Beta
বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারি, ২০২৫

রোজায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

ss-yunus-meeting-30122024-02
[publishpress_authors_box]

আসন্ন রমজান উপলক্ষ্যে দ্রব্যমূল্য ও পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক করার জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবার নিজ কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চারটি বিভাগের ৩১টি জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় যুক্ত হয়ে এই নির্দেশ দেন তিনি।

ভিডিও কনফারেন্সে তিনি কর্মকর্তাদের নিজ নিজ এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা, কৃষিপণ্য সংরক্ষণ, সার সরবরাহ এবং শিল্প এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার জন্য নিবিড়ভাবে কাজ করার নির্দেশও দিয়েছেন।

ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কর্মকর্তারা এই ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন। কনফারেন্সে ১৯ জন বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ পুলিশ প্রধান, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার পর্যায়ের কর্মকর্তা বক্তব্য রাখেন।

কনফারেন্সের সমাপনী বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “কর্মকর্তাদের বক্তব্য ও মতামত আগামী দিনে সরকারকে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করবে।”

তিনি বলেন, “এটা আমার জন্য আপনাদের সঙ্গে কথা বলার প্রথম সুযোগ ছিল। অনেক কিছু শিখলাম, অনেক বিষয়ে জানতে পারলাম। এটা আমাদের কাজে সহায়ক হবে।”

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “সামনে রমজান আসছে, রমজানকে কেন্দ্র করে বাজারে দ্রব্যমূল্যের দিকে আপনারা বিশেষভাবে নজর রাখবেন। শুধু দ্রব্যমূল্য নয়, জিনিসপত্র আনা নেওয়া কীভাবে আরও সহজ করা যায় সে বিষয়েও কাজ করবেন।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “দ্রব্যমূল্য একটি বড় ইস্যু। কীভাবে এটাকে আয়ত্তে আনা যায় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য আয়ত্তে আনার জন্য আগের থেকে বর্তমানে আরও বেশি সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সেই সুযোগটা ব্যবহার করে দ্রব্যমূল্য আয়ত্তে আনার ক্ষেত্রে আমরা যেন প্রতিযোগিতার মধ্যে থাকি।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের দ্রব্যমূল্যের ওপর বিশেষ নজর দেওয়া খুব দরকার। এটার ওপর জোর দেওয়ার অনুরোধ করছি।”

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “সংস্কারের লক্ষ্যে সরকার যে ১৫টি কমিশন গঠন করেছে তার মধ্যে বেশ কয়েকটি কমিশন খুব শিগগিরই তাদের রিপোর্ট দেবে। এসব প্রতিবেদনের পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে, নাগরিকদের সঙ্গেও আলোচনা হবে। এরমধ্যে দিয়ে দেশে নির্বাচনের একটি পরিবেশ তৈরি হবে।”

রিপোর্টের প্রতিক্রিয়া কী হবে সে বিষয়েও সচেতন থাকার জন্য মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। যাতে শান্তিপূর্ণভাবে সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করা যায়।

প্রধান উপদেষ্টা পণ্য সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, “কোন কোন দ্রব্যের অভাব হলে মানুষের কষ্ট হয়, সেটা খেয়াল রাখতে হবে। যেমন সারের অভাব হলে কৃষকের কষ্ট হয়। তাই কোনও জিনিসের অভাব হওয়ার আগে আমরা যেন সরকারের উচ্চ পর্যায়ে খবর দিতে পারি যে এই পণ্যের অভাব হতে পারে।”

তিনি বলেন, “এখানে এই পরিস্থিরি সৃষ্টি হতে পারে সে খবরও দিতে হবে। যেমন আমরা সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই বন্যা হলো। এ ধরনের আকস্মিক পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবেলা করা যায়, এর প্রস্তুতিও রাখতে হবে।”

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণসহ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রতিযোগিতার আহ্বান জানিয়ে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, “দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে নিজেদের মধ্যে একটা প্রতিযোগিতা করা যেতে পারে— কোন জেলা ভালো করলো। প্রতিযোগিতা, অর্থাৎ নিজেদের মধ্যে গ্রেডিং করা, যেমন আমরা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি। শাস্তির জন্য না, বরং নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব নিয়ে আসাই হল এর উদ্দেশ্য। এই একটা শ্রেণিবিন্যাস যদি করা যায় তাহলে খুব ভালো হবে।”

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ টেনে ড. ইউনূস বলেন, “একটা বড় ধরনের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশে পরিবর্তন এসেছে। এই পরিবর্তন যদি আমাদের কাজে কর্মে প্রতিফলিত না হয় তাহলে তা খুব দুর্ভাগ্যজনক হবে। যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই অভ্যুত্থানের জন্ম হলো সেটাকে ধারণ করতে হবে। যে কাজ করব সেটা দেখে মানুষ যেন মনে করে বড় পরির্তন হয়েছে। পরিবর্তনটা যেন চোখে লাগে।”

ভিডিও কনফারেন্সেটি সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদ। তিনি জানান, শিগগিরই প্রধান উপদেষ্টা বাকি চার বিভাগের ৩৩টি জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে একই ধরনের ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেবেন।

সংবাদসূত্র: বাসস

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত