Beta
শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

দারুণ শুরু পেয়েও দুইশো হলো না চিটাগংয়ের

দুই ওপেনার মিলে চিটাগংকে ১২১ রানের উদ্বোধনী জুটি এনে দেন। ছবি : বিসিবি
দুই ওপেনার মিলে চিটাগংকে ১২১ রানের উদ্বোধনী জুটি এনে দেন। ছবি : বিসিবি
[publishpress_authors_box]

শুরুটা অবিশ্বাস্য ছিল চিটাগং কিংসের জন্য। দুই ওপেনারের ব্যাটে চড়ে বিশাল স্কোরের ইঙ্গিত দেয় তারা। ইনিংস শেষে তা আর বাস্তবে রূপ পায়নি। ১২১ রানের উদ্বোধনী জুটি পেয়েও ফাইনালে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে বোর্ডে দুইশো তুলতে পারেনি চিটাগং। নির্ধারিত ওভার শেষে ৩ উইকেটে ১৯৪ রান তাদের।

শুরু থেকে বিপরীত স্রোতে সাঁতরে গেল চিটাগং। দুই ওপেনার পুরো স্টেডিয়ামকে স্তব্ধ করে একের পর এক বাউন্ডারী হাঁকিয়ে গেলেন। খাজা নাফে ও পারভেজ হোসেন ইমনকে এই রূপে দেখার প্রত্যাশা করেনি কেউ। নাফে শেষ পর্যন্ত থেমেছেন ৬৬ রানে। আর ইমন অপরাজিত ছিলেন ৭৮ রানে। অনেকেই ভেবেছিলেন বরিশালের আগে বোলিং নেওয়া মানে চট্টগ্রামের দ্রুত গুটিয়ে যাওয়া।

স্টেডিয়ামের আবহও তেমনই ছিল। লাল জার্সির আধিক্যে আকাশীদের খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না। গ্যালারী ভর্তি লাল জার্সিধারীদের উল্লাস থামিয়ে অন্য লড়াই উপহার দেন চিটাগংয়ের দুই ওপেনার।

দুজনের ব্যাটে চড়ে ১০ ওভারে বিনা উইকেটে ৯৩ রান করে তারা। শুরুর ৫ ওভারেই এসেছিল ৫১ রান। দশম ওভারের পর খাজা নাফে আরও বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন। তার নো লুক শটের ছক্কাগুলো দারুণ উপভোগ করছিলেন দর্শকরা। ক্যামেরাম্যানদের জন্যও অসাধারণ ছবির মুহূর্ত এনে দেন পাকিস্তানী নাফে।

১৩তম ওভারে প্রথম উইকেট হারায় চিটাগং। এবাদতের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৪৪ বলে ৬৬ রান করা নাফে। ৭ চার ও ৩ ছক্কার ইনিংসটি ছিল দারুণ। তবে অপরপ্রান্তে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ইমন। তানভীর ইসলামের এক ওভারে মেরেছেন তিন ছক্কা। এক ওভারেই চলে আসে ২২ রান, ইনিংসের সর্বোচ্চ।

১৬তম ওভার পর্যন্ত ওভারপ্রতি ১০ রান করে নেওয়ার গতিটা পরের ওভারে ধরে রাখতে পারেনি চিটাগং। ১৭তম ওভারে মোহাম্মদ আলি মাত্র ৪ রান দেন। এতে চিটাগংয়ের দুইশো ছোঁয়ার গতিটা ছন্দ হারায়। ওদিকে ৪১ বলে ৭২ রান করা ইমন পরের ৮ বলে তুলেছেন মাত্র ৬ রান। ব্যাট থেকে বড় শট না আসায় চিটাগংয়ের রানও বড় হতে পারেনি।

ইমনের সঙ্গে দারুণ জুটি গড়ে ৭ ওভারে ৭০ রান তুলেছেন গ্রাহাম ক্লার্ক। পায়ে চোট পেয়ে ঠিকঠাক দৌড়াতে পারছিলেন না এই ব্যাটার। ব্যাটিং করতেও সমস্যা হচ্ছিল তার। শেষ পর্যন্ত রান আউট হয়ে থামেন মাত্র ২৩ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৪৪ রান করা ক্লার্ক। ইমন ৪৯ বলে ৭৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।

টস জিতে চিটাগংকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ বরিশালের

বিপিএল ফাইনালে কোন সুযোগ নিতে চাননি তামিম ইকবাল। তাই মিরপুরের উইকেটে টস জিতে আগে বোলিং নিতে দ্বিধা করেননি তিনি। যদিও এবার মিরপুরে রান হয়েছে। তবে রাতের শিশিরের কথা মাথায় রেখে আগে বোলিং নেওয়ার বিকল্প ছিল না।

বরিশাল তাদের টানা দ্বিতীয় শিরোপার খোঁজে আছে। চিটাগং কিংস অপেক্ষায় প্রথম শিরোপার। তবে ২০১৩ সালের পর এই প্রথম ফাইনালের আমেজ গায়ে মাখা দলটি সেই চাপ সামলাতে পারবে কিনা সেই প্রশ্ন উঠছে।

ফাইনালে বড় ধাক্কা চিটাগং কিংসের জন্য। খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো আলিস আল ইসলাম নেই এই ম্যাচে। তার পরিবর্তে একাদশে ঢুকেছেন নাঈম ইসলাম। আগের ম্যাচে পায়ে চোট পাওয়ায় ছিটকে পড়তে হয়েছে আলিসকে।

নতুন ক্রিকেটারকে নামিয়ে ঝুঁকি নিতে চায়নি ফরচুন বরিশাল। তাই দলে জিমি নিশাম যোগ দিলেও এই কিউইকে খেলায়নি তামিম ইকবালরা। তার পরিবর্তে এতদিন খেলে আসা মোহাম্মদ নবি ও গত ম্যাচে ৫ উইকেট নেওয়া মোহাম্মদ আলির ওপরই ভরসা রাখছে বরিশাল। তাই অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে নামছে দলটি।

তারকার দিক থেকেও বরিশালের চেয়ে পিছিয়ে চিটাগং। গড়পড়তা দল নিয়েও পারফরম্যান্সের জোড়ে ফাইনালে উঠেছে তারা। হেভিওয়েট বরিশালকে থামাতে দলগত পারফরম্যান্সই ভরসা দলটির।

দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে দলীয় পারফরম্যান্সের জোড়ে অবিশ্বাস্য ম্যাচ জিতেছে চিটাগং। সেই আত্মবিশ্বাস এই ফাইনালে কাজে লাগানোর লক্ষ্য চিটাগংয়ের। এদিকে বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবাল আগেই জানিয়েছেন ফাইনালকে শুধু একটি ম্যাচ হিসেবেই দেখবেন।

শিরোপা নির্ধারনীতে এমনিতেই চাপমুক্ত থাকেন তামিম। পুরোনো অভ্যাস আজও টেনে আনতে চান বরিশাল অধিনায়ক। চাপমুক্ত থাকেন বলেই কঠিন ম্যাচগুলোতে ভালো করার ইতিহাস তার।

তবে মাঠের লড়াইটা অবশ্যই ভিন্ন। ম্যাচ ডেতে যারা ভালো খেলবে তারাই জিতবে। ক্রিকেটের সেই পুরোনো অতীত মাথায় রেখে আত্মবিশ্বাসী চিটাগং ও ফেভারিট বরিশাল মুখোমুখি হচ্ছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত