Beta
বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

সংস্কার দ্রুত শেষ করে নির্বাচন দিন : খালেদা জিয়া

বিএনপির বর্ধিত সভায় প্রচার করা হয় খালেদা জিয়ার বক্তব্য। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
বিএনপির বর্ধিত সভায় প্রচার করা হয় খালেদা জিয়ার বক্তব্য। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ শেষ করে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের আয়োজন করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এটাই জনগণের প্রত্যাশা।

চিকিৎসার জন্য এ মুহূর্তে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থান করছেন খালেদা জিয়া। বৃহস্পতিবার দুপুরে সেখান থেকেই ভার্চুয়ালি যুক্ত হন দলের বর্ধিত সভায়।

খালেদা জিয়া বলেন, “দেশ আজ এক সংকটময় সময় অতিক্রম করছে। আপনাদের এবং ছাত্রদের সমন্বিত আন্দোলনের ফলে ফ্যাসিস্ট শাসকেরা বিদায় নিয়েছে। একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। তাদের কাছে জনগণের প্রত্যাশা রাষ্ট্র মেরামতের ন্যূনতম সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাওযার জন্য সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা।”

বেলা ১১টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল প্রাঙ্গণে শুরু হওয়া বিএনপির এই বর্ধিত সভায় আগে থেকে ধারণ করে রাখা খালেদা জিয়ার বক্তব্যটি প্রচার করা হয়।

শুরুতেই দীর্ঘ ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বিএনপি চেয়ারপারসন, আহতদের জন্য জানান সমবেদনা।

চিকিৎসার কারণে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করলেও সবসময় দলের নেতাকর্মীদের পাশে আছেন বলে জানান তিনি।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য সবশেষ ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই লন্ডনে গিয়েছিলেন। পরের বছর দুর্নীতির মামলায় দণ্ড নিয়ে কারাগারে যেতে হয় তাকে।

কোভিড মহামারি দেখা দিলে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাহী আদেশে তাকে মুক্তি দিয়ে বাড়িতে থাকার সুযোগ করে দিলেও বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেয়নি।

ছাত্র-জনতার অভ্যূত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর মুক্তি পান খালেদা জিয়া। কারামুক্তির পাঁচ মাস পর জানুয়ারিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যান তিনি। ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরেই লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। এর মধ্যে তার হৃদপিণ্ডে স্টেন্ট বসানো হয়, বসানো হয় পেস মেকারও।

খালেদা জিয়ার সাজা হয়েছিল কী কারণে, এখন কেন খালাস

নিজের বক্তব্যে দীর্ঘ ১৫ বছর গণতন্ত্র ও তার মুক্তির জন্য দলের নেতাকর্মীরা যে নিরন্তর সংগ্রাম করেছেন, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, প্রাণ দিয়েছেন; তাদের ধন্যবাদ জানান খালেদা জিয়া।

দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে নেতাকর্মীদের আগামী নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে আহ্বান জানান তিনি। তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, “এমন কোনও কাজ করবেন না যাতে আপনাদের এতদিনকার সংগ্রাম আত্মত্যাগ বিফলে যায়। আমাদের সবসময় জিয়াউর রহমানের সেই উক্তি মনে রাখা দরকার, ‘ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ’।”

বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ বিশেষ করে তরুণ সমাজ এখন ইতিবাচক গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, “ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সংকীর্ণতা ভুলে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের কাজ করতে হবে। এখনও ফ্যাসিস্টের দোসররা, বাংলাদেশের শত্রুরা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্জনকে নস্যাৎ করার জন্য গভীর চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে।

“ইস্পাত কঠিন ঐক্যের মাধ্যমে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এসব চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দিতে হবে। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য আমাদের সবাইকে এক যোগে কাজ করতে হবে।”

এসময় আধুনিক, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে সর্বশক্তি নিয়োগ করতে এবং এত ত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া অর্জনকে সুসংহত করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।

বাংলাদেশের জনগণকে সম্পৃক্ত করে বিএনপিকে আগের মতো আন্দোলন-সংগ্রাম ও রাষ্ট্রপরিচালনায় নেতৃত্ব দিতে আরও ঐক্যবদ্ধ এবং সুসংহতভাবে গড়ে তুলতেও দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সবশেষে দেশের মানুষের উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়া বলেন, “আসুন প্রতিহিংসা-প্রতিশোধ নয় পারস্পরিক ভালোবাসা ও ভাতৃত্বের মাধ্যমে আমরা সবাই মিলে প্রিয় মাতৃভূমিকে সত্যিকার অর্থে একটি বাসযোগ্য উন্নত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করি।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত