তাবলিগ জামাতের মধ্যে চলমান সমস্যা সমাধানে ১০ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা। এসময় মামলা ছাড়াই গ্রেপ্তার এবং বিভিন্ন মসজিদে নামাজ ও ইবাদত করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তোলেন তারা।
সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান সাদপন্থি পক্ষের মাওলানা শফিক বিন নাঈম।
নেতা মুয়াজ বিন নূরের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে তারা। সাদপন্থীদের অন্যান্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের নামে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে, সারা দেশে মসজিদভিত্তিক তাবলিগের কাজকে সমান অধিকারের ভিত্তিতে পরিচালনার পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে।
এছাড়া তাবলিগের যেকোনও বিষয় নিয়ে শুধু হেফাজত বা জুবায়েরপন্থি ব্যক্তিদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত না নেওয়ারও দাবি জানিয়েছে তারা।
পাশাপাশি সঠিক সময়ে কাকরাইল মসজিদ এবং টঙ্গী ইজতেমা ময়দান বুঝিয়ে দিয়ে নির্দিষ্ট তারিখে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠান করার সব কার্যক্রম নিশ্চিত করা, নিজামুদ্দীনের অনুসারীদের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে ও তাবলিগের উভয়পক্ষকে নিয়ে সমঝোতার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
গত ১৮ ডিসেম্বর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান দখলে নেওয়াকে কেন্দ্র করে গভীর রাতে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত দুইজনের মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে সেদিনের প্রসঙ্গ টেনে মাওলানা শফিক বিন নাঈম বলেন, “১৮ ডিসেম্বর টঙ্গীর ময়দানে দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে, সেজন্য আমরা মর্মাহত। আমরা লক্ষ্য করেছি, এই ঘটনাকে রাজনৈতিক আলেমরা তাদের স্বার্থসিদ্ধির প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করছেন। সারা দেশে অহিংস ও শান্তিপ্রিয় তাবলীগ জামাতের মাওলানা সাদের অনুসারীদের ঘরবাড়ি ও দোকানপাট ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় আমাদের সাথীদের ওপর বর্বরোচিত আক্রমণ হচ্ছে।”
মামলা ছাড়াই সাথীদের গ্রেপ্তার এবং বিভিন্ন মসজিদে সাথীদের নামাজ ও ইবাদত করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “পুলিশের সহযোগিতায় একদল উগ্রপন্থী বাসাবাড়িতে গিয়েও তাবলিগের সাথীদের মারধর করছেন। অন্যায়ভাবে এক পক্ষের মুখপাত্রকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে বিদেশি মেহমানদের ওপরও হামলা করা হচ্ছে।”
শফিক বিন নাঈম আরও বলেন, “২০ ডিসেম্বর জোড় ইজতেমার আগে আমরা মাঠের পশ্চিম পাশে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়েছিলাম। সংঘাত এড়াতে প্রশাসনকে বারবার অবহিত করে ৩৬টি চিঠি দিয়েছি। তাছাড়া জুবায়েরপন্থি ও হেফাজতের নেতাদের কাছে আমরা শান্তি ও সমঝোতার প্রস্তাব জানিয়েছি। কিন্তু তারা সমঝোতা করেননি। এমনকি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকেও তাবলিগের সাথীদের পুলিশ ও সাংবাদিকদের সামনে তারা প্রকাশ্যে অপহরণ করে কাকরাইল মসজিদে নিয়ে নির্যাতন করেছেন।”