ঢাকাসহ সারাদেশেই জেঁকে বসেছে শীত। কুয়াশার কারণে সূর্যের দেখা না মেলায় শীতের দাপট যেন আরও বেড়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, রংপুর বিভাগের আট জেলা এবং রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, নওগাঁ ও কুষ্টিয়া– সবমিলিয়ে দেশের ১৩ জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ এসব জেলায় তাপমাত্রা নেমেছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার নিচে।
এর মধ্যে রংপুর বিভাগের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় শুক্রবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এদিন সারাদেশেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। একইসঙ্গে এই মৌসুমেরও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এটি।
এদিন দেশের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কুড়িগ্রামের রাজারহাটে, ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পাবনা ও কুষ্টিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এদিন দেশের তৃতীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, কোনও অঞ্চলে তাপমাত্রা ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেখানে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে বলে ধরা হয়।
আর তাপমাত্রা ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মাঝারি, ৪ দশমিক ১ ডিগ্রি থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তীব্র এবং ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তা নিচে নামলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হিসাবে গণ্য করা হয়।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন এই তাপমাত্রা রেকর্ড হয়।
এই মৌসুমেও শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড হলো তেঁতুলিয়ায়। এর আগে গত ১৩ ডিসেম্বরও তেঁতুলিয়ায় এই মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল। সেদিন উত্তরের এই উপজেলায় তাপমাত্রা নেমেছিল ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকায়ও শীত বেড়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, শুক্রবার সকালে ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা বৃহস্পতিবার ছিল ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে, দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপের বর্ধিতাংশ উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
মধ্য রাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে জানিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত কুয়াশা অব্যাহত থাকতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে সারাদেশের কোথাও কোথাও দিনের বেলা শীতের অনুভূতি বিরাজ করতে পারে।
ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নদী পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে বলেও আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
তাপমাত্রা সম্পর্কে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা দেশের পশ্চিমাংশে ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র তা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।