দেনা পরিশোধের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় বাড়াতে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা চাইলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ।
রবিবার আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান।
ঢাকার আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কার্যালয় সম্মেলন কক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রার ২৫ শতাংশ পিছিয়ে পড়েছে এনবিআর।
এ প্রসঙ্গ টেনে অর্থ উপদেষ্টা ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, “সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের অনুরোধ আমাদের রাজস্ব আহরণে একটু সহায়তা করুন। জোর করে আপনার কাছ থেকে টাকা পয়সা আদায় করা নয়। যতটুকু আপনাদের দেনা থাকে সেটা আপনারা পরিশোধ করুন।
“আমরা আপনাদের আশ্বস্ত করি, দেনা পরিশোধ করতে গেলে কোনও রকম বেআইনি বা অযৌক্তিক কোনও চাহিদা আপনাদের কাছে করা হবে না।”
“অফিসিয়ালি তো অযৌক্তিক কিছু চাওয়া তো হবেই না, আবার অফিসে টেবিলের নিচে কোনও রকম অযৌক্তিক যদি কোনও দাবি থাকে, সেটাও করা হবে না”, যোগ করেন তিনি।
ব্যবসায়ীরা সহযোগিতা করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে উপদেষ্টা কাস্টমস কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, “রাজস্ব আহরণে সহায়তা করুন। তবে জোর করে চাপ সৃষ্টি করবেন না। পেশাদার আচরণ বজায় রাখুন।”
মূল্যস্ফীতির প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “আমরা মনে করি, বর্তমানে বাজারে জিনিসপত্রের যে দাম তাতে অবশ্যই কম আয়ের মানুষের কিছুটা কষ্ট হচ্ছে। সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে মূল্যস্ফীতি বাড়াচ্ছে না।
“আমরা মনে করি, দেশে বাজারে সব জিনিসের দাম যেভাবে একসাথে বাড়ে না, তেমনি সব জিনিসের দাম একসাথে কমে যাবে, এটাও আশা করি না।”
তিনি বলেন, “মাঝে মাঝে এমন আলোচনা শোনা যায়, যেন মনে হয় বাংলাদেশ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। দেশে কোনও কিছু ঠিক নেই—এমন ধারণা সৃষ্টি হয়।
“বলা হয় আলুর দাম কমেছে, পেঁয়াজের দামও কমেছে, তবে চালের দাম বেড়ে গেছে। এমনভাবে বলা হয়, যেন চালের দাম এক হাজার টাকা কেজি হয়ে গেছে।”
“পৃথিবীর কোনও দেশেই একসাথে সব পণ্যের দাম কমে না, আবার সব পণ্যের দাম একেবারে বাড়বে- এমন আশা করা যায় না।”
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান জানান, সারাবছরই অনলাইনে কর দেওয়া যাবে; তবে সরকার ঘোষিত আয়কর দিবসের পরে ২ শতাংশ হারে জরিমানা দিতে হবে।
তিনি বলেন, “অনলাইন ট্যাক্স রিটার্ন সাবমিট বন্ধ হবে না। ৩৬৫ দিনই লোকজন দিতে পারবে। ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত যারা ট্যাক্স রিটার্ন দেবেন, তাদের ট্যাক্স ক্যালকুলেশন এক রকম হবে। এরপর যারা দেবেন, তারাও অনলাইনে দিতে পারবেন, তাদের অটোমেটিক্যালি এক্সট্রা বার্ডেন চলে আসবে।
“যে ট্যাক্স বাকি থাকবে, সেটার ওপর প্রতি মাসে ২ শতাংশ। ম্যাক্সিমাম সিলিং ২৪ মাস। আমরা ৪৮ শতাংশের বেশি কারও কাছ থেকে ইন্টারেস্ট নেব না।”
চলতি বছর অনলাইনে ১২ লাখ রিটার্ন জমা পড়েছে, যা ১৪ লাখে উন্নীত হওয়ার আশা প্রকাশ করেন এনবিআর চেয়ারম্যান।