ঢাকার মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনটিসিবি) ভবনের সামনে পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
মাধ্যমিকের পাঠ্যবইয়ে ‘আদিবাসী’শব্দসংবলিত গ্রাফিতি পুনর্বহালের দাবিতে বুধবার এনটিসিবি ভবনের সামনে কর্মসূচি পালন করতে যায় ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’ নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা। একই দিন সকালে পাঠ্যবইয়ে ‘আদিবাসী’ শব্দ রাখা এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানবিরোধী অখণ্ড ভারতের কল্পিত গ্রাফিতি সংযোজনের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তিসহ ৫ দফা দাবিতে ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ নামের একটি সংগঠন এনসিটিবি ভবন ঘেরাও করে।
দুই পক্ষের কর্মসূচি চলাকালে ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র সদস্যদের ওপর হামলা চালানো হয়। পাহাড়ের প্ল্যাটফর্মটির নেতারা বলেন, তাদের ওপর স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি হামলা চালিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায়, এই হামলার নিন্দা জানানো হয়। একই সঙ্গে এই হামলার তদন্তের কঠোর নির্দেশও দেওয়া হয়।
সরকারের ওই বার্তায় বলা হয়, “এ ঘটনায় এরই মধ্যে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।”
বার্তায় উল্লেখ করা হয়, “জুলাই বিপ্লবের সত্যিকারের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে, সরকার স্পষ্টভাবে পুনর্ব্যক্ত করছে যে বাংলাদেশে সহিংসতা, জাতিগত বিদ্বেষ এবং ধর্মান্ধতার কোনও স্থান নেই। যারা ঐক্য, শান্তি ও আইন-শৃঙ্খলার বিনষ্ট করবে, তাদের বিরুদ্ধে কোনও ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।”
এর আগে বুধবারই হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছিল জাতীয় নাগরিক কমিটি।
সেখানে বলা হয়, “মতিঝিলে এনসিটিবি ভবনের সামনে স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি নামের সংগঠনের হামলায় বিভিন্ন জাতিসত্তার নাগরিকেরা মারাত্মক আহত হয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যাসহ আরও অনেকেই বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
“হামলার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সরব ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়নি। তারা সক্রিয় ভূমিকা পালন করলে এ ধরনের ন্যক্কারজনক হামলা দেখতে পেতাম না। মিছিল কিংবা সমাবেশে হামলা পতিত নিষিদ্ধ ফ্যাসিবাদী সংগঠন ছাত্রলীগের কায়দার বহিঃপ্রকাশ।”
ভিডিও ফুটেজ তদন্ত করে এই হামলার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে দ্রুত আইনের আওতায় আনতেও আহ্বান জানায় কমিটি।