Beta
শুক্রবার, ৫ জুলাই, ২০২৪
Beta
শুক্রবার, ৫ জুলাই, ২০২৪

‘প্রত্যয়’ নিয়ে কেন বিরোধিতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের

১ জুলাইয়ের মধ্যে প্রত্যয়সহ সর্বজনীন পেনশনের সব স্কিম বাতিল করা না হলে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষকরা। ছবি : ফেইসবুক থেকে নেওয়া
১ জুলাইয়ের মধ্যে প্রত্যয়সহ সর্বজনীন পেনশনের সব স্কিম বাতিল করা না হলে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষকরা। ছবি : ফেইসবুক থেকে নেওয়া
Picture of অনিক রায়

অনিক রায়

গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশে চালু করা হয় সর্বজনীন পেনশন। তখন এতে চারটি স্কিম রাখা হয়। প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা স্কিম ঘোষণার সাত মাস পর যুক্ত করা হয় নতুন স্কিম প্রত্যয়।

জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ তখন জানায়, দেশের চারশ বেশি স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ কর্মীদের বাধ্যতামূলকভাবে এই কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ফলে এ সব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবসরের পর মাসিক ভাতা পাবেন।

কিন্তু এই ঘোষণা আসার সঙ্গেসঙ্গেই এর বিরোধিতা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে প্রয়োজনে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দেন তারা। তাদের দাবি, এই স্কিমে বর্তমান ব্যবস্থার মতো অবসরের পর এককালীন অর্থ পাওয়া যাবে না। সরকারি কর্মকর্তাদের তুলনায় বৈষম্যের শিকার হবেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা বলছেন, যাদের জন্য এই পেনশন স্কিম ঘোষণা করা হলো তাদের সঙ্গে তো একবারও কথা বলা হয়নি। কথা না বলে আমলাদের এই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হলো। বিষয়টিকে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতি বলছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা।

মার্চ মাসে নতুন স্কিম ঘোষণা পর থেকেই বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের ব্যানারে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (৪ জুন) দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছেন। ১ জুলাইয়ের মধ্যে প্রত্যয়সহ সর্বজনীন পেনশনের সব স্কিম বাতিল করা না হলে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও এদিন দিয়েছেন শিক্ষকরা।

তবে পেনশন কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রত্যয় স্কিম কিছুটা নতুন আঙ্গিকের। বুঝতে সময় লাগছে। এটা শুরু হয়ে গেলে আর সমস্যা থাকবে না। এই স্কিমের ফলে নতুন যারা যুক্ত হবেন তারা যেন পেনশন পান তা নিশ্চিত করা হবে।

সঞ্চয়ের প্রতীকী ছবি

বিরোধিতা কেন

গত ১৩ মার্চ প্রত্যয় স্কিম ঘোষণার সঙ্গেসঙ্গেই এর বিরোধিতা করা শুরু করেন সারা দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। সেদিন সর্বজনীন পেনশন স্কিমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করার পর ১৯ মার্চ তা প্রত্যাখ্যান করে বিজ্ঞপ্তি দেয় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। এরপর ৩ এপ্রিল এক সভায় ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম’ প্রত্যাখ্যান করে প্রতিবাদ জানানো হয়।

সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিল না করায় ৩০ এপ্রিল থেকে ৭ মে পর্যন্ত দাবির পক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের স্বাক্ষর গ্রহণ করা হয়। ১ হাজার ৬১ জন শিক্ষক প্রত্যয় স্কিমে অন্তর্ভুক্তি বাতিলের পক্ষে স্বাক্ষর দেয় বলে জানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

প্রত্যয়সহ সর্বজনীন পেনশন স্কিমবিরোধী আন্দোলন শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, ঢাকার বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। কেন তাদের এই বিরোধিতা তা জানতে সকাল সন্ধ্যা কথা বলেছে ঢাকার বাইরের শিক্ষকদের সঙ্গে।

তাদেরই একজন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. অভিণু কিবরিয়া ইসলাম। বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালকও তিনি।

প্রত্যয় স্কিমের বিরোধিতার কারণ সম্পর্কে এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক বলেন, “এই নতুন স্কিমের ফলে নরমালি আমরা যেভাবে পেনশন পাই, সেভাবে আর পাওয়া যাবে না। এতে আমাদের পেনশনের জন্য চাঁদা দিতে হবে, সরকার একটা অংশ দিবে। তারপর আমরা পাব। এককালীন অর্থ যেটা পাওয়া যেত, তা এখন পাওয়া যাবে কি না- তাও তো কেউ জানে না।”

সরকারের কোনও পেনশন স্কিমের প্রতি মানুষ আর আস্থা রাখতে পারছে না বলে মনে করছেন অধ্যাপক অভিণু কিবরিয়া ইসলাম।

তিনি বলেন, “সরকারি আমলাদের বাইরে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করা হলো। সর্বজনীন হলে সেটি সবার জন্যই সমান উচিত। এই ব্যবস্থা বৈষম্য উসকে দেবে।

“পেনশনের নিরাপত্তা থাকাতেই অনেকে বিদেশে শিক্ষকতা না করে বাংলাদেশে এসে শিক্ষকতা করছে। কিন্তু এই অনিশ্চিয়তার কারণে এখন শিক্ষকতা পেশায় মানুষ যুক্ত হতে কম চাবে।”

জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ বলছে, পুরাতন যারা তারা আগের নিয়মে পেনশন পেলেও ১ জুলাই থেকে নিয়োগপ্রাপ্তরা এই (প্রত্যয়) স্কিমের আওতায় আসবে।

এতে প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বৈষম্য বাড়বে মন্তব্য করে অধ্যাপক অভিণু কিবরিয়া বলেন, “বৈষম্য তৈরি হওয়ার ফলে মেধাবীরা আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতে চাইবে না। তারা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোতেই বেশি আগ্রহ প্রকাশ করবে।”

তিনি বলেন, “একটি গণতান্ত্রিক দেশে যারা মূল স্টেক হোল্ডার তাদের সঙ্গে কথা না বলে আপনি কীভাবে একটি নতুন নীতি ছাপিয়ে দিতে পারেন। এটি গণতান্ত্রিক মনোভাবের পরিপন্থী।”

আলাদা কেন প্রত্যয় স্কিম

মার্চ মাসে প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২৪ সালের পহেলা জুলাই থেকে এসব প্রতিষ্ঠানে যারা যোগদান করবেন তাদের বাধ্যতামূলকভাবে সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমের আওতাভুক্ত করতে হবে। যাদের এখনও অন্তত ১০ বছর চাকরির সময়সীমা আছে তারাও চাইলে প্রত্যয় স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের আওতায় রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, বিআরটিসি, পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনসহ সব রাষ্ট্রীয় কর্পোরেশন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন ইনস্টিটিউট।

এই স্কিমে অংশগ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীর প্রাপ্ত মূল বেতনের ১০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা (দুটির মধ্যে যেটির পরিমাণ কম) কেটে নেবে। সমপরিমাণ অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা দেবে।

এরপর মোট অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত কর্মকর্তা বা কর্মচারীর কর্পাস হিসাবে জমা করবে। এ প্রক্রিয়ায় কর্মকর্তা-কর্মচারীর পেনশন ফান্ড গঠিত হবে। এই ফান্ডের অর্থ জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করবে এবং সেখান থেকে পাওয়া মুনাফা এবং চাঁদা হিসাবে জমাকৃত অর্থের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে পেনশন দেওয়া হবে।

জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ বলছে, আগে তহবিলে সংস্থার প্রদানকৃত অর্থ ছিল কর্মচারীর ‘কন্ট্রিবিউশন’ এর চেয়ে কম। কিন্তু প্রত্যয় স্কিমে প্রতিষ্ঠানকে কর্মীর সমপরিমাণ টাকা জমা দিতে হবে। এতে পেনশনার অধিক লাভবান হবেন বলছে পেনশন কর্তৃপক্ষ।

বর্তমানে স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ‘প্রদেয় ভবিষ্য তহবিল’-সিপিএফ এর মাধ্যমে অবসরকালীন সুবিধা পাচ্ছেন। এই ব্যবস্থায় মূল বেতন থেকে টাকা জমা রাখতে হয় তহবিলে। কর্মীরা জমা দেয় বেতনের ১০ শতাংশ এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান দিয়ে থাকে আট দশমিক ৩৩ শতাংশ। মোট তহবিলের বিপরীতে সরকার ১১ থেকে ১৩ শতাংশ হারে সুদ দিয়ে থাকে। এ টাকা পেনশনে যাওয়ার পর অবসরভোগীরা এককালীন অর্থ হিসেবে পেয়ে থাকেন।

আর সরকারি কর্মচারীরা ‘সাধারণ ভবিষ্য তহবিল’-জিপিএফের মাধ্যমে অবসরোত্তর সুবিধা পেয়ে থাকেন। তারা এককালীন অর্থের পাশাপাশি মাসিক ভাতা সুবিধা পান।

সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরোধিতার প্রসঙ্গে সকাল সন্ধ্যা কথা বলেছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কবিরুল ইজদানী খানের সঙ্গে।

তিনি বলেন, “এটি রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত। আমি এ বিষয়ে বেশি কিছু বলতে পারব না। কিন্তু এটা বলতে পারি, এতে কারো ক্ষতি হবে না। নতুন স্কিম তাই অনেকের বুঝতে সমস্যা হচ্ছে। সময় হলে সবাই বুঝবেন।”

১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা

সর্বজনীন পেনশন স্কিমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি বাতিলের দাবিতে মঙ্গলবার সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।

অর্ধদিবস কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আগামী ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা দেয় সংগঠনটি। কর্মবিরতি কর্মসূচির পর সংবাদ সম্মেলনেও অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. এম ওহিদুজ্জামান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফেডারেশনের মহাসচিব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি নিজামুল হক ভূঁইয়া।

তিনি বলেন, ২৪ জুনের মধ্যে ‘প্রত্যয় স্কিম’ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে বাংলাদেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ২৫, ২৬ ও ২৭ জুন অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালান করা হবে।

এরপর ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি এবং ১ জুলাই থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয় সংবাদ সম্মেলনে।

লিখিত বক্তব্যে ফেডারেশনের মহাসচিব নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, শিক্ষার্থীদের ক্লাস, পরীক্ষা কোনোভাবেই যেন বিঘ্নিত না হয়, সে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে অনেকটা প্রতীকী কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে এ বিষয়ে সরকারের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণের সব ধরনের চেষ্টা করা হয়েছে।

বিবৃতি প্রদান, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান এবং অবস্থান কর্মসূচির মত শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হলেও এখনও পর্যন্ত সরকারের তরফ থেকে কোনো ধরনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। শিক্ষকদের সাথে দায়িত্বশীল কোনো পক্ষ যোগাযোগও করেননি।

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পহেলা জুলাই থেকে কোনও ক্লাস-পরীক্ষা হবে না। কোনও শিক্ষক ক্লাসে যাবেন না, ডিন কোনও কার্যক্রম গ্রহণ করবেন না, কোনও সভা-সেমিনার হবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধ ঘোষণা করা হবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত