সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ভুঁইয়া মিল্টন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে বিচারিক আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবী মো. মাসুদুর রহমানের মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে আপিলের শর্তে জামিন আবেদন করেন তিনি।
শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুল হকের আদালত বিএনপির এই নেতার জামিন আবেদন মঞ্জুর করে।
জামিন পেয়ে মিজানুর রহমান ভুঁইয়া বলেন, “শেখ হাসিনা ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়ে ৯ বছর নির্বাসনে রেখেছিল আমাকে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে তার সরকারের পতনের পর নতুন বাংলাদেশে ফিরে এসেছি।”
বিগত শেখ হাসিনা সরকার তার পরিবারের ওপর নির্যাতন চালায় অভিযোগ করে তিনি বলেন, “নিজেদের দুর্নীতি ঢাকতে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট মামলা দিয়েছে তারা। আদালতকে ব্যবহার করে আমাদের সাজা দিয়েছে। এখন আদালত নিজস্ব গতিতে চলবে। ক্যাঙ্গারু কোর্ট আর থাকবে না। আদালতে এসে ন্যায়বিচার পেয়েছি।”
২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগের মামলার রায় ঘোষণা করেন ঢাকার তৎকালীন অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূর।
রায়ে সাংবাদিক শফিক রেহমান, মাহমুদুর রহমানসহ পাঁচ জনকে আইনের দুটি ধারায় সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সাজাপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন- জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সহসভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন, তার ছেলে রিজভী আহাম্মেদ ওরফে সিজার ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ভূঁইয়া।
রায়ে আসামিদের দণ্ডবিধির ৩৬৫ ধারায় (অপহরণের অভিযোগ) পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয় আদালত। অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাদের আরও এক মাসের কারাভোগের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এছাড়া একই আইনে ১২০-খ ধারায় (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) দুই বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেয় আদালত। এই দুই ধারার সাজা একই সঙ্গে চলবে বলে রায়ে উল্লেখ করেছিলেন বিচারক।
ওই মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে যেকোনো সময় থেকে এ পর্যন্ত জাসাসের সহসভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনসহ বিএনপি ও দলটির নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত অন্যান্য দলের উচ্চ পর্যায়ের নেতারা ঢাকার পল্টনে জাসাস কার্যালয়, নিউ ইয়র্ক, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় একত্রিত হয়ে সজীব ওয়াজেদ জয়কে যুক্তরাষ্ট্রে অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন।
এ অভিযোগে ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানায় মামলা করেন।
২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি শফিক রেহমানসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১২ জন এ মামলায় সাক্ষ্য দেন।
এরই মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমান মামলাটিতে আপিলের শর্তে জামিন পেয়েছেন।