সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রয়াত হাফিজ আল-আসাদের সমাধি পুড়িয়ে দিয়েছে বিদ্রোহীরা।
এই বিদ্রোহীদের হাতেই গত রবিবার ক্ষমতাচ্যুত হাফিজের ছেলে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ।
বিবিসি জানিয়েছে, সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমে উপকূলীয় লাতাকিয়া প্রদেশের কারদাহা শহরে হাফিজের সমাধি। সেটিতে বুধবার একদল সশস্ত্র যোদ্ধা আগুন লাগিয়ে দেয়।
সিরিয়ার সশস্ত্র গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বে অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো দেশজুড়ে অভিযান চালিয়ে ১২ দিনের মধ্যে আসাদ পরিবারের ৫৪ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনের ইতি টানে।
এরপর সিরিয়াজুড়ে হাফিজ আর তার ছেলে বাশারের যত মূর্তি ছিল, সব ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয়, ছিঁড়ে ফেলা হয় তাদের সব পোস্টার।
২০১১ সালে গণতন্ত্রকামী সিরীয়দের অভ্যুত্থান তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বাশার কঠোর হাতে দমন করতে গেলে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ, যাতে প্রাণ হারায় ৫ লাখের বেশি মানুষ। এর বাইরে ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়।
বাশারের বাবা হাফিজ ১৯৭১ থেকে ২০০০ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সিরিয়া শাসন করেন। নানা কারণেই তিনি পেয়েছিলেন স্বৈরাচার তকমা।
হাফিজের মৃত্যুর পর ক্ষমতায় আসেন বাশার আল আসাদ। দেশের ক্ষমতা তিনি বাশারকে দিয়ে যান।
হাফিজ আলাউই সম্প্রদায়ের মানুষ। সিরিয়ার ধর্মীয় সংখ্যালঘু এই সম্প্রদায় মূলত শিয়াপন্থি। ভূমধ্যসাগরের কাছে লাতাকিয়া প্রদেশে প্রধানত এদের বাস। এই প্রদেশ ঘেঁষে রয়েছে তুরস্কের সীমান্ত।
আলাউইরা বর্তমানে সিরিয়ার জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ। আসাদ পরিবারের তারা কট্টর সমর্থক।
তাই গত রবিবার বিদ্রোহীদের হাতে প্রেসিডেন্ট বাশার ক্ষমতা থেকে উৎখাত হওয়ার পর আতঙ্কের মধ্যে আছেন আলাউই সম্প্রদায়ের মানুষ। ৫৪ বছর ধরে ক্ষমতাসীন আসাদ পরিবারের স্বৈরাচারী শাসনে সমর্থন জুগিয়ে যাওয়ার জন্য এবার তারা বিদ্রোহীদের রোষানলে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা।
রয়টার্স জানিয়েছে, গত সোমবার এইচটিএস ও আরেক সুন্নিপন্থি বিদ্রোহী গোষ্ঠী ফ্রি সিরিয়ান আর্মির প্রতিনিধিরা কারদাহা শহরের বয়স্কদের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের সমর্থন নিশ্চিত করেন।
তারা বৈঠকে এক নথিতেও সই করে, যাতে সিরিয়ার ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের ওপর জোর দেওয়া হয়।