ আমান ২৬ রান করলেও কোন জুটি গড়তে পারেননি। বড় স্কোরও পাননি কেউ। নিচের দিকে হারদিক ২১ বলে ২৪ করে শুধু হারের ব্যবধান কমান। বাংলাদেশের ইমন ও আজিজুল হাকিম তিনটি করে আর আল ফাহাদ ২টি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট নেন মারুফ মৃধা ও রিজন হোসেন।

গতবার ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ যুব দল। ফাইনালে হেসে খেলে হারিয়ে দেয় স্বাগতিক আরব আমিরাতকে। চলতি আসরের ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হলো বাংলাদেশ দল। এবার ভারতকে হতাশ করে শিরোপা উৎসব।

যুব এশিয়া কাপের মোট ১০ আসরে এতদিন একাধিকবার শিরোপা জয়ের রেকর্ড ছিল শুধু ভারতের। সর্বোচ্চ ৮বার শিরোপা জেতে তারা। বাংলাদেশ তাদের হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার শিরোপা জিতল। এছাড়া পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা একবার করে শিরোপা জিতেছে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

বাংলাদেশ যুব দল : ১৯৮/১০, ৫০ ওভার (জাওয়াদ ২০, আজিজুল ১৬, শিহাব ৪০, রিজন ৪৭, ফরিদ ৩৯, মারুফ ১১; যুধজিৎ ২/২৯, চেতন ২/৪৮, হারদিক ২/৪১)। ভারত যুব দল : ১৩৯/১০, ৩৫.২ ওভার (সিদ্ধার্থ ২০, কার্তিকিয়া ২১, আমান ২৬, হারদিক ২৪; আজিজুল ৩/৮, ইমন ৩/২৪, ফাহাদ ২/৩৪)। ফল : বাংলাদেশ যুব দল ৫৯ রানে জয়ী। ম্যাচ সেরা : ইকবাল হোসেন ইমন। টুর্নামেন্ট সেরা : ইকবাল হোসেন ইমন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত