কক্সবাজারের পাঁচ জেলে এক মাস আগে নাফ নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হন। ভুক্তভোগীদের স্বজন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সে সময় জানান, মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সদস্যরা তাদের তুলে নিয়ে গেছে বলে তারা খবর পেয়েছেন। দুদিন বাদে নিখোঁজ জেলেদের একজনের মরদেহ নদীতে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া গেলও বাকি ৪ জনের হদিস মেলেনি গত এক মাসেও।
তারা হলেন- কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের পূর্ব ফারিরিবিল এলাকার মনজুর আলমের ছেলে মোহাম্মদ ইউসুফ, নুর মোহাম্মদের ছেলে লুৎফুর রহমান, জিয়াবুল হকের ছেলে সাইফুল ইসলাম ও মুহাম্মদ আবদুল্লাহর ছেলে ইউছুফ জালাল।
তাদের সঙ্গে গত ১৩ নভেম্বর বিকালে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন পালংখালীর আঞ্জুমানপাড়ার প্রয়াত মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে ছৈয়দুল বশরও। পরদিন ১৪ নভেম্বর সবার একসঙ্গে ঘরে ফেরার কথা থাকলেও তারা ফেরেননি। এর মধ্যে ১৬ নভেম্বর ছৈয়দুল বশরের লাশ নদীতে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়।
নিখোঁজ থাকা জেলে ইউসুফের বাবা মনজুর আলম জানান, নভেম্বরের ১৩ তারিখের পর থেকে ছেলের কোনও খোঁজ তিনি পাননি। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কিছু জানানো হয়নি। ছেলে জীবিত আছে নাকি মারা গেছে, এ নিয়ে উদ্বেগে আছে তার পরিবার।
আরেক জেলে সাইফুল ইসলামের বাবা জিয়াবুল হক তার ছেলে বেঁচে আছে কি না তা নিয়েই সন্দিহান।
তিনি বলেন, “আরাকান আর্মির সদস্যরা আমার ছেলেসহ সবাইকে মেরে ফেলেছে বলে শোনা গেছে। এর মধ্যে একজনের মরদেহও পাওয়া গেছে। তাহলে কি সবাইকে হত্যার বিষয়টি সত্য? না হলে এক মাস ধরে কেন কোনও খবর পাওয়া যাচ্ছে না?”
এ বিষয়ে পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, জেলে ৪ জনকে ফেরত আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হলেও সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। এই ৪ জেলে কোথায় আছে, তা বলা যাচ্ছে না। তাদের সন্ধান পেতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উচিত আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ করা।
এর আগে গত ১৬ নভেম্বর এক জেলের লাশ উদ্ধারের পর চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছিলে, নাফ নদীতে মাছ ধরতে যাওয়া পাঁচ জেলেকে ১৪ নভেম্বর মিয়ানমারের আরাকান আর্মির সদস্যরা ধরে নিয়ে গেছে বলে খবর পাওয়া যায়। দুদিন পর একজনের লাশ পাওয়া গেল।
জানতে চাইলে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) যারীন তাসমিন তাসিন বলেন, “নিখোঁজ জেলেদের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ নিয়ে আমরা কাজ করছি।”