Beta
রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪
Beta
রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪

ট্রেনে ধর্ষণের ৪ আসামিই গ্রেপ্তার; ক্যাটারিং কোম্পানি বাদ

ট্রেনে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার তিনজন।
ট্রেনে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার তিনজন।
Picture of বিশেষ প্রতিনিধি, সকাল সন্ধ্যা

বিশেষ প্রতিনিধি, সকাল সন্ধ্যা

সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেসে তরুণী ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলার চার আসামিকেই গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে রেলওয়ে পুলিশ।

ট্রেনটি বুধবার সকালে চট্টগ্রাম পৌঁছার পর ট্রেনেই তিনজনকে এবং বৃহস্পতিবার বাকি একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

চারজনই ট্রেনে খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এস এ করপোরেশনের কর্মী। এই ঘটনার পর এস এ করপোরেশনকে ট্রেনের খাবার সরবরাহের দায়িত্ব থেকে বাদ দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। কোম্পানিটি পাহাড়িকা ও উদয়ন এক্সপ্রেসে ক্যাটারিংয়ের দায়িত্বে ছিল।

এই ঘটনায় বুধবারই চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তদন্ত কমিটির সদস্যরা সেই ট্রেনে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। কথা বলেছে সেদিন ট্রেনে দায়িত্বে থাকা কয়েকজন কর্মচারীর সঙ্গে।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, “তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেব।”

এই ঘটনায় উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের পরিচালক (গার্ড) আবদুর রহিমকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে রেলওয়ে।

সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারী উদয়ন এক্সপ্রেস সিলেট থেকে গত মঙ্গলবার রাত ১০টায় চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। চট্টগ্রাম পৌঁছায় বুধবার সকাল ৮টায়।

এর মধ্যে ভোর সাড়ে ৪টায় লাকসাম স্টেশন পার হওয়ার সময় চলন্ত ট্রেনে এক তরুণী (১৯) ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। ভোরে এই ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি জানাজানি হয় বুধবার সন্ধ্যার পর। চারজনকে আসামি করে মামলাও হয়।

ওই তরুণী ভৈরবে তার এক নিকটাত্মীয়র বাসায় থাকেন। তিনি সিলেট গিয়েছিলেন তার এক ভাইয়ের বাসায়। সেখান থেকে ট্রেনে তিনি চট্টগ্রামে আসছিলেন।

রেলপুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন,অভিযোগ পাওয়ার পরই ট্রেন থেকে মো. জামাল (২৭), মো. শরীফ (২৮) ও মো. রাশেদ (২৭) নামের তিন কর্মীকে বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থেকে আবদুর রব ওরফে রাসেল (২৮) নামের আরেক কর্মীকে গ্রেপ্তার করে রেলওয়ে পুলিশ।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ওসি এস এম শহীদুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার পর ট্রেনে থাকা জিআরপি পুলিশ সদস্যরা বিষয়টি টের পেয়ে ওই বগিতে যান এবং তিনজনকে আটক করেন। আর একজন পালিয়ে যায়ন। তাকেই আজ নোয়াখালীর কুতুবপুর থেকে আটক করা হয়েছে।”

তিনি বলেন, আগে আটক হওয়া তিনজনকে বুধবারই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের জন্য হেফাজতে চেয়ে আবেদন করেছে পুলিশ। অন্যজনকেও আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করা হবে।

রেল কর্মকর্তারা বলছেন, ওই তরুণী টিকেট কেনেননি। টিকেট না থাকার কারণেই তিনি ট্রেনে উঠে খাবার কারে (যে বগিতে খাবারের ব্যবস্থা আছে) অবস্থান নিয়েছিলেন। সেই সুযোগ নিয়েছিল এস এ কর্পোরেশনের কর্মীরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, “অবশ্যই এস এ করপোরেশনের কর্মীদের যোগসাজশেই ওই তরুণী টিকেট ছাড়াই ট্রেনে চড়ে বসেন। এতক্ষণ ধরে সে খাবার কারে বসে ছিল, সেই বিষয়টি তারা ট্রেনের চেকারকে জানায়নি। কেন?”

এই ঘটনার পর বুধবার রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিকী এক আদেশে উদয়ন ও পাহাড়িকা এক্সপ্রেসে এস এ কর্পোরেশনের ক্যাটারিং সার্ভিসের কার্যক্রম স্থগিত করেন।

এস এ করপোরেশনের মালিক শাহ আলম এবিষয়ে বলেন, “আমাদের কোনও কর্মী অপরাধে জড়িত প্রমাণিত হলে আমরা তাকে ছাড় দেব না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও আমরা সহযোগিতা করব।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত