Beta
মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২৫

যাওয়ার আগে ইসরায়েলে ৮ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বেচার পরিকল্পনায় বাইডেন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
[publishpress_authors_box]

গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি ধ্বংসযজ্ঞ চলার মাঝেই দেশটির কাছে নতুন করে ৮ বিলিয়ন (৮০০ কোটি) ডলারের অস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে দেশটির কংগ্রেসকে এই পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার বরাতে জানিয়েছে বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৮০০ কোটি ডলারের এই অস্ত্রের চালানে বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র, কামানের গোলাসহ অন্যান্য গোলাবারুদ থাকবে। তবে প্রতিনিধি পরিষদ ও সেনেটের অনুমোদন সাপেক্ষেই যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ইরায়েলের কাছে এসব অস্ত্র বিক্রি করতে পারবে।

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি ব্যাপক আগ্রাসনে বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি বাড়তে থাকলেও ইসরায়েলের প্রতি সামরিক সমর্থন স্থগিত করার আহ্বান বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে আসছে ওয়াশিংটন। এরই মধ্যে আগামী ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিদায় নিতে যাচ্ছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এর মাত্র দুই সপ্তাহ আগে তার প্রশাসন ইসরায়েলের কাছে অস্ত্রের বড় চালান বিক্রির পরিকল্পনা জানাল।

এর আগে গত বছরের আগস্টে ইসরায়েলের কাছে ২০ বিলিয়ন (২ হাজার কোটি) ডলারের যুদ্ধবিমান ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি সংক্রান্ত বাইডেন প্রশাসনের পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস।

ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির সর্বশেষ পরিকল্পনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বিবিসিকে জানায়, “প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট করেছেন যে আন্তর্জাতিক আইন এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে নিজের নাগরিকদের রক্ষার এবং ইরান ও তার প্রক্সি সংগঠনগুলোর আগ্রাসন প্রতিরোধের অধিকার ইসরায়েলের রয়েছে। আমরা ইসরায়েলের প্রতিরক্ষার জন্য তাদের সক্ষমতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় সহায়তা অব্যাহত রাখব।”

বাইডেন প্রায়ই ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনকে ‘ইস্পাত-দৃঢ়’ বলে অভিহিত করেন। ইসরায়েলের ব্যবহৃত অস্ত্রের সবচেয়ে বড় যোগানদাতা দেশ যুক্তরাষ্ট্র। নিজেদের অত্যাধুনিক সব অস্ত্র দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে প্রযুক্তিগতভাবে বিশ্বের অন্যতম উন্নত সামরিক বাহিনী গড়ে তুলতে সহায়তা করেছে।

স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসআইপিআরআই) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ইসরায়েল প্রচলিত যত অস্ত্র আমদানি করেছে, তার ৬৯ শতাংশই এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।

২০২৪ সালের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র ২ হাজার পাউন্ড ও ৫০০ পাউন্ড ওজনের বোমার একটি চালান ইসরায়েলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত সাময়িকভাবে স্থগিত করার কথা জানিয়েছিল। এর কারণ হিসেবে তখন দক্ষিণ গাজার রাফা শহরে ইসরায়েলের সম্ভাব্য একটি বড় সামরিক অভিযান নিয়ে উদ্বেগের কথা বলেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

তবে সেই সিদ্ধান্ত জানানোর পরপরই রিপাবলিকান পার্টির তোপের মুখে পড়েছিলেন বাইডেন। পাশাপাশি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু তখন একে এক ধরনের ‘অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। পরে বাইডেন এই স্থগিতাদেশ আংশিকভাবে প্রত্যাহার করেন, যা পরবর্তী সময়ে আর আরোপ করা হয়নি।

আগামী ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে যাওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেকে ইসরায়েলের একজন দৃঢ় সমর্থক হিসেবে পরিচয় দিলেও ঘনিষ্ঠ এই মিত্র শক্তিকে দ্রুত গাজায় সামরিক অভিযান শেষ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

গাজার সশস্ত্র সংগঠন হামাস ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে প্রায় ১২শ’ জনকে হত্যা এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়ার পর ওইদিনই গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তার পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি নৃশংসতায় ৪৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণ গেছে বলে জানাচ্ছে হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত