বাংলাদেশের ফুটবল মৌসুম কখনও কোন ফাইনাল ম্যাচ দিয়ে শুরু হয়নি। যে মাঠে ফাইনালটি হবে তার অঙ্গেও নিত্য-নতুন শোভা। জুলাই অভ্যুত্থানের গ্রাফিতি আঁকা হয়েছে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনার দেয়ালে। এখানেই শুক্রবার বসুন্ধরা কিংস ও মোহামেডানের চ্যালেঞ্জ কাপ ফাইনাল দিয়ে শুরু হবে নতুন ফুটবল মৌসুম।
খেলাধুলা জীবনেরই অংশ। এ দেশের মানুষের জীবনে ঐতিহাসিক ভাঙা-গড়ার অংশ হয়ে ঢুকে গেছে মুগ্ধ-সাঈদসহ অনেক মানুষের আত্মদানে অর্জিত এক নতুন বাংলাদেশের ছবি। এখানে আছে প্রতিবাদ, আছে প্রেরণা ও নতুন শুরুর উদ্দীপনা। ফুটবলও এই অমূল্য অর্জনকে কুর্নিশ জানিয়ে শুরু করছে ঘরোয়া ফুটবলের নতুন অধ্যায়। প্রতিবারের মতো ফেডারেশন কাপে তার উদ্বোধন হচ্ছে না। শুরু হচ্ছে দুই পরাশক্তির ফাইনাল দিয়ে আর এই লড়াইটাই অনাগাত মৌসুমে বার বার ফিরে আসতে পারে আরো ঝাঁঝালো রূপ নিয়ে।
তার একটা বড় কারণ টানা পাঁচবারের লিগ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস এই মুহূর্তে ঠিক ‘কিং’-এর চেহারায় নেই। রবসন রবিনহো-দোরিয়েলতন গিয়ে এসেছে নতুন বিদেশ। পুরনো কোচ অস্কার ব্রুজোনের জায়গা নিয়েছেন ভ্যালিরিও তিতা। নতুন রোমানিয়ান কোচের অধীনে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে তিনটি ম্যাচই হেরেছে কিংস। এরপরই ঘরোয়া ফুটবলে শক্তিশালী মোহামেডানের চ্যালেঞ্জ। এই ম্যাচে তাই নিজেকে প্রমাণ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন কিংস কোচ তিতা, “এই ম্যাচটি আমার জন্য খুব গরুত্বপূর্ণ। ছেলেরা ভুটানে ভাল করতে পারেনি একদম। আমার ক্যারিয়ারে এমন ঘটনা খুব নেই। ভুটানের পর এই ম্যাচের জন্য আমি তৈরি করেছি দলকে। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে ১৬টি গোলের সুযোগ তৈরি করে মাত্র একটি গোল করেছে আমাদের দল। আশা করবো, এই ম্যাচে ছেলেরা অনেক গোলের সুযোগ তৈরি করবে এবং গোলও করবে।”
ডাগআউটে লড়াইটা হবে এই রেমানিয়ান কোচের সঙ্গে দেশি আলফাজ আহমেদের। মোহামেডানের এই কোচ বসুন্ধরা কিংসকে হারিয়ে মৌসুম শুরু করতে প্রত্যয়ী, “পুরো মৌসুমের জন্য আমরা ভালভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। আমরা জয় দিয়ে মৌসুম শুরু করতে চাই।বসুন্ধরা কিংস সবসময় শক্তিশালী দল, কিন্তু তাদের হারানোর শক্তি আমাদের আছে।”
মোহামেডানের শক্তি আরেগ মতোই। আর এই দল হারিয়েছিল পূর্ণ শক্তির কিংসকে। সুতরাং এবার ইনজুরি ও সাসপেনশনে জেরবার পাচঁবারের চ্যাম্পিয়নকে পেয়ে খানিকটা উজ্জিবীত হতেই পারে। সব মিলিয়ে একটি জমজমাট চ্যালেঞ্জ কাপ ফাইনাল দিয়ে মৌসুম শুরুর আয়োজন সাড়া। তবে যারাই জিতুক, ২০ লাখ টাকা প্রাইজমানির সবটাই জমা হবে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনে। ফুটবলের চেয়েও বড় ওই অভ্যুত্থান এবং গ্রফিতিতে আঁকা ছবি ও কথাগুলো। সেগুলোই যেন নতুন পথের দিশা দেখাবে।