বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারত প্রচারণা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এখনই এ বিষয়ে সতর্ক না হলে বড় বিপদে পড়তে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
বুধবার সকালে ঠাকুরগাঁওয়ের কালিবাড়ি এলাকার নিজের বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশের অর্জনবিরোধী প্রচার চালানো হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সঙ্গে যেমন ভালো কাজের সম্পর্ক আছে, তেমনই ভয়ংকর কাজেরও সম্পর্ক আছে। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি প্রবণতা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের যে অর্জন, সেটা ধ্বংস করার জন্য কিছু ব্যক্তি সুনির্দিষ্টভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক হতে হবে।
“আমরা এই মুহূর্তে আর একটি বিপর্যয় গ্রহণ করতে পারব না। আমাদের মাথার ওপরে বিপদ আছে, ফ্যাসিবাদের প্রধান হোতা ভারতে অবস্থান করছেন। ভারত কিন্তু বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটা প্রচারণা চালিয়েই যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকা উচিত বলে মনে করি। না হলে জাতি হিসেবে আমরা অনেক বড় বিপদের সম্মুখীন হব।”
আওয়ামী লীগ সরকার সফলভাবে জাতিকে বিভক্ত করে ফেলেছে এমন অভিযোগও করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এই বিভক্তিটা দূর করে একটা ঐক্যবদ্ধ জাতি চাই। গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় বিভিন্ন মত থাকবে। তবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, মানুষের অধিকার—এই মৌলিক বিষয়ে ঐক্য থাকতে হবে। জাতি হিসেবে আমাদের অসহিষ্ণু হলে চলবে না। সহনশীল হতে হবে।
“১৭ বছরের জঞ্জাল সরানো ১৭ দিনেও সম্ভব না, ১৭ মাসেও সম্ভব না। তাই এই সরকারকে সময় দিতে হবে। তবে তাদের সব কিছু সংস্কারে হাত দেওয়ার খুব বেশি প্রয়োজন নেই। সেটা নির্বাচিত যে পার্লামেন্ট আসবে, সেই পার্লামেন্টই করবে।”
সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনী ব্যবস্থার দাবি নাকচ করে দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “এই নির্বাচনব্যবস্থা আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। দেশের প্রেক্ষাপটে এই ব্যবস্থা সম্ভব নয়।”
এসময় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনশীল করতে সরকারকে কিছুদিন সময় দেওয়ার পক্ষে মত দেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, “এখন যেটা দরকার, সহনশীলতার সঙ্গে জনগণ যেটা চায়, সেটা জানা। আমরা যাচাই করে দেখেছি জনগণ চায়, সবার অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ নির্বাচন। এই নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে যত রকমের সংস্কার দরকার, সেটা করা প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি।
“তাই আমরা বলে আসছি যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। আর তার রোডম্যাপটা সরকারকে দিতে হবে।”
অন্তর্বর্তী সরকারে উত্তরাঞ্চল থেকে উপদেষ্টা করার দাবিতে বিক্ষোভ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি মির্জা ফখরুল। তার মতে, এটা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার এখতিয়ার। তিনি তার মেধা, বুদ্ধি, বিচক্ষণতা দিয়েই তা বিবেচনা করবেন।
এর আগে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি কার্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমান, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলাম, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলীসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।