Beta
রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪
Beta
রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪

তিন মাসে খেলাপি বেড়েছে ৩৭ হাজার কোটি টাকা

ব‍্যাংক মালিক-ব‍্যবস্থাপক
মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংক ভবন।
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

জাতীয় বাজেট প্রস্তাবের ডামাডোলের মধ্যেই ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার তথ্য দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

চলতি বছরের মার্চ শেষে দেশের ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণের স্থিতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। এটাই ব্যাংক খাতের সর্বোচ্চ খেলাপি ঋণ।

বিতরণ করা ঋণের দিক দিয়ে খেলাপি ঋণের হারও আগের চেয়ে বেড়ে ১১ দশমিক ১১ শতাংশ হয়েছে। গত মার্চ পর্যন্ত ব্যাংক খাতের বিতরণ করা মোট ঋণের পরিমাণ ১৬ লাখ ৪০ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা।

এর তিন মাস আগে (২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে) খেলাপি ঋণের হার ছিল ৯ শতাংশ। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। এ হিসাবে গত মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩৬ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা।

বৃহস্পতিবার এসব তথ্য সাংবাদিকদের জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এদিন জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের টানা চতুর্থ মেয়াদে গঠিত সরকারের প্রথম বাজেট উপস্থাপন করেন নতুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব তুলে ধরেন, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট।

খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির কারণ জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, সরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। পাশাপাশি খেলাপি হওয়া ঋণের সঙ্গে সুদ যুক্ত হওয়ার কারণেও খেলাপি ঋণের অঙ্ক বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য ঘেঁটে দেখা গেছে, ডিসেম্বরে সরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ ছিল ৬৫ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা, যা মার্চে বেড়ে হয় ৮৪ হাজার ২২১ কোটি টাকা।

এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ মার্চে বেড়ে হয়েছে ১৪ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ৩০ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ১০ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা এবং অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ২০ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা।

এ ছাড়া সরকারি খাতের বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ৮ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসির (বিডিবিপি) খেলাপি ঋণ ৮৭৩ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে সরকারি ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের ২০ দশমিক ৯৯ শতাংশ খেলাপি ছিল, যা মার্চে বেড়ে হয়েছে ২৭ শতাংশ।

বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৭০ হাজার ৯৮১ কোটি টাকা, যা মার্চে বেড়ে হয়েছে ৮৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ ঋণ খেলাপি ছিল, যা মার্চে বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ।

বিদেশি ব্যাংকগুলোতে ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা, যা মার্চে বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে বিদেশি ব্যাংকগুলোর ৪ দশমিক ৮২ শতাংশ ঋণ খেলাপি ছিল, যা মার্চে বেড়ে হয়েছে ৫ দশমিক ২ শতাংশ।

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক- বিশেষায়িত এই দুই ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৫ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এই দুই ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ১৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের শর্তের একটি হলো ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার কমানো। ২০২৪ সালের মধ্যে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে বলেছে সংস্থাটি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রোডম্যাপ অনুযায়ী, ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে খেলাপি ঋণের হার ৮ শতাংশে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এর মধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে খেলাপি ঋণ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত