Beta
শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫

ফর্সা হতে গ্লুটাথিয়ন ইনজেকশনে ‘না’ করছে ফিলিপিন্স

glutathione-130524
[publishpress_authors_box]

গায়ের রঙ ফর্সা করতে বাংলাদেশেও অন্তত দু-এক বছর ধরে গ্লুটাথিয়ন ইনজেকশনের চাহিদা বেড়েছে।

ফেইসবুকে নানা ব্র্যান্ড প্রমোশনকারী কনটেন্ট ক্রিয়েটর অথবা মেকআপ আর্টিস্টরা বিজ্ঞাপন করতে গিয়ে এবং ব্যক্তিগতভাবেও গ্লুটাথিয়ন ইনজেকশন নিচ্ছেন।

এমনকি গ্লুটাথিয়ন নিয়ে ফর্সা হতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রাজধানীতে ছুটে আসছেন নারীরা; এসব নিজেদের ফেইসবুক পাতায় ভিডিও আকারে আবার কখনও লাইভ  প্রচার করছে  গ্লুটাথিয়ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।   

সৌন্দর্য চর্চায় হরেদরে গ্লুটাথিয়ন ইনজেকশনের ব্যবহার নিয়ে দেশে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ থেকে অধিদপ্তরের কোনো বিশেষ নির্দেশনা নেই।

অথচ ফিলিপিন্সের স্বাস্থ্য বিভাগ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ত্বক ফর্সা করতে গ্লুটাথিয়ান ইনজেকশন সেখানে অনুমোদিত নয়।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে এক ঘোষণায় ফিলিপিন্সের স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বলা হয়, “সিসপ্লাটিন কেমোথেরাপি সহায়ক চিকিৎসা হিসেবে ইনজেকশন দিয়ে গ্লুটাথিয়ন দেওয়া অনুমোদন করে ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) ফিলিপিন্স।

“কিন্তু গায়ের রঙ ফর্সা করার জন্য গ্লুটাথিয়ন ইনজেকশন নেওয়া এফডিএ থেকে অনুমোদিত নয়।”

মূত্রথলি, ডিম্বাশয় এবং  অণ্ডকোষের ক্যান্সার ছড়িয়ে গেলে তখন চিকিৎসা দিতে ওষুধ হিসেবে অ্যান্টিনিওপ্লাস্টিক এজেন্ট সিসপ্লাটিন প্রয়োগ করা হয়।  

ফিলিপিন্সের এফডিএর প্রজ্ঞাপন নম্বর ২০১৯-১৮২ অনুসারে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এই ইনজেকশনের ব্যবহার নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনো ক্লিনিকাল পরীক্ষার গবেষণা পাওয়া যায়নি।

ত্বক ফর্সা করতে কী পরিমাণ এবং কতদিন ধরে এই ইনজেকশন নিতে হবে তা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অনুমোদিত নির্দেশনাও নেই।

এফডিএ থেকে অনুমোদন নিয়ে কোনো ওষুধ বাজারে এলে এরপর তা আর নজরদারিতে রাখা সম্ভব হয় না বলে সবাইকে সতর্কও করছে ফিলিপিন্সের স্বাস্থ্য বিভাগ।  

রোগীসেবা দিতে চিকিৎসকদের  দেশটির প্রফেশনাল রেগুলেশন কমিশন থেকে লাইসেন্স দেওয়া হয়; কিন্তু চিকিৎসক রোগীকে কী ওষুধ দিচ্ছেন তাতে স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়ন্ত্রণে থাকে না।  

এ কারণে সতর্ক করতে এফডিএ বলছে, অনেক সময় ইনট্রাভেনাস ভিটামিন সি আর গ্লুটাথিয়ন ইনজেকশন এক সঙ্গে দেওয়া হয়; এতে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

সৌন্দর্যচর্চায় গ্লুটাথিয়ন ইনজেকশন দেওয়ার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নিয়েও হুঁশিয়ার করেছে এফডিএ।

এতে করে যকৃত, কিডনি এবং স্নায়ুতন্ত্রে বিষক্রিয়াও হতে পারে বলে জানাচ্ছে ফিলিপিন্সের এই সরকারি সংস্থাটি।

এছাড়া দেখা দিতে পারে স্টিভেনস জনসন সিনড্রম নামে ত্বক ও শরীরের ভেতরের দিকের আবরণে বিরল কিন্তু গুরুত্বর এক অসুখ; এতে গায়ে ফুসকুড়ি উঠতে পারে এবং চামড়ার রঙ পাল্টে যেতে পারে।   

“গ্লুটাথিয়নের কারণে মেলানিন উৎপাদনে তারতম্য হতে পারে। আর এ কারণে ত্বকের ক্যান্সার হওয়ার  সম্ভাবনাও আছে।”

রোগী যদি সনদপ্রাপ্ত চিকিৎসকের হাতে গ্লুটাথিয়ন ইনজেকশন না নিয়ে থাকেন, তাহলে জীবাণুমুক্ত ইনজেকশনের বদলে বারবার ব্যবহার হওয়া ইনজেকশনের সুযোগ রয়েছে। আর এতে করে এইচআইভি, হেপাটাইটিস সি এবং বি রোগের ভয় থাকে।

যদি কোনো রোগী মনে করেন প্রেসক্রিপশনে গ্লুটাথিয়ন ইনজেকশন লেখা চিকিৎসকের ঠিক হয়নি, তাহলে আইনবিদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দিচ্ছে ফিলিপিন্সের স্বাস্থ্য বিভাগ। 

যদি ইনজেকশন নেওয়ার পর কোনো অসুস্থতা দেখা দেয় তাহলে চিকিৎসা নেওয়ার পাশাপাশি এফডিএর কাছে অভিযোগ জানানোরও আহ্বান করা হয়েছে।   

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত