Beta
শনিবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
শনিবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২৫

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহত : বাদ পড়াদের তালিকাভুক্তির আবেদন আহ্বান

জুলাইয়ে মাঝামাঝি থেকে আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ; এরপর নির্বিচারে গুলি চলে। তাতে হাজার আন্দোলনকারী নিহত হয়। এই পুরো ঘটনায় পুলিশ ছিল জনরোষের মধ্যে। অভ্যুত্থানের পর পুলিশ প্রধানের দায়িত্ব পাওয়া বাহারুল ইসলাম সম্প্রতি বলেছেন, পুলিশকে লাঠিয়াল বাহিনী হিসাবে ব্যবহার করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ; এরপর নির্বিচারে গুলি চলে। তাতে হাজারো আন্দোলনকারী নিহত হয়। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যারা হতাহত হয়েছেন তাদের তালিকার প্রথম ধাপের খসড়া চূড়ান্ত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেই তালিকা প্রকাশও করা হয়েছে অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে। এতে যাদের নাম নেই তাদের নাম অন্তর্ভুক্তির আবেদন আহ্বান করেছে গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেল।

বুধবার গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেলের দলনেতা (অতিরিক্ত সচিব) খন্দকার জহিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গণঅভ্যুত্থানকালীন ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়ে প্রতিপক্ষের আক্রমণে যারা শহীদ বা আহত হয়েছেন, কিন্তু উল্লিখিত প্রথম ধাপের চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হননি এমন ব্যক্তি/ব্যক্তিদের নাম তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন আহ্বান করা যাচ্ছে।

সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শহীদ এবং আহত ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদ, স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণের প্রমাণপত্র এবং উপযুক্ত অন্যান্য কাগজপত্রসহ সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের বা উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তার কার্যালয় বা শহীদ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন বা গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেলের দলনেতার কাছে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত আবেদন করা যাবে।

জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহতের তালিকার প্রথম ধাপের খসড়া চূড়ান্ত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয় গত ২১ ডিসেম্বর। প্রকাশ করা হয় বিশেস সেল (musc.portal.gov.bd) এর ওয়েবসাইটেও।

সে তালিকায় ৮৫৮ জন নিহত এবং ১১ হাজার ৫৫১ জন আহতের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

এর আগে ৭ অক্টোবর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত সারাদেশে মোট ৭৩৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য জানা গেছে। তখন পর্যন্ত মোট ২২ হাজার ৯০৭ জন আহত হওয়ার কথা জানিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম জানিয়েছিলেন, এ তালিকা চূড়ান্ত নয়।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সেদিন বলেছিলেন, “গণআন্দোলনে নিহত এবং আহতদের তালিকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএসে (ম্যানেজমেন্ট অব ইনফরমেশন সিস্টেম) হালনাগাদ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে ৭৩৭ জন নিহতের তথ্য রয়েছে এবং এগুলো যাচাই করা হচ্ছে।”

গণআন্দোলনে নিহত ও আহতদের তালিকা করার জন্য স্বাস্থ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই কমিটি প্রাথমিকভাবে ১ হাজার ৪২৩ জন নিহত হওয়ার তথ্য জানায়। সেই তালিকা চূড়ান্ত নয় বলেও জানায় তারা।

অন্তর্বর্তী সরকার আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা ও শহীদের পরিবারকে সহায়তা দেওয়ার জন্য নীতিমালা প্রণয়নের জন্য পূর্ণাঙ্গ তালিকা করার উদ্যোগ নেয়। সেজন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়।

সেই কমিটি একটি খসড়া নীতিমালা এবং আহত-নিহতদের একটা প্রাথমিক তালিকা মন্ত্রণালয়ে দাখিল করেছে বলে জানান নূরজাহান বেগম।

মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা তালিকা সর্বসাধারণের যাচাইয়ের জন্য গণবিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, দ্রুততম সময়ে ডাটাবেইজ তৈরির সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।

আহত-নিহতদের তালিকা তৈরি করতে গিয়ে বেশ কিছু সমস্যারও মুখোমুখি হয়েছে মন্ত্রণালয়। নূরজাহান বেগম বলেন, “সেই সময়ে অনেককেই মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। কারও কারও ডেথ সার্টিফিকেট দিতে পোস্টমর্টেম করতে হবে, পুলিশ কেইস করতে হবে বলা হয়েছিল।

“ফলে অনেকেই ঝামেলা এড়াতে বা ভয়ে মৃতদেহ নিয়ে চলে গিয়েছে। আবার অনেকে ভয়ে পরিবারের ঠিকানাও ভুল দিয়েছিল। ফলে সেই ভুল ঠিকানাতে গিয়েই কমিটিকে কাজ করতে হয়েছে। সেসব ঠিকানা এখন ভেরিফাই করতে হয়েছে।”

গত ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে নিহত ৭০৮ জনের নামের তালিকা করতে পারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সে তালিকার তথ্য সংশোধন-সংযোজনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট ৬ অক্টোবর পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে বলে জানানো হয় তখন।

তার আগে আন্দোলনে আহত ও নিহতদের তথ্য পেতে হটলাইন নম্বর খোলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত