Beta
সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Beta
সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
২০২৩-২৪ অর্থবছর

চূড়ান্ত হিসাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪.২২%  

দেশের অর্থনীতি বিষয়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা। ছবি : পিআইডি
দেশের অর্থনীতি বিষয়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা। ছবি : পিআইডি
[publishpress_authors_box]

চূড়ান্ত হিসাবে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি বেশ খানিকটা কমেছে। মাথাপিছু আয়ও কমেছে। সাময়িক হিসাবে গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ। চূড়ান্ত হিসাবে তা ১ দশমিক ৫৬ শতাংশীয় পয়েন্ট কমে ৪ দশমিক ২২ শতাংশে নেমে এসেছে।

মাথাপিছু আয় কমে ২ হাজার ৭৩৮ ডলারে নেমে এসেছে। সাময়িক হিসাবে তা ছিল ২ হাজার ৭৮৪ ডলার।

রবিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি : সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যত করণীয়’ বিষয়ক সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সভা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম বলেন, “এই সভায় ছয় মাসের অর্থনীতি নিয়ে রিভিউ করা হয়েছে। এই মাসে কী অর্জন হয়েছে; সামনে কী কী চ্যালেঞ্জ আছে, সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”

“সভায় অর্থ উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টারা উপস্থিত ছিলেন। এতে জানানো হয়, চূড়ান্ত হিসাবে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে দেশে ৪ দশমিক ২২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। মাথাপিছু আয় হয়েয়েছে ২ হাজার ৭৩৮ ডলার।”

“জিডিপি আকার দাঁড়িয়েছে ৪৫০ বিলিয়ন ডলার।”

২০২৩-২৪ অর্থ বছর শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে; শেষ হয় ২০২৪ সালের ৩০ জুন। ওই অর্থ বছর শেষ হওয়ার সাত মাস নয় দিন পর জিডিপি প্রবৃদ্ধি, আকার ও মাথাপিছু আয়ের চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশ করল সরকার।

এতদিন এক অর্থ বছরে দুই বার জিডিপির তথ্য প্রকাশ করত সরকারের হিসাব গণনাকারী সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। সংশ্লিষ্ট অর্থবছরের প্রথম ছয়-সাত মাসের তথ্য–উপাত্তের ভিত্তিতে প্রথমে সাময়িক হিসাব দেওয়া হত। পরে পুরো বছরের তথ্য নিয়ে প্রকাশ করা হত জিডিপির চূড়ান্ত হিসাব।

রবিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বিবিএসের সেই চূড়ান্ত হিসাবই প্রকাশ করেছেন।

এর আগে গত বছরের ২১ মে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জিডিপির সাময়িক হিসাব প্রকাশ করে পরিসংখ্যান ব্যুরো। তাতে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ হয়েছে বলে জানানো হয়।

অর্থবছরের সাত মাস (২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি) পর্যন্ত পাওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচকের ওই তথ্য প্রকাশ করেছিল বিবিএস।

সাময়িক হিসাবে ওই সময় বিবিএস জানিয়েছিল, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে জিডিপি আকার হয়েছে ৪৫৯ বিলিয়ন ডলার। মাথাপিছু আয় হয়েছে ২ হাজার ৭৮৪ ডলার।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরেছিল তখনকার সরকার। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থ বছর; শেষ হবে আগামী ৩০ জুন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার তাদের অর্জনের খাত হিসাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধিকে বরাবরই দেখিয়ে আসছে।

২০০৮-০৯ অর্থবছরে দেশে ৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা সর্বপ্রথম ৮ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়; পরে সংশোধিত হিসাবে তা অবশ্য ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশে নেমে আসে। বাংলাদেশের ইতিহাসে ওটাই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি।

তার পরের বছর কোভিড মহামারির ধাক্কায় তা ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশে নেমে আসে। ২০২০-২১ অর্থবছরে তা আবার বেড়ে ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশে উঠেছিল। পরের বছর ৭ শতাংশ ছাড়ালেও গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে আবার ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশে নেমে আসে।

এদিকে গত ৬ জানুয়ারি চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) জিডিপি প্রবৃদ্ধির তথ্য প্রকাশ করেছে পরিসংখ্যান ব্যুরো। তাতে দেখা যায়, এই প্রান্তিকে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ১ দশমিক ৮১ শতাংশ। যা গত অর্থবছরের একই প্রান্তিকের চেয়ে ৪ দশমিক ২৩ শতাংশীয় পয়েন্ট কম।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ৬ দশমিক শূন্য চার শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল দেশে।

রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ব্যবসা-বাণিজ্য শ্লথগতির কারণে জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ধস নেমেছে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত