অখ্যাত পাপন সিং-ই হয়ে গেলেন ম্যাচের কিং। ম্যাচ শেষ হওয়ার কয়েক মিনিট আগে এই মিডফিল্ডারের চমৎকার এক গোলে মালদ্বীপকে ২-১ গোলে হারিয়ে বাংলাদেশ দেশের মাঠে খেলার সম্মানটুকু অটুট রেখেছে।
ফিফা ফ্রেন্ডিলি’র দুই ম্যাচের সিরিজে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় প্রথম ম্যাচ বাংলাদেশ ১-০ গোলে হারে মালদ্বীপের কাছে। অনেক সুযোগ পেয়েও তারা বল জড়াতে পারেনি মালদ্বীপের জালে। শনিবার (১৬ নভেম্বর) দ্বিতীয় ম্যাচেও শুরুতে পিছিয়ে পড়ে শুরু করে ম্যাচে ফেরার লড়াই। মুজিবর রহমান জনির গোলে ম্যাচে ফেরার পর ম্যাচ ইনজুরি টাইমে পাপন সিংয়ের গোলে স্বস্তির জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। শেষ বাঁশি বাজার মিনিট তিনেক আগে গোলের আনন্দে মাতে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা।
আগের ম্যাচের দুর্ভাগ্য যেন এ ম্যাচেও তাড়া করছিল। বাংলাদেশের রক্ষণভাগের ভুলে ২৩ মিনিটে গোল হজম করে। দুই ডিফেন্ডার ছিলেন মালদ্বীপের আলি ফাসিরের সঙ্গে। এরপরও তারা ঠেকাতে পারেননি ফাসিরের আলতো টোকা।
গোল খেয়ে আবারও স্বাগতিকদের মান বাঁচানোর লড়াই শুরু হয়। আগের ম্যাচে অনেক আক্রমণ ও সুযোগ বৃথা যাওয়ার পর এই ম্যাচে ভাগ্য তাদের সহায় হয়ে আসে ৪৪ মিনিটে। সেরকম কোনও সুযোগও নয়, বক্সের বাইরে থেকে দুই ডিফেন্ডারের প্রহরার মধ্যে মুজিবর রহমান জনি ডান পায়ে দুর্দান্ত এক শট নেন। যেন রোনালদো ভর করেছিল তার ওপর। মালদ্বীপের গোলরক্ষককে চমকে দিয়ে নিখুঁত নিশানায় বল পাঠিয়ে তিনি গোল উদযাপন করেছেন রোনালদোর মতো। নিঃসন্দেহে ম্যাচের সেরা গোল এটি।
এই গোল স্বাগতিকদের জাগিয়ে তোলে জয়সূচক গোলের জন্য। ম্যাচ শেষে জনি যেমন বলেছেন, “নিজেদের মাঠে খেলছি। অন্তত একটি ম্যাচ জিততে পারব না, এটা হয় না। সবাই খুব উজ্জীবিত হয়ে খেলে ম্যাচ বের করার জন্য।”
উজ্জীবনের পর যথারীতি গোল মিসের মহড়াও শুরু হয়ে যায়। সুযোগ আসে কিন্তু ম্যাচ জেতার গোল আর হয় না। বদলি ফরোয়ার্ড পিয়াস আহমেদ নোভা পোস্টের সামনে থেকেও গোলকানা হয়ে গেলেন! মাঝমাঠ থেকে নেওয়া শটটি মালদ্বীপের গোলরক্ষকের গ্রিপ থেকে বেরিয়ে গেলেও নোভা পোস্টের সামনে থেকে মারেন বাইরে।
অবশেষে সেই গোল মেলে ম্যাচের যোগ করা সময়ে। যখন সবাই আশা ছেড়ে দিয়েছিল তখনই পাপন সিংয়ের পায়ে চাপ মুক্ত হয় স্বাগিতকরা। ৯৪ মিনিটে গিয়ে বদলি শাহরিয়ার ইমনের ক্রসটি তিনি ডান পায়ে মালদ্বীপের জালে পৌঁছে দিয়ে কিংস অ্যারেনায় উৎসবের আবহ তৈরি করেন। একদিকে স্বাগতিক দর্শকদের বাধভাঙা আনন্দ, অন্যদিকে সব স্নায়ুচাপ ঝেরে কোচ হাভিয়ের কাবরেরা ফেলেন স্বস্তির নিঃশ্বাস।
এই স্বস্তি স্টেডিয়ামের ভিআইপিতেও। আগের ম্যাচে হারের বিস্বাদ নিয়ে যাওয়া নতুন সভাপতি তাবিথ আউয়ালের চোখেমুখেও ম্যাচ জেতার প্রশান্তি।