দেশের উদীয়মান প্রতিভাবান দাবাড়ুর আরেক নাম সাকলাইন মোস্তফা সাজিদ। মাত্র ১২ বছর বয়সে হয়েছেন জাতীয় জুনিয়র দাবায় চ্যাম্পিয়ন। ২০২৪ সালে সারা বিশ্ব থেকে নির্বাচিত মাত্র ১২ জনের মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে স্পেনে উচ্চতর প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু ভিসা জটিলতায় সেই সুযোগ হাতছাড়া হয়েছিল। গত বছর দিল্লিতে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ থাকলেও জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য যেতে পারেননি।
আরেকটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার স্বপ্ন দেখলেও, টাকার অভাবে সেই স্বপ্ন এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে সাকলাইনের। সাকলাইনের আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রতিযোগিতার স্বপ্ন আবারও ধাক্কা খেয়েছে। এবার তার সামনে সুযোগ এসেছে জোনাল ৩.২ দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার। আগামী ১০-১৯ মার্চ শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে হবে এই প্রতিযোগিতা।
সাকলাইনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিযোগিতা। জোনাল দাবায় ভালো করলে আন্তর্জাতিক মাস্টার হওয়ার পথে এগিয়ে যেতে পারেন। বিশেষ করে এই প্রতিযোগিতায় ভারতের দাবাড়ুরা না থাকায় সেই সম্ভাবনা আরও বেশি সাকলাইনের জন্য।
কিন্তু শ্রীলঙ্কায় খেলতে যেতে হলে কমপক্ষে দেড় লাখ টাকা প্রয়োজন। সাকলাইনের পরিবারের পক্ষে এই টাকা যোগাড় করা কষ্টকর। তাছাড়া বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনও এ বিষয়ে কার্যকর কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না। যতোই দিন গড়াচ্ছে ততোই সাকলাইনের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সাকলাইনের কোচ আন্তর্জাতিক মাস্টার আবু সুফিয়ান শাকিল হতাশার সুরে বলেন,”একজন উদীয়মান দাবাড়ুর ক্যারিয়ার গড়তে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ফান্ডিংয়ের অভাবে প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই, সাকলাইনের মতো প্রতিভারা যেন প্রয়োজনীয় সহায়তা পায় এবং দেশের জন্য গৌরব বয়ে আনতে পারে।”
ফুটবল ও ক্রিকেটের বাইরে দাবার মতো অজনপ্রিয় খেলাগুলোতে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতার অভাব দীর্ঘদিনের সমস্যা। তরুণ দাবাড়ুরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের নাম উজ্জ্বল করার স্বপ্ন দেখলেও অর্থ ও সহযোগিতার অভাবে সেই স্বপ্ন অনেক সময় অধরাই থেকে যায়। সাকলাইনের ক্ষেত্রেও সেই একই দৃশ্য।