বাংলাদেশে আর কখনোই যেন ফ্যাসিবাদ ফিরে না আসে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
শুক্রবার ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে আয়োজিত জাতীয় সংলাপে তিনি এ আহ্বান জানান। রাজধানীর ফার্মগেইট কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে দুই দিনব্যাপী এ জাতীয় সংলাপের আয়োজন করেছে ‘ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ’।
অনুষ্ঠান ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্য প্রয়োজন জানিয়ে সবাইকে সংস্কারের মহাযজ্ঞে আনন্দের সঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়ার ডাক দেন।
দেড় দশক ধরে ক্ষমতা থাকা আওয়ামী লীগ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে আন্দোলনে ‘ফ্যাসিস্ট’ তকমা নিয়ে গত ৫ আগস্ট বিদায় নেয়। তারপর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার শুরু থেকে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন আয়োজন করার কথা বলে আসছে।
জাতীয় সংলাপে শিল্প উপদেষ্টা বলেন, “সাড়ে ১৫ বছরে লেয়ারের পর লেয়ার যে ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিভিন্ন জায়গায় বসানো হয়েছে- এক দিনে, দুই দিনে বা চার মাসে সেটা নিরসন সম্ভব নয়। এটার জন্য সমর্থন লাগবে, জনগণের প্রেসার লাগবে।”
নিয়ন্ত্রণ যেন হাতছাড়া না হয় সে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা দেখেছেন বিভিন্ন ঘটনা ঘটছে। আমার বিস্তারিত বলার দরকার নাই। বারে বারে জাতীয় পতাকাকে খামছে ধরার চেষ্টা করছে সেই পুরনো শকুন। প্রতিহতের জায়গা আমাদের বজায় রাখতে হবে। খালি ঐক্যের কথা বললাম, প্রতিহতের জন্য তৈরি থাকলাম না, নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেবেন না।
“যখন নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেবেন আপনাদের হাতের বাইরে চলে যাবে। সেই কারণেই আমাদের সকলের মাথায় চিন্তা থাকতে হবে আমরা একটা অসমাপ্ত জাতীয় মুক্তি সংগ্রামকে সমাপ্ত করার জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছি। আমরা একটা ফ্যাসিবাদের বাংলাদেশ ব্র্যান্ডকে পরাজিত করে আজকের বাংলাদেশে দাঁড়িয়েছি। আমরা যে বাংলাদেশ চাই, সেই বাংলাদেশে যেন কখনোই আর ফ্যাসিবাদ ফেরত না আসে।”
‘বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদের ব্র্যান্ডের নাম ছিল মুজিববাদ’ একথা উল্লেখ করে শিল্প উপদেষ্টা বলেন, “সেই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করতে যেয়ে বাংলাদেশের যেই তরুণ-যুবকরা জীবন দিয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন তারা আজকে কেমন বাংলাদেশ চান, তারা আজকে বাংলাদেশটাকে কীভাবে গড়ে তুলতে চান, বাংলাদেশের রাজনীতিটা কেমন হবে, সংবিধানটা কেমন হবে, নির্বাচনটা কেমন হবে শুধু সেটাতে আমরা থাকব।
“তার সঙ্গে এটাও বলব, উচ্চকক্ষ-নিম্নকক্ষ বা রিপ্রেজেনটেশন কেমন হবে শুধু সেটা না, স্থানীয় পর্যায়ে ক্ষমতার ভিত্তি কেমন হবে। সমস্ত ক্ষমতা কি সংসদ সদস্যদের দেওয়া থাকবে, না কি স্থানীয় পর্যায় স্থানীয় সরকারের ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে; যেখানে সাধারণ মানুষ, বাংলাদেশের খেটে খাওয়া মানুষের অবস্থান থাকবে। এই প্রক্রিয়াটাই বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের মধ্য দিয়ে আসবে।”