Beta
রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪
Beta
রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪

দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় উত্থান ডিএসইর প্রধান সূচকের   

ঢাকার একটি ব্রোকারেজ হাউসে পুঁজিবাজারের লেনদন পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
ঢাকার একটি ব্রোকারেজ হাউসে পুঁজিবাজারের লেনদন পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
Picture of বিশেষ প্রতিনিধি, সকাল সন্ধ্যা

বিশেষ প্রতিনিধি, সকাল সন্ধ্যা

দীর্ঘ দরপতনের পর আকর্ষণীয় ও তুলনামূলক সস্তা শেয়ারগুলোতে সুযোগ-সন্ধানী বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক বেড়েছে। অনেকেই স্বল্প-মেয়াদে লাভের আশায় এ ধরনের শেয়ার কিনছেন।

এছাড়া খাতওয়ারি কোনও কোনও শেয়ারে বিনিয়োগ বেড়েছে। এসব কারণে লেনদেন বেড়েছে দেশের পুঁজিবাজারে, যা এনেছে মূল্যসূচকের বড় উত্থান।  

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১২৩ দশমিক ৭১ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৪৯৭ দশমিক ৫৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।  এর আগে ২০২২ সালের ৩১ জুলাই ডিএসইএক্স বেড়েছিল ১৫৩ পয়েন্ট।

এদিন দেশের অন্য পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৩০৬ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৫ হাজার ৪৬৩ দশমিক ৫২ পয়েন্টে।  

কোরবানির ঈদের পর থেকেই পুঁজিবাজার ইতিবাচক ধারায় ফিরবে বলে আশা করা হচ্ছিল। বাজেট পাশের পর সেই আশা আবার জেগেচে।

গত ১৭ জুন দেশে কোরবানির ঈদ উদযাপিত হয়। আর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট পাস হয় ৩০ জুন।

নতুন অর্থবছর শুরু হয় ১ জুলাই সোমবার। তবে ওইদিন ব্যাংক হলিডে থাকায় পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ ছিল। বাজেট পাশের পর প্রথম লেনদেন হয় মঙ্গলবার। ওই দিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছিল ১১ পয়েন্ট। পরের দিন বুধবার এই সূচক বেড়েছে ৩৩ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট।

সেই ইতিবাচক ধারায় সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবারও সূচকের উল্লম্ফনে লেনদেন শেষ হয়েছে।

ঈদের তিন দিন (১৬ থেকে ১৮ জুন) এবং সাপ্তাহিক দুই দিনের (১৪ ও ১৫ জুন) ছুটির পর ১৯ জুন লেনদেন শুরু হয় পুঁজিবাজারে। ওই দিন ডিএসইএক্স বেড়েছিল ৪৩ দশমিক ৫৭ পয়েন্ট। সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছিল ৬১ দশমিক ২২ পয়েন্ট।

পরের দিন ২০ জুন ডিএসইএক্স ৮২ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৬০ শতাংশ বেড়ে ৫ হাজার ২৪৪ দশমিক ১২ পয়েন্টে দাঁড়ায়। সিএএসপিআই ১৭৮ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১৪ হাজার ৭৮৬ দশমিক ৮২ পয়েন্টে।

এরপর দু-একদিন ছাড়া প্রতিদিনই সূচকের পাশাপাশি লেনদেন বেড়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে দেশের পুঁজিবাজারে মন্দা চলছিল। ছোট-বড় সব বিনিয়োগকারীই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। অনেক বিনিয়োগকারী বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন।

এই অবস্থায় গত ৬ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রায় আট লাখ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।

পুঁজিবাজারে মন্দা কাটাতে কোনও দিকনির্দেশনা ছিল না নতুন বাজেটে; উল্টো মূলধনি মুনাফা বা ক্যাপিটাল গেইনের ওপর ছিল করের প্রস্তাব। এই অবস্থায় বাজেট পেশের পরও দরপতন অব্যাহত থাকে বাজারে।

বাজেট পেশের আগে ডিএসইসহ বাজার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের দাবি ছিল, ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে নতুন করে যেন কর আরোপ করা না হয়। কিন্তু বাজেট প্রস্তাবে পুঁজিবাজারে ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীদের ৫০ লাখ টাকার বেশি মুনাফায় কর আরোপের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী মাহমুদ আলী। এতে পুঁজিবাজারের সূচক পতন ধারায় ফেরে।  

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর থেকে পুঁজিবাজারে টানা দরপতন চলতে থাকে। এই সময়ে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকার বাজার মূলধন হারায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। পতন ঠেকাতে তিন শতাংশের সার্কিট ব্রেকার দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। তারপরও ধারাবহিক দরপতন ঘটতে থাকে দুই বাজারে।

বাজেট পেশের আগে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স পড়তে পড়তে ৫ হাজার ২৫০ পয়েন্টের নিচে নেমে এসেছিল। বাজেট প্রস্তাবের দিন ৬ জুন ডিএসইএক্স ছিল ৫ হাজার ২৩৭ দশমিক ৩২ পয়েন্ট।

ঈদের ছুটির আগে ১৩ জুন শেষ লেনদেন দিবসে ডিএসইএক্স ছিল ৫ হাজার ১১৭ দশমিক ৮১ পয়েন্ট।

বৃহস্পতিবার ডিএসইর অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস ২২ দশমিক ১৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২০৮ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে। ডিএস-৩০ সূচক ৩০ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯৫১ দশমিক ৩৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

এদিন ডিএসইতে ৭৭০ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন বুধবার লেনদেনে অঙ্ক ছিল ৫৩৯ কোটি ২৭ লাখ টাকা।

বৃহস্পতিবার ডিএসইতে মোট ৩৯৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৬৫টির। কমেছে মাত্র ১৩টির। আর অপরিবর্তিত ছিল ১৮টির দর।

এদিন সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। বুধবার লেনদেনের অঙ্ক ছিল ৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

সিএসইতে ২৪৭টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৯৯টির। কমেছে ৩১টির। আর অপরিবর্তিত ছিল ১৭টির দর।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত