জনসংখ্যার প্রায় ৫০ শতাংশেরও বেশি নারী। তাদের বাদ দিয়ে সবার অন্তর্ভুক্তিমূলক বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের আকাঙ্ক্ষা কখনোই পূরণ হওয়া সম্ভব না বলে অভিমত এসেছে এক আলোচনা সভায়।
সেখানে বক্তারা বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের মূল স্পিরিট ছিল সবার অন্তর্ভুক্তিমূলক বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের আকাঙ্ক্ষা। সেই আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে আন্দোলনে অসীম সাহসিকতার সঙ্গে ভূমিকা রাখা সর্বস্তরের নারীদের প্রতিনিধিত্ব রাষ্ট্রের সব পর্যায়ে দেখা যাচ্ছে না।
জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে শুক্রবার বিকালে ‘গণঅভ্যুত্থানে নারীদের সংলাপ, নারীরা কোথায় গেলো?’ শীর্ষক সভায় আলোচকেরা এসব কথা বলেন। এ সভার আয়োজন করে লড়াকু২৪ ও আম্পয়ারিং আওয়ার ফাইটার্স।
নারীরা যেন হঠাৎ কোথাও উধাও হয়ে গেছেন উল্লেখ করে এক বক্তা বলেন, অভ্যুত্থান পরবর্তী রাষ্ট্র যদি একটি বিশেষ লিঙ্গের, বিশেষ শ্রেণির, বিশেষ জাতি-ধর্ম পরিচয়ের নাগরিকের প্রতিনিধিত্বকারী হয়ে ওঠে, তবে তা শহীদ ও আহতদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানী করা হবে।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে দেশের সর্বস্তরের নারীদের উপস্থিতি ছিলো অভূতপূর্ব। নারীরা এ সময় যেমন রাজপথের লড়াইয়ে সক্রিয় থেকেছেন, তেমনি সোচ্চার থেকেছেন অনলাইনে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা যেমন আন্দোলনের সম্মুখভাগে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তেমনি শিক্ষার্থী-জনতার দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ঘরে-বাইরে-প্রবাসে প্রকাশ্য রাজপথে ও অনলাইনে সোচ্চার থেকেছেন নারীরা।
সমাজের অন্য সবার মতোই নারীদের এই সাহসী, নির্ভীক ভূমিকা ছাড়া ১৬ বছরের স্বৈরশাসন থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব ছিল না। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়েও নারীরা প্রকাশ্যে এবং নিভৃতে অবদান রেখে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন এক বক্তা।
আলোচনায় উপস্থিত আর এক বক্তা বলেন, “আমরা যারা গণঅভ্যুত্থানে আহতদের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি, তারা মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি স্বেচ্ছাসেবকদের অধিকাংশই নারী। এমনকি দেশ ও বিদেশ থেকে যারা আহতদের সহায়তায় অর্থ সাহায্য পাঠাচ্ছেন, তাদেরও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী।
“অথচ, গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে অসীম সাহসিকতার ভূমিকা রাখা সর্বস্তরের নারীদের প্রতিনিধিত্ব আমরা রাষ্ট্রের সব পর্যায়ে দেখতে পাচ্ছি না। যেন তারা হঠাৎ কোথাও উধাও হয়ে গেছেন।”
লড়াকু ২৪-এর সহযোদ্ধা কানিজ ফাতেমা মিথিলার সঞ্চালনায় সংলাপে বক্তব্য রাখেন শহীদ নাঈমা সুলতানার মা আইনুন নাহার, মাসুরা বেগম, ডা. অর্থি জুখরিফ, চ্যানেল ২৪ এর সাংবাদিক শামীমা সুলতানা লাবু, বরিশাল কলেজের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস নিপু, শিক্ষার্থী সামিয়া আক্তার জান্নাত, গার্মেন্টস কর্মী সাবিনা ইয়াসমিন, শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস, সুমাইয়া রিসু প্রমুখ।