সংস্কৃতির বিকাশ ও বিকেন্দ্রীকরণের জন্য জুলাই গণভ্যুত্থানকে সামনে রেখে ‘রিমেম্বারিং মনসুন রেভল্যুশন’–এর আওতায় আটটি সিনেমা নির্মাণ করতে যাচ্ছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। ঢাকাসহ আট বিভাগীয় শহরে কর্মশালাভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে আটজন নির্মাতাকে।
আজ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়। এ সময় জানানো হয়,কর্মশালায় প্রশিক্ষিত জনবলকে নিয়েই চলচ্চিত্রগুলো নির্মাণ করবেন তারা।
নির্বাচিত নির্মাতারা হলেন অনম বিশ্বাস, হুমায়রা বিলকিস, নুহাশ হুমায়ূন, শঙ্খ দাশগুপ্ত, শাহীন দিল রিয়াজ, রবিউল আলম রবি, তাসমিয়াহ্ আফরিন মৌ ও মোহাম্মদ তাওকীর ইসলাম।
আট নির্মাতা নির্বাচনের জন্য বাছাই কমিটি করেছিল সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। বাছাই কমিটিতে ছিলেন গণমাধ্যম বিশ্লেষক ও অধ্যাপক সুমন রহমান; নির্মাতা তানিম নূর এবং নির্মাতা আদনান আল রাজীব।
সংবাদ সম্মেলন পরবর্তীতে সকাল সন্ধ্যার কাছে সিনেমাগুলো নির্মাণ প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলেছেন সুমন রহমান। তিনি জানিয়েছেন সম্পূর্ণরূপে সৃজনশীলতার স্বাধীনতা নিয়েই দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্মাতা ও কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীগণ কাজ করবেন।
তিনি বলেন, “আমরা কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। তারা তাদের নিজস্ব সৃজনশীলতা নিয়েই কাজটি করবেন।
“আমাদের শুধু প্রত্যাশা থাকবে, তাদের কাজে দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি, জুলাই গণভ্যুত্থান, দেশের অর্থনীতি, রাজনৈতিক বাস্তবতাগুলো ফুটে উঠবে।”
চলচ্চিত্রগুলোর গল্প ও নির্মাণে কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা চলচ্চিত্রগুলোর নির্মাণ প্রক্রিয়ার প্রতিটি ক্ষেত্রেই অবদান রাখবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
সুমন রহমান বলেন, “গল্প নির্মাণ ও সিনেমার ন্যারেশান তৈরিতে নির্মাতারা কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের যুক্ত করবেন। শুধু তাই নয়, কেউ গল্পে, চিত্রনাট্যে কেউ প্রিপ্রোডাকশান এবং পোস্ট প্রোডাকশানে ভূমিকা রাখবেন।”
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানিয়েছেন এ প্রকল্পের মাধ্যমে আট বিভাগীয় শহরে কর্মশালা হবে।
তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, এটা উন্মাদনা তৈরি করবে। আমাদের মূল লক্ষ্য দেশজুড়ে এ উন্মাদনা তৈরি করা। ওই সব শহর থেকে নির্মাতারা উঠে আসবে ও বাংলাদেশে সিনেমায় নেতৃত্ব দেবে, সেটা আমাদের জন্য গর্বের মুহূর্ত হবে।”
সুমন রহমান জানান, গুগল ফরমে আগ্রহী ব্যক্তিরা আবেদন করতে পারেন। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত ব্যক্তিদের সরাসরি সাক্ষাৎকার নেওয়ার পর মার্চের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে। জুনে সিনেমা নির্মাণ করা হবে।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকীও তার বক্তব্যে বলেন, “সরকার ফিল্মমেকারদের কোনো প্রেসক্রিপশন দিচ্ছে না।
“আমরা চাইও না, তারা কোনো প্রোপাগান্ডা ছবি বানাক। আমরা চাই, এমন সিনেমা বানাক, যেটা পিস অব আর্ট হবে। কাজটা নিয়ে নিজেরাই গর্ব বোধ করবে। আমি বিশ্বাস করি, এমনটা ঘটলেই আমরা যে ওয়েভ তৈরি করতে চাইছি, সেটার আসল কাজ হয়ে যাবে।”
এসব সিনেমার অর্থায়ন করবে সরকার। তবে সিনেমা প্রতি কত অর্থ দেওয়া হবে, সেটা পরবর্তী সময়ে নির্ধারণ করা হবে।
চলচ্চিত্রগুলো মুক্তি পাবে আসন্ন জুলাইয়ে। প্রেক্ষাগৃহ এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও মুক্তি পাবে সিনেমাগুলো।