Beta
বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪

দেশে খুলেছে ফেইসবুক-টিকটক-হোয়াটসঅ্যাপ

ss-fb-whatsapp-tiktok-31072024
[publishpress_authors_box]

১৪ দিন পর বাংলাদেশে খুলে দেওয়া হয়েছে ফেইসবুক, টিকটক, ইনস্টাগ্রাম, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপসহ বন্ধ থাকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।

বুধবার দুপুর ২ টার পর থেকে স্বাভাবিক নিয়মে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করে এসব অ্যাপে প্রবেশ করা যাচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো বাংলাদেশের সংবিধান ও নিজেদের কমিউনিটি গাইডলাইন মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর দুই সপ্তাহ পর বাংলাদেশে তাদের দুয়ার ফের খোলা হলো।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতার মধ্যে গত ১৭ জুলাই রাতে মোবাইল ইন্টারনেট এবং ১৮ জুলাই রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে গত ২৩ জুলাই প্রথমে সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড এবং পরে ২৮ জুলায় মোবাইল ইন্টারনেট চালু করে দেওয়া হলেও বন্ধ ছিল ফেইসবুকসহ সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমগুলো।

যোগাযোগমাধ্যমগুলো খোলার আগে সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মেটার চারটি প্ল্যাটফর্মের (ফেইসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম ও মেসেঞ্জার) প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনলাইনে এবং টিকটকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিটিআরসি কার্যালয়ে বৈঠক করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

তবে ইউটিউব বৈঠকে অংশ না নিয়ে সময় চেয়ে ই-মেইল বার্তা পাঠায়।

বৈঠকে শেষে ব্রিফিংয়ে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “আজকে আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে বিটিআরসিতে ডেকেছিলাম। সশরীরে আসতে না পারায় মেটার চারটি প্ল্যাটফর্ম অর্থাৎ ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম ও ম্যাসেঞ্জারের পক্ষ থেকে মেটার প্রতিনিধি রেজান সারোয়ার ভার্চুয়ালি অংশ নেন। আর টিকটকের প্রতিনিধি সাইদুর রহমান সশরীরে অংশ নেন।

“আমরা প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে দেখিয়েছি কীভাবে তারা নিজেরাই নিজেদের গাইডলাইন মানছেন না। সেগুলো দেখে তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, ভবিষ্যতে এগুলো মেনে চলা হবে। বাংলাদেশের সংবিধান এবং তাদের যে কমিউনিটি গাইডলাইন রয়েছে, তা অনুসরণ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

পলক জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর ওপর যে বিধিনিষেধ ছিল, সেগুলো তুলে দিতে বৈঠক শেষেই বিটিআরসিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এগুলো স্বাভাবিকভাবে ব্যবহার করা যাবে।

ব্রিফিং থেকে জানানো হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতার অসংখ্য ভিডিও ফেসবুক, টিকটকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। একই সঙ্গে এ পরিস্থিতিতে ছড়িয়ে দেওয়া হয় ভুয়া, গুজব ও অপপ্রচার এবং যৌন হয়রানিমূলক কনটেন্টও। সরকারের পক্ষ থেকে বিটিআরসি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর কাছে এসব ভিডিও অপসারণের অনুরোধ করেছিল।

প্রতিমন্ত্রী জানান, সরকারের অনুরোধ রেখে সবচেয়ে বেশি ভিডিও সরিয়েছে টিকটক। তারা গত ১০ দিনে সহিংসতা, ভুয়া ও হয়রানিমূলক ৬৭ শতাংশ ভিডিও টেকডাউন (অপসারণ) করেছে। আর ইউটিউব অপসারণ করেছে ২০ শতাংশ ভিডিও। সরকারের অনুরোধে সাড়া দিয়ে সবচেয়ে কম ভিডিও অপসারণ করেছে মেটা বা ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। তারা নিজেদের প্ল্যাটফর্ম থেকে মাত্র ১৩ শতাংশ ভিডিও সরিয়েছে।

এসব তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা টিকটকের কাছে ৭ লাখ ভিডিও সরানোর অনুরোধ করেছিলাম। তারা অনুরোধ করা ৭ লাখ ভিডিওর মধ্যে ৬৭ শতাংশ কনটেন্ট রিমুভ করেছে। ফেসবুকের কাছে যে সংখ্যক ভিডিও টেকডাউনের অনুরোধ ছিল, তার মধ্যে তারা ২০ শতাংশ সরিয়েছে।”

এসময় দেশের নাগরিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আপনারা কোনও গুজব কিংবা মিথ্যা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না। আপনারা যদি আমাদের কোনও কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়ে থাকেন, আমাদের কোনও আচরণে বা কথায় যদি আপনারা মনঃক্ষুণ্ণ হয়ে থাকেন, আপনারা আপনাদের মত প্রকাশ করবেন, সমালোচনা করবেন। সেই স্বাধীনতা আমাদের আছে। কিন্তু কেউ কোনও সহিংসতাকে উৎসাহ দেবেন না, কোনও মিথ্যা অপপ্রচারকে যাচাই বাচাই না করে বিক্ষুব্ধ হবেন না, সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেবেন না।

“যেকোনো গঠনমূলক সমালোচনা সোশ্যাল মিডিয়ায় হোক, সামনাসামনি হোক, গালাগালিও কিন্তু আমরা সহ্য করব। সব প্লাটফর্মে আমরা অ্যালাও করছি। কিন্তু একটু সতর্কভাবে আমাদের আচরণটা করা দরকার। আমাদের কোনও কথা, কোনও কন্টেন্ট সহিংসতাকে উসকে দিতে পারে।”

একটি চক্র সুযোগ পেলেই বাংলাদেশের জনগণের সম্পদ নষ্টের, প্রাণহানির চেষ্টা করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “তাই আসুন আমরা ইন্টারনেটের সর্বাত্মক ইতিবাচক ব্যবহার করি, নেতিবাচক ব্যবহার থেকে বিরত থাকি। সত্য মিথ্যা যাচাই আগে, ইন্টারনেটে শেয়ার পরে।”

বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ড. মো. মুশফিকুর রহমান, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদ, মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুস্তাফিজুর রহমান।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত