নাজমুল হাসান পাপনের সময়ে এমনটা বরাবরই হতো। মাঠের বাইরের বিষয় নিয়ে বেশি আলোচনায় থাকতো ক্রিকেট। ফারুক আহমেদ বিসিবির সভাপতি পদে বসার পর থেকে ক্রিকেট ও ক্রিকেটার নিয়ে এতদিন সরব ছিল বিসিবি। কিন্তু গত কিছু দিনে অতীত ফিরে এসেছে।
এই প্রথমবার বিপিএল একটু গোছানো হচ্ছে। টিকিটের বিশৃঙ্খলা বাদ দিলে মাঠে রান হচ্ছে, বড় স্কোর তাড়া করে দল জিতছে। স্থানীয় ব্যাটাররা ভালো করছে, সেঞ্চুরিও এসেছে। মাঠের ক্রিকেট নিয়েই আলোচনা হওয়ার কথা। কিন্তু এক সপ্তাহে পাল্টে গেছে চিত্র।
শুরুতে টিকিট বিশৃঙ্খলা নিয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টার সহকারী মাহফুজ আলম বিসিবি প্রধানের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। কয়েকদিনের ব্যবধানে দুই নতুন বিসিবিতে সভাপতি বনাম এক পরিচালকের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে।
বোর্ড পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিমকে মেজাজ দেখিয়ে কিছু একটা বলেছিলেন বিসিবি প্রধান ফারুক আহমেদ। ফাহিম এই ব্যাপারটি সামনে নিয়ে এসে একটি টেলিভিশনকে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারার ক্ষোভ। পাশাপাশি বিসিবি প্রধানের মন্তব্যে মনক্ষুন্ন হওয়ার কথাও বলেছেন।
এই ইস্যুতে সিলেটে বিপিএল দেখতে গিয়ে ফারুক আহমেদ বলেছেন, “যেহেতু আমরা দুজনই নতুন পরিচালক, বেশিরভাগ কাজ দুজনই করার চেষ্টা করেছি। কিছু সিদ্ধান্ত আছে খুব জরুরি ভিত্তিতে নিতে হয়। সেক্ষেত্রে হয়তো কিছু যোগাযোগের ঘাটতি ছিল। যার কথা বলছেন (ফাহিম), তার সঙ্গে আলাপ হয়েছে। আমার মনে হয় সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।”
গত ২১ আগস্ট নাজমুল হাসান পাপনের পদত্যাগের পর ফারুক নতুন প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। তার মতো একই দিনে এনএসসি মনোনীত বিসিবি পরিচালক হয়েছিলেন ফাহিমও। সেই থেকে দুজনে একসঙ্গে থাকলেও যোগাযোগের ঘাটতিটা কোথায় সেটা স্পষ্ট করেননি সভাপতি।
তবে ফারুক আহমেদ নিজের স্বভাবের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, “সব মানুষ তো একরকম না, আমি কথা বলি পরিষ্কার ও সোজাসুজি। আপনার মনের মতো না হলেও আমি ওটা বলবো। আবার অনেকে থাকে অন্তর্মুখী স্বভাবের, মনের মধ্যে রেখে দেয়। তখন জিনিসটা বড় হয়। কোন পরিচালকের মনে যদি কিছু থাকে তো সে আমার কাছে আসুক। তার পরে যদি আমি সলভ করতে না পারি, তখন দেখা যাবে।”
ফারুক জোর দিয়েই বলেছেন বিসিবিতে পরিচালকদের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব নেই। একটি সংগঠনে বা দলে ভুল বোঝাবুঝির মতো কিছু হতেই পারে।
সেই ভুল বোঝাবুঝিটা কেমন ছিল তা প্রকাশ করেছেন ফাহিম। টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে এই পরিচালক বলেছেন, “ফারুক ভাই একটা মন্তব্য করেছেন। আমি স্পষ্ট বলতে চাই না, সেটা কি ছিল। ওটা আমাকে খুবই হতাশ করেছে। তাতে স্পষ্ট যে এই মুহুর্তে বিসিবি প্রধান আমার ওপর আত্মবিশ্বাস রাখছেন না।”
ফাহিম অভিযোগ করেছেন বোর্ডে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না, “আমি যদি বোর্ডে থাকি, তাহলে আমাকে কাজ করতে হবে। কি হতে পারে, কি হওয়া উচিত ছিল এগুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারি। এসব করতে না পারলে আমার বোর্ডে থাকাটা জরুরি নয়। স্বাধীনভাবে কাজ করা, নিজের মত-চিন্তাভাবনা মেলে ধরার সুযোগ থাকাটা দরকার।”