Beta
শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

ভারতের অপ্রতিবেশীমূলক আচরণে তিস্তা পাড়ে সংকট বাড়ছে : তারেক রহমান  

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব তারেক রহমান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব তারেক রহমান।
[publishpress_authors_box]

আন্তর্জাতিক নদীর পানি বণ্টন নিয়ে ভারত ‘অপ্রতিবেশীমূলক আচরণ করছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ভারতের কারণে উত্তরাঞ্চলের লাখো-কোটি মানুষ বন্যায় খরায় দুর্বিষহ জীবন পার করছে।

তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় এবং এই নদী ঘিরে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে দেশের উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলা- লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধার ১১টি পয়েন্টে দুই দিনের গণপদযাত্রা ও অবস্থান কর্মসূচি করেছে বিএনপি।  

সোমবার রংপুর জেলার তিস্তা রেলওয়ে সেতু সংলগ্ন চরে এই কর্মসূচি উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কের তিস্তা সড়ক সেতু থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়। ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি’র প্রধান সমন্বয়কারী ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় তিস্তা বাঁচানোর পদযাত্রার সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুর নেতৃত্বে পথযাত্রায় দলীয় নেতাকর্মীসহ হাজারো মানুষ অংশ নেন। তিস্তা সেতু থেকে পথযাত্রাটি রংপুরের কাউনিয়ায় আসে। তখন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও কাউনিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এমদাদুল হক ভরসার নেতৃত্বে দলটির রংপুরের নেতাকর্মীরা যোগ দেন। এছাড়া বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে শিশু, কিশোর, নারী ও পুরুষরা অংশ নেন।

কর্মসূচিতে ‘ডাক দিয়েছেন দুলু ভাই, জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’, ‘তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা চাই’, ‘তিস্তা মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান দেওয়া হয়।

বেলা পৌনে ১২টার দিকে তিন কিলোমিটার দূরে কাউনিয়া উপজেলায় গিয়ে পথযাত্রা পৌঁছায়। সেখান থেকে আবার তিস্তা সেতুর দিকে গিয়ে শেষ হয় এই পদযাত্রা।

সোমবার থেকে শুরু হওয়া ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচিতে যোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারাও।

মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে তিস্তা পাড়ের ১১টি স্থানে অবস্থান কর্মসূচিতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন।

কর্মসূচির সমাপনী জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তারেক রহমান বলেন, “তিস্তা পাড়ের পানিবঞ্চিত মানুষেরা আজ সারা বিশ্বকে জানিয়ে দিতে চায় যে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে ৫৪টি অভিন্ন নদী, এসব নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা প্রাপ্তি কারও করুণার বিষয় নয়। এটা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রাপ্য, এটি বাংলাদেশের মানুষের প্রাপ্য।

“অথচ আমরা দেখছি, আন্তর্জাতিক তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের জন্য আজকে আমাদেরকে আন্দোলন করতে হচ্ছে।”

পানি বণ্টন নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে ভারত বৈষম্যমূলক আচরণ করছে বলে মন্তব্য করেন তারেক রহমান।  

তিনি বলেন, “পানি বণ্টন নিয়ে আমাদের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে অপ্রতিবেশীমূলক আচরণ করেই চলেছে। আপনাদের সকলের জানা আছে, আজ প্রায় পঞ্চাশ বছর হলো ফারাক্কার অভিশাপ থেকে বাংলাদেশ মুক্তি পায়নি। এখন আবার তিস্তা বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অভিশাপ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

“সব আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে আমাদের প্রতিবেশি উজানের গজলডোবায় একটি বাঁধ নির্মাণ করে তিস্তার স্বাভাবিক পানিপ্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করে চলেছে। তাদের এই অপ্রতিবেশীমূলক আচরণের কারণে আজকে উত্তরাঞ্চলের লাখো-কোটি জনগণ বন্যায় খরায় দুর্বিষহ জীবন পার করছে।”

“পানির অভাবে তিস্তার বুকে আজকে ধূধূ বালুচর। একদিকে পানির অভাবে নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার ফসল। আবার কখনো হঠাৎ করেই উজান থেকে ছেড়ে দিচ্ছে পানি, দুদিন আগে যেমনটা হয়েছে। আর সেই পানির কারণে বন্যায় ভাসিয়ে দিচ্ছে সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি। কৃষকের আবাদি ফসল ভাসিয়ে দিচ্ছে। এমনকি বছরে তিনবারও বন্যা হয়েছে এই অঞ্চলে। প্রত্যেক বছর বন্যার কারণে নদীভাঙন হচ্ছে। শস্যের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে লক্ষ-কোটি টাকা।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত