ঢাকা মহানগরীর রামপুরার বনশ্রী এলাকায় ব্যবসায়ীকে গুলি করে স্বর্ণালঙ্কার লুটের ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) শুক্রবার তাদের গ্রেপ্তারের সময় লুণ্ঠিত স্বর্ণালঙ্কারের একাংশ এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- কাউছার (৩১), ফরহাদ (৬৪), খলিলুর রহমান (৫০), মো. সুমন (৩০), দুলাল চৌধুরী (৪৩) ও আমিনুল (৩৫)।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শুক্রবার ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, পিরোজপুর ও মাদারীপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত স্বর্ণের মধ্যে ৪ ভরি ৯ আনা স্বর্ণ, বিক্রিত স্বর্ণের দুই লাখ ৪৪ হাজার ৫০০ টাকা, ঘটনায় ব্যবহৃত একটি ৭.৬২ এমএম রিভলবার, ৪ রাউন্ড গুলি ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
ডিবি জানিয়েছে, ভিকটিম আনোয়ার হোসেন (৪৫) একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। তিনি রামপুরার সি ব্লকের এভিনিউ রোড-৫ এর ‘অলংকার জুয়েলার্স’ দোকানের মালিক। প্রতিদিনের মতো তিনি গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে দোকান বন্ধ করে ১৬০ ভরি স্বর্ণ, যার আনুমানিক বাজার মূল্য দুই কোটি ৪৭ লাখ ২৪ হাজার টাকা ও নগদ এক লাখ টাকাসহ বাসায় ফিরছিলেন।
রাত পৌনে ১১টার দিকে বনশ্রী ডি ব্লক ৭ নম্বর রোডের ২০ নম্বর বাড়ির ভাড়াবাসার গেইটের সামনে পৌঁছামাত্র তিনটি মোটরসাইকেলে ৬/৭ জন দৃষ্কৃতকারী আগ্নেয়াস্ত্র ও চাপাতিসহ তার গতিরোধ করে। স্বর্ণ ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার সময় আনোয়ার হোসেন বাধা দিলে তারা তাকে ৪/৫ রাউন্ড গুলি করে। তাদের গুলি আনোয়ার হোসেনের বাম হাঁটু ও বাম পায়ের উরুতে রাগে। এ সময় দৃষ্কৃতকারীরা চাপাতি দিয়ে আনোয়ার হোসেনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে সাইড ব্যাগে রাখা স্বর্ণ ও নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত আনোয়ারকে রামপুরার স্থানীয় একটি হাসপাতালে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় তার স্ত্রী বাদী হয়ে রামপুরা থানায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি একটি মামলা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক জানান, ঘটনার পর থানা পুলিশের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগ ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেপ্তারে কাজ শুরু করে। বিভিন্ন ডাকাতির ঘটনা বিশ্লেষণ, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে বরিশাল থেকে একজন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি জানান, বনশ্রীতে ডাকাতির আগে প্রস্তুতি বৈঠক করে জড়িতরা। প্রাপ্ত তথ্য ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ডিবির চারটি দল রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, পিরোজপুর ও মাদারীপুরে অভিযান চালিয়ে ডাকাত দলকে গ্রেপ্তার করে।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক ডাকাতি মামলা আছে বলে জানা গেছে। তাদের অপরাধের ধরনও একই রকম।