Beta
বুধবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
বুধবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২৫

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নেয়নি : রিজওয়ানা

বুধবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সচিবালয়ের সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি : পিআইডি
বুধবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সচিবালয়ের সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি : পিআইডি
[publishpress_authors_box]

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনও সিদ্ধান্ত নেই বলে জানিয়েছেন এই সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

বুধবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান বলে বাসসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

রিজওয়ানা বলেন, “দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে অর্ন্তর্বতী সরকার এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে নির্বাচনে কোন দল অংশগ্রহণ করবে আর কোন দল অংশগ্রহণ করবে না, এটাতো আমরা বলে দেব না। যে দল অংশগ্রহণ করতে চায় সে দল করবে। কোন দল কেমন করে অংশগ্রহণ করবে সেটা তো সেই দলকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”

আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে বাধা নেই বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার যে বক্তব্যে দিয়েছেন, সে বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, “এ সমস্ত কথা আসলে নির্বাচন কমিশন থেকেই আসতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে যদি আপনারা কোনও অবস্থান দেখতেন– সরকার এই দল নিষিদ্ধ করছে, তখন আপনারা এই প্রশ্নটা সরকারকে করতে পারতেন। তাছাড়া কোন দল নির্বাচন করবে না করবে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আসলে নির্বাচন কমিশন দেবে।”

আওয়ামী লীগের নির্বাচনে আসা বা না আসা সরকারের ওপর নির্ভর করছে কি-না জানতে চাইলে রিজওয়ানা হাসান বলেন, “এখন পর্যন্ত সরকার এই বিষয়ে কোনও মতামত জানায়নি, কোনও অবস্থান নেয়নি যে আওয়ামী লীগকে আমরা নিষিদ্ধ করব। এ রকম কোনও অবস্থান নেয়নি। আমরা যেটি দেখেছি যে হাইকোর্টে এ রকম একটি বা দুটি পিটিশন হয়েছিল, সেগুলোর একটি প্রত্যাহার করা হয়েছে, আরেকটি হাইকোর্ট রিজেক্ট করে দিয়েছে।”

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে ভারতের অবস্থানরত শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানো নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, “আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাকে ফেরত পাওয়ার ব্যাপারে আমরা আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছি। ভারতের সঙ্গে আমাদের একটি চুক্তি আছে, সেটিও আমরা বলেছি। সেখানে একটি ব্যতিক্রম আছে, সেটিও আমরা বলেছি।”

তিনি বলেন, “ভারত কী অবস্থান নেবে– একটি অবস্থান প্রাথমিকভাবে নেওয়া যায়, আবার চূড়ান্ত একটি অবস্থানের দিকেও দেশগুলো যেতে পারে। সেগুলো ভবিষ্যতের জন্যই আমাদের ছেড়ে দিতে হবে। কিন্তু আমাদের অবস্থান হচ্ছে– আমরা চাইব শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বিচার করতে। যদি উপস্থিতিতে বিচার না হয় তাহলে যেভাবে বিচার প্রক্রিয়া করতে হয় সেভাবেই করব।”

নতুন বছরে অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার হবে তিনটি– একথা জানিয়ে এই উপদেষ্টা বলেন, “প্রথমত জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ড ও বর্বরতার বিচার নিশ্চিত করা; দ্বিতীয়ত, যে সমস্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো আসবে সেগুলোর বিষয়ে রাজনৈতিক মতৈক্য গড়ে সেগুলো সংস্কার করা; আরেকটি হচ্ছে নির্বাচনের একটা পরিষ্কার রোডম্যাপ ডেভেলপ করা।”

সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড : উচ্চ পর্যায়ের কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে ‘সরকার সন্তুষ্ট’

সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটির দাখিল করা প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে ‘সরকার সন্তুষ্ট’ বলেও সচিবালয়ে বুধবার সাংবাদিক জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এরপরও এটি যে দুর্ঘটনা সে বিষয়ে শতভাগ নিশ্চিত হতে কিছু নমুনা বিদেশে নিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

আগুন লাগার ঘটনাটি ‘দুর্ঘটনা’ হলে আলামত বিদেশে পাঠানো হচ্ছে কেন– এমন প্রশ্নে রিজওয়ানা হাসান বলেন, “আপনি যে প্রশ্নটা করলেন, এই প্রশ্নের সন্দেহাতীত জবাবের জন্য কিছু নমুনা বিদেশে পাঠানো হচ্ছে। একটি জিনিস খেয়াল করতে হবে, আসলে যে কোনো একটি ঘটনার পর আমরা কতগুলো দৃষ্টিবোধ, কতগুলো মতামত ও কতগুলো সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি। তারপর ভিন্ন কোনো কথা শুনলে ওটা আর আমরা মানতে চাই না।”

তিনি বলেন, “আজ যারা বিশেষজ্ঞ ছিলেন তারা আমাদের ক্লোজআপে দেখিয়েছেন কীভাবে আগুনের সূত্রপাত এবং সচিবালয় ভবনগুলোর নির্মাণের কারণে কীভাবে এটি একটি অবস্থান থেকে আরেকটি অবস্থানে ছড়িয়ে পড়ে। যে কুকুরটির কথা বলা হয়েছে সেটি এর আগে ওই ফ্লোরে গেছে। সে স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে একটি চেয়ারের ওপরে কুশনে গিয়ে ঘুমায়।”

অগ্নিকাণ্ডের কিছু নমুনা বিদেশে পাঠানো হয়েছে উল্লেখ করে রিজওয়ানা বলেন, “আমরা যেন সব রকমের সন্দেহের ঊর্ধ্বে থাকতে পারি। সত্যিই যদি এটি নাশকতা হতো, তাহলে ঘটনাটি কী রকম ঘটতে পারতো, উনারা সেটি দেখিয়েছেন। কোন জায়গা থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূচনা হয়েছে– স্পষ্ট করে, স্লো মোশনে তারা দেখিয়েছেন। আমার ধারণা এগুলো আপনাদের সবার কাছেই অ্যাভেইলেবল আছে।”

তিনি বলেন, “অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে সেটি নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। প্রথম কথা হচ্ছে, অগ্নিকাণ্ডটা আসলে খুবই ভীতিকর, আমাদের অনেক বড় দুশ্চিন্তার কারণ। এখানে কিন্তু আমরাই অফিস করি, তাই কোনো কিছু হলে প্রথম আঁচটা আমাদের গায়ের ওপরই পড়বে। যারা ওখানে অফিস করেন, তাদের জন্য এটি একটি সাংঘাতিক ট্রমাটাইজিং ব্যাপার।

“আমরা আমাদের নিরাপত্তার স্বার্থে শতভাগ নিশ্চিত হতে চাইব। আমরা কোনো বায়াসড হয়ে এ কমিটি করিনি। আমরা বুয়েটকে বলেছি আপনারা তিনজন বিশেষজ্ঞ দিন। বুয়েট নিরপেক্ষভাবে দিয়েছে। এরপর আরও আটজন বিশেষজ্ঞ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাই ভরসা না করার কোনও কারণ আছে বলে আমরা মনে করি না।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত