রাজধানী ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় কীটনাশকের বিষক্রিয়ায় দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিস কোম্পানির চেয়ারম্যানসহ চার জনের বিরুদ্ধে করা মামলায় প্রথম দিনই সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মাসুদ করিমের আদালতে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ছিল। আসামিপক্ষ অভিযোগ গঠনের আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে গেছে। এজন্য তারা সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ পেছাতে সময় আবেদন করেন। আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ দিয়েছে।
আসামিরা হলো- পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিস কোম্পানির চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান, এমডি ফরহাদুল আমিন, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মোসলেহ উদ্দিন শামীম ও স্প্রে ম্যান মো. টিটু মোল্লা।
গত ১৪ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত। একই সঙ্গে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরুর জন্য ২ ফেব্রুয়ারি তারিখ দেওয়া হয়। মামলার সব আসামি জামিনে রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. বিল্লাল হোসেন এসব তথ্য জানিয়েছেন।
মামলায় বলা হয়, ২০২৩ সালের ২ জুন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মোবারক হোসেন তুষারের বাসায় তেলাপোকার কীটনাশক দেয় ডিসিএস অর্গানাইজেশন লিমিটেডের কর্মীরা। তারা জানায় ৩/৪ ঘণ্টা পর বাসায় প্রবেশ করা যাবে। কীটনাশক দেওয়ার ৯ ঘণ্টা পর মোবারক তার স্ত্রী শারমিন জাহান ও সন্তানদের নিয়ে বাসায় আসেন। এরপর তারা সবাই ঘুমিয়ে পড়ে। ৩ জুন সকাল ৭টার দিকে শারমিন ও তার দুই সন্তান বমি করে।
তখন আসামি মোসলেহ উদ্দিনকে ফোন করা হলে তিনি জানান, কীটনাশকে এলার্জি ছাড়া অন্য কোনও সমস্যা হবে না। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খাওয়ালে দুই সন্তান সাময়িক সুস্থবোধ করে। ওইদিন রাতে তারা সবাই ঘুমিয়ে পড়ে।
পরদিন ৪ জুন ভোররাত ৪ টার দিকে ছোট ছেলে শাহির মোবারত জায়ান (৯) অসুস্থ বোধ করে। এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে বড় ছেলে শায়ান মোবারত জাহিন (১৫) অসুস্থ বোধ করলে তাকেও ওই হাসপাতাল নেওয়া হয়। তাকে আইসিইউতে চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে তারও মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ওই বছরের ৫ জুন দায়িত্বে অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ এনে তাদের বাবা ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন তুষার বাদী হয়ে ভাটারা থানায় মামলাটি করেন।
গত বছরের ৩১ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সমীর চন্দ্র সূত্রধর চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।