পুষ্টির এক বিশাল ভাণ্ডার ডিম। যা প্রোটিন এবং প্রয়োজনীয় ভিটামিনে পরিপূর্ণ। তবে অনেকেই ডিম সেদ্ধ করে খাবেন, না কি অমলেট বানিয়ে খাবেন, এ নিয়ে দ্বিধায় থাকেন। কারণ কারও কারও ধারণা সেদ্ধ ডিমই হয়তো বেশি স্বাস্থ্যকর, কারও আবার ঠিক উল্টো মত।।
তবে যাই হোক না কেন, সকালের নাস্তায় দুটোই বেশ জনপ্রিয়।
সেদ্ধ ডিমের পুষ্টিগুণ
অনেকে ডিম সেদ্ধ করে খাওয়াকেই স্বাস্থ্যকর বলে মনে করেন। কারণ ডিম সেদ্ধ করতে অতিরিক্ত কোন উপাদান লাগেনা। এছাড়া ডিমের বেশিরভাগ পুষ্টিগুণ বজায় থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি দপ্তর (USDA) এর মতে, একটি পূর্ণ সেদ্ধ ডিমে প্রায় ৬ গ্রাম উচ্চমানের প্রোটিন থাকে, যা পেশী গঠন এবং মেরামতের জন্য একটি দারুণ বিকল্প। এর পাশাপাশি, সেদ্ধ ডিমে ভিটামিন বি ১২, এ এবং ডি পাওয়া যায়। পাশাপাশি কিছু খনিজ যেমন আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং জিঙ্কও পাওয়া যায়।
অমলেটের পুষ্টিগুণ
ডিমের অমলেট পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। ডিমের অমলেট এতো বৈচিত্রপূর্ণ উপায়ে প্রস্তুত করা যায় যে, দিনের পর দিন অমলেট খেতে অনেকেরই ক্লান্তি নেই। শাকসবজি, পনির এবং এমনকি মাংস দিয়েও হতে পারে ডিমের অমলেট। যা কিনা ডিমের পুষ্টি মানকে এবশ খানিকটা বাড়িয়ে দেয়। যেমন, অমলেটে শাকসবজি দেওয়া হলে, তাতে বেড়ে যায় আঁশের পরিমাণ। পাশাপাশি বৃদ্ধি পায় ভিটামিন ও খনিজ।
তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ডিমের অমলেট প্রস্তুত করতে গিয়ে অতিরিক্ত পনির বা তেল যোগ করলে ক্যালোরি এবং অস্বাস্থ্যকর চর্বি, দুই-ই বাড়তে পারে।
ডিমে থাকা কোলিন মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা, স্মৃতি এবং বুদ্ধির বিকাশে সহায়ক।
ক্যালোরি পার্থক্য
একটি সেদ্ধ ডিমে প্রায় ৭৮ ক্যালোরি থাকে এবং চর্বির পরিমাণ থাকে প্রায় শূন্য। অন্যদিকে, অমলেটে ক্যালোরির পরিমাণ নির্ভর করে তাতে ব্যবহৃত উপকরণের ওপর। অমলেট প্রস্তুতে যদি শাকসবজি যুক্ত করা হয়, তবে ক্যালোরির খুব একটা হ্রাস বৃদ্ধি ঘটেনা। তবে, পনির বা তেল এবং অতিরিক্ত সস ব্যবহার করলে ক্যালোরির পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেতে পারে। সুতরাং, কেউ ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে, তার সেদ্ধ ডিমই প্রাধান্য দেওয়া উচিত।
কোলেস্টেরল
সেদ্ধ ডিম এবং অমলেট, দুটোতেই আছে কোলেস্টেরল। একটি সেদ্ধ ডিমে প্রায় ১৮৬ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে। অন্যদিকে অমলেট করা ডিমের সাদা অংশ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। সেইসাথে প্রোটিনের কোন ক্ষতিও করে না।
কোনটি বেশি স্বাস্থ্যকর?
সেদ্ধ ডিম পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ, অতিরিক্ত উপাদান যোগ করতে হয়না বলে এতে ক্যালোরি পরিমিত। ফলে অস্বাস্থ্যকর চর্বি যুক্ত হবারও সুযোগ নেই। সেদ্ধ ডিম প্রোটিন সমৃদ্ধ এবং প্রস্তুত করতেও কম প্রস্তুতি লাগে। অন্যদিকে, অমলেটে শাকসবজি যুক্ত করে এর পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি করা যায়। তবে অতিরিক্ত পনির কিংবা তেল ক্যালোরির মাত্রা বাড়িয়ে তো দিতেই পারে, তেমনি ক্ষতিকর চর্বিও যুক্ত হতে পারে।