দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১২৪ জনে দাঁড়িয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ১৮১ জন যাত্রী ও ক্রর মধ্যে জীবিত উদ্ধার হওয়া দুইজন বাদে বাকি সবাই মারা গেছেন।
দেশটির জাতীয় অগ্নি নির্বাপণ সংস্থা জানিয়েছে, দুর্ঘটনাস্থল থেকে এখন পর্যন্ত ১২৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫৭ নারী ও ৫৪ পুরুষ শনাক্ত করা গেছে। বাকি ১৩ জনের লৈঙ্গিক পরিচয় নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি।
ঘটনাটি রবিবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকের। ব্যাংকক থেকে আসা জেজু এয়ারের একটি উড়োজাহাজ দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ জিওলা প্রদেশের মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে একটি দেয়ালে সজোরে ধাক্কা খায়। সঙ্গে সঙ্গে এতে আগুন ধরে যায়।
ফ্লাইটটিতে থাকা যাত্রীদের অধিকাংশই দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক।
দুর্ঘটনার বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার ভূমি মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, সকালে ১ নম্বর রানওয়েতে অবতরণ করতে যাচ্ছিল উড়োজাহাজটি। তখন নিয়ন্ত্রণ টাওয়ার থেকে রানওয়েতে পাখি থাকার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল।
এর ঠিক এক মিনিট পর কন্ট্রোল টাওয়ারে মেডে কল পাঠান পাইলট। তখন তাকে উল্টো দিকের ১৯ নম্বর রানওয়েতে নামার নির্দেশ দেয় নিয়ন্ত্রণ টাওয়ার। সেই নির্দেশ মেনে পাইলট সেখানে অবতরণ করতে গেলে মাটিতে থাকা নেভিগেশন সরঞ্জামে ধাক্কা লেগে দেয়ালে বিধ্বস্ত হয় উড়োজাহাজটি।
উদ্ধার হওয়া জীবিতদের একজন নারী ও অপরজন পুরুষ বলে জানিয়েছে জাতীয় অগ্নি নির্বাপণ সংস্থা।
সংস্থাটি বলছে, উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর সেটির লেজের অংশ থেকে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তারা দুজনই ফ্লাইটটির ক্রু।
এরই মধ্যে ঘটনাস্থল থেকে ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করেছে তদন্ত কমিটি। তবে ভয়েস রেকর্ডিং ডিভাইস এখনও মেলেনি।
এদিকে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় হতাহতদের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন জেজু এয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কিম ই-বে।
তার প্রতিষ্ঠান এক বিবৃতিতে বলেছে, “মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের সবার কাছে মাথা নত করে ক্ষমা চাইছে জেজু এয়ার। এই ঘটনায় আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করব। মানুষকে কষ্ট দেওয়ায় আমরা দুঃখিত।”
এর আগে ২০০২ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় এয়ার চায়নার একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ১২৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল।