Beta
শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫

অবৈধ বাংলাদেশি ধরতে অভিযানে নেমেছে দিল্লি পুলিশ

দিল্লির কালিন্দি কুঞ্জ এলাকায় পুলিশ বুধবার তল্লামি চালায়।
দিল্লির কালিন্দি কুঞ্জ এলাকায় পুলিশ বুধবার তল্লামি চালায়।
[publishpress_authors_box]

অবৈধদের ধরতে বাংলাদেশ সরকার যখন অভিযানের ঘোষণা দিয়েছে, তখন অবৈধ বাংলাদেশিদের ধরতে দিল্লিতে সেই অভিযান শুরু করে দিয়েছে ভারত সরকার।

দিল্লি পুলিশ বুধবার সেখানে অবস্থানরত অবৈধভাবে থাকা বাংলাদেশিদের ধরতে অভিযান চালায় বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম এএনআই জানিয়েছে।

বিশেষ এই অভিযানের প্রথম দিনে কালিন্দি কুঞ্জ এলাকায় থাকা বাংলাদেশিদের কাগজপত্র পরীক্ষা করে দেখে।

দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভি কে সাক্সেনার নির্দেশের পরদিনই এই অভিযানে নামে পুলিশ।

দিল্লি সরকারের মুখ্য সচিব ও শহরের পুলিশ প্রধানের কাছে একটি চিঠিতে সাক্সেনা বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী ও একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত ও নির্বাসনের জন্য আগামী ৬০ দিনের মধ্যে একটি বিশেষ অভিযানের দাবি করেছিলেন।

পুলিশের একদল সদস্য ওই এলাকায় বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি চালায়। সেখানে অবস্থানরত ভিনদেশীদের কাগজপত্র পরীক্ষা করে তারা।

প্রথম দিনের অভিযানে কোনও অবৈধ বাংলাদেশি ধরা পড়েছে কি না, সে বিষয়ে এএনআইর প্রতিবেদনে কিছু বলা হয়নি।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছে, অভিযানে যেসব বাংলাদেশির কাছে ভারতে অবস্থানের কোনও নথিপত্র পাওয়া যাবে না, তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে।  

গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের জন্য ভিসা সঙ্কুচিত করে রেখেছে ভারত। পর্যটক ভিসা একেবারেই দেওয়া হচ্ছে না, চিকিৎসার জন্য গমনেচ্ছুদের ভিসা দেওয়া হলেও তা অত্যন্ত কম।

বাংলাদেশে অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে। তারমধ্যে গত ২৫ নভেম্বর হিন্দু ধর্মীয় নেতা চিন্ময় ব্রহ্মচারী গ্রেপ্তার হওয়ার পর উত্তেজনা আরও বাড়ে।

চিন্ময়ের মুক্তি দাবিতে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় হিন্দু সংগঠনের বিক্ষোভ থেকে বাংলাদেশ মিশনে হামলা চালানো হয়। তা নিয়ে দুই দেশের সরকারের মধ্যে বাদানুবাদের পাশাপাশি উভয় দেশে আবার পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিও চলছে, যার লক্ষ্য দূতালয়। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্ত্রি ঢাকায় এসে বৈঠক করে গেলেও উত্তেজনা এখনও স্তিমিত হয়নি।

এরমধ্যে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত রবিবার অবৈধ বিদেশিদের ধরতে অভিযানে নামার হুঁশিয়ারি দেয়। নাম বলা না হলেও অবৈধ ভারতীয় শনাক্তে এই অভিযানের সিদ্ধান্ত বলে অনেকের ধারণা।

এর দুদিন বাদেই দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর তার রাজ্যে অবৈধ বাংলাদেশিদের ধরতে অভিযানের নির্দেশনা দেন। তা মেনে দিল্লি পুলিশ অভিযান শুরু করল।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

হিন্দুরা ফিরতে চাইলে আসতে দিন : মমতা

ঢাকা-দিল্লি কূটনীতিক টানাপড়েন প্রতিবেশী দুই দেশের রাজনীতিকদের মধ্যেও ছড়িয়েছে। দুই দেশের নেতারাই এনিয়ে পাল্টাপাল্টি কথা বলে চলেছেন।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশের হিন্দুদের রক্ষায় নয়া দিল্লি সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করেছেন বলে এনডিটিভির বুধবারের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

ভারতের বাংলাদেশ লাগোয়া রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের আক্রান্ত হিন্দুদের রক্ষায় কেন্দ্রীয় সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে।

“আমরা সবার নিরাপত্তার দাবি জানাচ্ছি। আমরা চাইছি, কেন্দ্রীয় সরকার আরও তৎপর হোক। মানুষকে নিরাপত্তা দিন। যারা বাংলাদেশ থেকে ফিরতে চায়, তাদের আনার ব্যবস্থা করতে হবে।”

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশি হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে আসছে নয়া দিল্লি সরকার। তবে বাংলাদেশ সরকারের দাবি, নির্যাতনের খবরগুলো অতিরঞ্জিত এবং ভারতের সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে অপপ্রচার চলছে।

ভারতে ক্ষমতাসীন বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের নেতারা বাংলাদেশ নিয়ে বেশ সরব। তারা এনিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতার ওপর চাপ দিয়ে যাচ্ছে।

মমতা কেন্দ্রীয় সরকারকে দায় দিয়ে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার সীমান্ত বন্ধ না করায় বাংলাদেশিরা এদেশে আসছে।

“কোথাও ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বন্ধ হয়নি। যদি হতো, তাহলে আমরা নির্দেশনা পেতাম। অনেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে চলে আসছে। বিএসএফ কিছু কিছু জায়গায় ঠেকাচ্ছে, কিছু কিছু জায়গায় আসতেও দিচ্ছে।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত