কঠিন অবস্থা পার করে বেশ ভালো অবস্থানে নিয়ে এসেছেন দলকে। ৯ রানে ২ উইকেট হারানো বাংলাদেশ এখন তিনশো রানের স্বপ্ন দেখছে। ৩০ ওভার শেষে সফরকারীদের সংগ্রহ ৩ উইকেটে রান।
মেহেদি হাসান মিরাজের সঙ্গে ১৩৬ রানের জুটি গড়েছেন সৌম্য। দারুণ জুটি থামে গুদাকেশ মোতির বলে সৌম্য ৭৩ রানে এলবিডব্লিউ হলে। দুই জীবন পাওয়া সৌম্য ৭৩ বলের ইনিংসে ৬টি চার ও ৪টি ছক্কা মেরেছেন।
সৌম্য ফিরলেও দলের রান এগিয়ে নিচ্ছেন মিরাজ। ৭২ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় ৭৬ রানের ইনিংস তার। মিরাজের সঙ্গে অপরাজিত আছেন ২৩ বেল ১৩ রান করা আফিফ হোসেন। এই জুটিতে এসেছে ২৪ রান।
সৌম্য-মিরাজের ফিফটিতে জুটি ও দলের একশ পার
ইনিংসের ২০ ওভার শেষে ভালো ভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। সৌম্য সরকার ও মেহেদি হাসান মিরাজের ব্যাটে ২ উইকেটে ১০৮ রান তুলেছে সফরকারীরা।
মিরাজ ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ফিফটি করে ৫৮ বলে তুলেছেন ৫৮ রান। ৬টি চার ও ২ ছক্কা আছে তার ব্যাটে। এ সিরিজে দ্বিতীয় ফিফটি পেয়েছেন মিরাজ। প্রথম ম্যাচে ১০১ রানে ৭৪ রান করেছিলেন তিনি। এবার রান বলের দুরত্ব বেশ কমিয়েই এগিয়ে চলেছেন।
এদিকে জোড়া জীবন পাওয়া সৌম্যও তুলেছেন ফিফটি। ক্যারিয়ারের ১৩তম ফিফটি করে ৫৯ বলে ৫১ রানে এগিয়ে চলছেন ৩টি করে ছক্কা ও চার হাঁকানো সৌম্য। ০ রানে জীবন পাওয়ার পর ৪৬ রানে দ্বিতীয়বার আউট হওয়া থেকে বেঁচে যান এ ব্যাটার। দুজনের জুটিও একশ ছাড়িয়ে এগিয়ে চলছে।
পাওয়ার প্লে তে সর্বোচ্চ ডটের পরও স্বস্তি
প্রথম তিন ওভারে দুই উইকেট নেই। ভয় ছিল প্রথম পাওয়ার প্লেতেই আরও উইকেট হারানোর। সেই ভয় জয় করেছেন সৌম্য সরকার ও মেহেদি হাসান মিরাজ। দুই ব্যাটারের লড়াইয়ে শুরুর ধাক্কা সামলাতে পেরেছে বাংলাদেশ। তাদের ব্যাটে ১৫ ওভার শেষে রান ২ উইকেট হারিয়ে ৭২।
এক ওভারেই দুই উইকেট হারানোয় রান কিছুটা কম আসবে। সেটা হওয়ারই কথা। আর সেই ধারাবাহিকতায় নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে প্রথম পাওয়ার প্লেতে সর্বোচ্চ ডট বল খেলার রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ।
মিরাজ ও সৌম্য চার-ছক্কায় রান তুললেও বল ডট দিয়েছেন প্রথম ১০ ওভারে ৪০টি। ৬০ বলের মধ্যে বাকি ২০ বলে রান তুলেছেন দুজনে। ১০ ওভার পর আরও কিছু বাউন্ডারীতে জুটি মজবুত করেছেন। ৭৬ বলে ৬৩ রানে অবিচ্ছিন্ন আছেন দুই ব্যাটার।
এই জুটির সাহস জুগিয়েছেন মিরাজ। দুই উইকেট পড়ার পর ক্রিজে গিয়েই দ্রুত কিছু বাউন্ডারীতে চাপ কমান বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৪২ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৩৯ রান তার। ওদিকে এক জীবন পাওয়া সৌম্য এই সিরিজে তার সর্বোচ্চ রান পেয়েছেন। ৪৩ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩০ রান তার।
লিটন-তামিমের ফেরায় শরুতেই বিপর্যয়
মাত্র তিন ওভার হয়েছে ইনিংসের। তাতেই দুই ব্যাটার সাজঘরে। ফিরতে পারতেন আরেকজনও। তিন ওভারের মধ্যে তিন উইকেট হারানোর ভয় ছিল। একটি ক্যাচ মিস হওয়ায় তিন ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ৯।
দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ের চূড়ান্ত উদাহরণ দিয়ে ফিরেছেন লিটন দাস। এই সিরিজে তৃতীয় ম্যাচে দু অঙ্কের ঘরে রান তুলতে ব্যর্থ হলেন। এবার টিকলেন মাত্র ২ বল। আলজারি জোসেফের অফস্ট্যাম্পের বাইরের বলে অযথাই ব্যাট চালিয়ে প্রথম স্লিপে ধরা পড়েন লিটন।
আগের দুই ম্যাচে দুটো ভালো ইনিংস খেলা তানজিদ হাসান তামিম এবার ব্যর্থ। আলজারির অফস্ট্যাম্পের বাইরের বলে লেগ সাইডে টেনে পুল করতে গিয়ে ফিরেছেন আকাশে বল তুলে দিয়ে। ৫ বলে ০ রান তার।
এর আগে প্রথম ওভারেই প্রথম স্লিপে ক্যাচ দিয়েছিলেন সৌম্য সরকার। ব্র্যান্ডর কিং ক্যাচ মিস করায় এখনও ১০ বলে ৮ রান করে ক্রিজে আছেন সৌম্য।
তিন পরিবর্তন নিয়ে তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ
উইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ। তিন পেসারের পথ থেকে সরে এসেছে একাদশে রাখা হয়েছে দুই পেসার। এছাড়া স্পিন বিভাগও শক্তিশালি করা হয়েছে।
সিরিজে টানা তৃতীয় ম্যাচে আগে ব্যাট করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। গত ম্যাচের মতো এবারও টস জিতে সফরকারীদের ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় উইন্ডিজ।
১০ বছরে প্রথমবার উইন্ডিজের কাছে ওয়ানডে সিরিজ হারের পর নিয়মরক্ষার লড়াইয়ের একাদশে তিন পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ। অবশ্য এই পরিবর্তনের সবগুলোই এসেছে বোলিং বিভাগে।
বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে তানজিম হাসান সাকিব, নাহিদ রানা ও শরিফুল ইসলামকে। তিন পেসারের পরিবর্তে একাদশে ফিরেছেন তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ ও স্পিনার নাসুম আহমেদ।
উইন্ডিজের একাদশেও এসেছে পরিবর্তন। গত ম্যাচে চার উইকেট নেওয়া জেডন সিলস ইনজুরির কারণে এই ম্যাচে খেলতে পারছেন না। তার জায়গায় দলে ফিরেছেন আলজারি জোসেফ। এছাড়া অভিষেক হচ্ছে জেডিয়াহ ব্লেডস ও আমির জাঙ্গুর।
বাংলাদেশ : তানজিদ তামিম, সৌম্য সরকার, লিটন দাস, আফিফ হোসেন, মাহমুদউল্লাহ, মেহেদি হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), জাকের আলি, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ।
উইন্ডিজ : ব্র্যান্ডন কিং, আলিক আথানেজ, কেসি কার্টি, শেই হোপ (অধিনায়ক), রোস্টন চেজ, শারফেন রাদারফোর্ড, আমির জাঙ্গু, রোমারিও শেফার্ড, গুদাকেশ মোতি, জেডিয়াহ ব্লেডস, আলজারি জোসেফ।