Beta
বুধবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
বুধবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২৫

পদত্যাগ, সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো

পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানাতে সংবাদ সম্মেলনে জাস্টিন ট্রুডো।
পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানাতে সংবাদ সম্মেলনে জাস্টিন ট্রুডো।
[publishpress_authors_box]

চাপের মুখে আর পারলেন না জাস্টিন ট্রুডো; ১০ মাস পর নির্বাচন ছিল, সেই পর্যন্ত অপেক্ষাও করলেন না; জানিয়ে দিলেন সিদ্ধান্ত, কানাডার প্রধানমন্ত্রীর পদে আর থাকছেন না তিনি।

বাবা পিয়ের ট্রুডোও ছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী; তার পথ ধরে শিক্ষকতা ছেড়ে রাজনীতিতে আসা জাস্টিন ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। সবচেয়ে কম বয়সে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে বিশ্ব রাজনীতিতে কানাডার বড় বিজ্ঞাপন হয়ে উঠেছিলেন তিনি।

তারপর পুনর্নির্বাচিত হন, সেই মেয়াদ এই বছরের শেষ অর্ধে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আগামী অক্টোবরের সেই সাধারণ নির্বাচনের আগে বড় ঝড় সামলাতে হচ্ছিল ৫৩ বছর বয়সী ট্রুডোকে।

দেশে অর্থনৈতিক সঙ্কট, সেই চাপ আরও বাড়িয়ে তোলেন প্রতিবেশী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, কানাডার পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়ে।

দলের মধ্যে চাপে পড়া, বিরোধী দলের অনাস্থা প্রস্তাব আনার তোড়জোড়ে ট্রুডো পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ছিল। সোমবার আচমকা সংবাদ সম্মেলনে এসে সেই গুঞ্জনের অবসান ঘটান তিনি। তার ঘোষণার মধ্য দিয়ে ২০২৫ সালে প্রথম কোনও রাষ্ট্রনেতার পদত্যাগ দেখতে যাচ্ছে বিশ্ব।

আন্তর্জাতিক সব সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ট্রুডো তার দল লিবারেল পার্টির প্রধানের পদ ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়ার ইচ্ছার কথাও জানিয়েছেন।

কানাডার উদারপন্থী এই দলের প্রধানের পদে টানা ১১ বছর ছিলেন ট্রুডো, সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর পদে রয়েছেন নয় বছর।

অটোয়ার ওই সংবাদ সম্মেলনে ট্রুডো জানিয়েছেন, তার দল লিবারেল পার্টি নতুন নেতা ঠিক করতে পারলেই তিনি সরকার প্রধানের পদ ছেড়ে দেবেন। তার আগ পর্যন্ত দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন।

আগামী ২৪ মার্চ পর্যন্ত কানাডার পার্লামেন্ট অধিবেশন স্থগিত থাকবে। তার মধ্যেই লিবারেল পার্টিকে নতুন নেতা ঠিক করতে হবে। তারপর ট্রুডো পদত্যাগ করলে নতুন প্রধানমন্ত্রীকে পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে যেতে হবে।

ভোটের বছরে এসে জনমত জরিপে ট্রুডোর দলের অবস্থা বেশ নাজুক দেখা যাচ্ছে। তবে ট্রুডো বলেছেন, তার পদত্যাগের মধ্যদিয়ে চলমান উত্তাপ কমবে বলে তিনি আশা করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যে একাধিকবার নিজেকে ‘ফাইটার’ বলেন ট্রুডো। সেই সঙ্গে দেশবাসীরকে সতর্ক করে বলেন, রক্ষণশীল দল কনজারভেটিভ পার্টি অব কানাডার নেতা পিয়ের পইলিভিয়েরের নীতি কানাডার জন্য ঠিক হবে না।

“আমাদের দরকার উচ্চাকাঙ্ক্ষার, আশাবাদের ‍দৃষ্টিভঙ্গী দরকার। কিন্তু পিয়ের পইলিভিয়ের সেকথা বলছেন না।”

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো

ট্রুডোর পদত্যাগের পর লিবারেল পার্টির প্রধান কিংবা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টিয়ান ফ্রিল্যান্ড।

পরিবহনমন্ত্রী অনিতা আনন্দের নামও রয়েছে আলোচনায়। এছাড়াও আসছে রেজিস্ট্রার অব কানাডা ফ্রঁসোয়া-ফিলিপে শ্যাম্পেইনের নাম।

তাদের মধ্যে যেই আসুক না কেন, তার জন্য চ্যালেঞ্জ হবে আগামী নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টির কাছে লিবারেল পার্টির হার ঠেকানো।

লিবারেল পার্টি অক্টোবরের নির্বাচনে বড় ব্যবধানে বর্তমান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির কাছে হেরে যেতে পারে বলে একের পর এক জরিপে বলা হচ্ছে।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচন সংক্রান্ত জরিপে করুণ দশা দেখে দলীয় প্রধান ট্রুডোকে পদত্যাগ করার আহ্বান প্রকাশ্যেই জানিয়ে আসছিলেন লিবারেল পার্টির আইনপ্রণেতারা। তাদের দল দিনদিন ভারী হচ্ছিল।

২০১৩ সালে লিবারেল পার্টির প্রধানের দায়িত্ব ট্রুডো নেওয়ার আগে দলটি নানা ধরনের সংকটের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিল। কানাডার হাউস অব কমন্সে তখন লিবারেল পার্টির অবস্থান ছিল ‍তৃতীয়।

ট্রুডো সেখান থেকে লিবারেল পার্টিকে তুলে এনে ২০১৫ সালের নির্বাচনে দলকে জয়ী করেন। নিজে হন কানাডার ২৩তম প্রধানমন্ত্রী।

ট্রুডো দীর্ঘদিন কানাডার জনপ্রিয় শাসক ছিলেন, দলের ভেতরে, বাইরে-সব জায়গায়। কিন্তু বছরখানেক ধরে সেই জনপ্রিয়তা তিনি ধরে রাখতে পারছেন না। কানাডার অর্থনৈতিক সংকট সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যর্থতা এর প্রধান কারণ হিসেবে দেখা হয়। 

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত