“আমাদের কিছু ভুল হয়েছে” “আমরা গত ম্যাচের ভুল থেকে শিক্ষা নেব” “আমরা এখনও শিখছি” ; বাংলাদেশ জাতীয় দল ক্রিকেটারদের এই কিছু বাক্য একদম মুখস্থ। কারণ ব্যর্থতা শেষে এই লাইনগুলো নিয়মিত বলতে হয় তাদের।
এই রীতিতে এবার যতি টানলেন জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। লিটন-আফিফ-সৌম্য-মিরাজ বা একদম নতুন ইমন-রিশাদ-তামিমদের এই অনভিজ্ঞতার দোহাই দিতে বারণ করে দিয়েছেন। জাতীয় দলে খেলা মানেই পারফরম করা, এই শক্ত বার্তা সবাইকে দিয়েছেন সালাউদ্দিন।
উইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ভালো ব্যাটিং করেও হেরেছে বাংলাদেশ। ক্যারিবিয়ানদের পাওয়ার হিটিংয়ের কাছে হারতে হয়েছে মূলত। সবশেষ ম্যাচে মিডলঅর্ডারে খেলা লিটন ৭ বলে ২ রান করেছেন, সৌম্য সরকার ১৮ বলে করেছেন ১৯। বছরখানেক পর দলে ফেরা আফিফ হোসেন ভালো শুরু পেয়েও ২৯ বলে ২৮ রান করে আউট হয়েছেন।
তিন ক্রিকেটারই জনপ্রতি জাতীয় দলে প্রায় ১০ বছর পার করেছেন। তবুও ধারাবাহিক পারফরম্যান্স নেই কারও ব্যাটে। আফিফ তো দল থেকে ছিটকেই পড়েছিলেন। মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্তর ইনজুরি তাকে সুযোগ করে দিয়েছে।
সাকিব, তামিম ও মুশফিকরা আর এক বছরের মধ্যে পাকাপাকি ভাবে অবসর নিতে পারেন। তাদের অনুপস্থিতিতে এতদিন খেলা যাওয়া লিটন-সৌম্যরা এখনও ভরসার নাম হতে পারেননি। এই ক্রিকেটারদের কড়া বার্তা দিয়ে সালাউদ্দিন বলেছেন, “যখন আপনি জাতীয় দলে চলে আসবেন তখন আর অনভিজ্ঞতার কথা বলিয়েন না কখনও। এটা আমার অনুরোধ। কারণ জাতীয় দলে চলে আসা মানেই আপনি দেশের সেরা ১১ জনের একজন। আপনাকে এখানে আমি অনভিজ্ঞতার দোহাই দিয়ে বাঁচাবো না। সে এক ম্যাচ খেলুক বা দুই ম্যাচ, জাতীয় দলে তাকে ডিলেভার করতেই হবে।”
উইন্ডিজ সিরিজের বাকি অংশে লিটন-সৌম্যদের কাছ থেকে পারফরম্যান্স চাইছেন সালাউদ্দিন। এক ম্যাচ হারলেও স্ট্যান্ডবাই অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ সিরিজ জয়ের আশ্বাস দিয়েছেন। তার জন্য মঙ্গলবারের ম্যাচ জিততেই হবে বাংলাদেশকে।
গত সিরিজের অপূর্ণতা এই ম্যাচে কাটিয়ে জয়ে চোখ রাখছেন সালাউদ্দিন, “আমি খুশি যে গত ম্যাচে পরিকল্পনা মতো ব্যাটিং হয়েছে। তবে আমরা শেষেরদিকে দুটো ওভারে ২-৩ রানের মতো করেছি। ওই জায়গায ২০ রানের মতো আসলে ওদেরকে আরও চাপ দেওয়া যেত।”
ব্যাটারদের ইনিংস বড় করার তাগিদ দিয়ে সালাউদ্দিন বললেন, ‘আরেকটা জিনিস, যারা হয়তো ৬০ রান করেছে, ৪০ রান করেছে, সেটা যদি লম্বা হতো, তাহলে শেষের দিকে ব্যাটাররা ভালোমতো ফিনিশিং করতে পারত। এই জায়গায় যদি উন্নতি করতে পারি, তাহলে দলের জন্য হয়তো ভালো হবে।’’
এ সিরিজের আগে টেস্ট ম্যাচ জেতায় আত্মবিশ্বাসে ভরপুর বাংলাদেশ দল। ওয়ানডেতে ভালো খেলে বলে একটু এগিয়ে থেকে সিরিজে পা রাখেন মিরাজরা। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে গত সিরিজে ইংল্যান্ডকে ২-১ এ হারানোর সুফল দেখিয়েছে ক্যারিবিয়ানরা।
শিষ্যদের তাই আরও ভালো পরিকল্পনায় দ্বিতীয় ম্যাচে নামাতে চান সালাউদ্দিন, “উইন্ডিজ কিন্তু খারাপ দল না। সবাই ভাবছে আমরা এই ফরম্যাটে ভালো খেলি বলে ভালো করবো। কিন্তু উইন্ডিজ ক্রিকেটাররা দেখিয়েছে ওরাও ভালো। ওদের হারাতে হলে আমাদের আরও ভালো পরিকল্পনা নিয়ে নামতে হবে।”
সেই পরিকল্পনায় হয়তো একাদশে কোন পরিবর্তন আসছে না। গত ম্যাচের ক্রিকেটারদের নিয়েই সেন্ট কিটসের ব্যাটিং উইকেটে আরও একবার রান ও পাওয়ার হিটিংয়ের লড়াই হবে দুই দলের।